কেপলার-৭

বীণা তারামণ্ডলের একটি তারা

কেপলার-৭ একটি নক্ষত্র, যা মহাকাশে বীণা মণ্ডলকেপলার মিশন এর নজরে আসে। যা পৃথিবী সাদৃশ গ্রহ খোঁজার উদ্দেশ্যে নাসা কর্তৃক পরিচালিত একটি অভিযান। এটি কেপলারের পাঁচটি আবিষ্কৃত গ্রহের মধ্যে চতুর্থতম হচ্ছে কেপলার-৭বি, গ্রহটি বৃহস্পতি গ্রহের সমান, গ্যাস এ পূর্ণ এবং খুব হালকা।[১] এই নক্ষত্রটি সূর্যের চেয়ে বড়, এটি প্রায় সূর্যের ব্যাসার্ধের চেয়ে দ্বিগুণ। কিছুটা ধাতব সমৃদ্ধ, গ্রহ প্রভাব এই আকৃতির প্রধান কারণ। আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির ৪ জানুয়ারি সভায় কেপলার-৭ এর পরিচয় তুলে ধরা হয়।

কেপলার-৭
পর্যবেক্ষণ তথ্য
ইপক J2000      বিষুব J2000
তারামণ্ডল বীণা মণ্ডল
বিষুবাংশ  ১৯ ১৪মি ১৯.৬সে
বিষুবলম্ব +৪১° ৫′ ২৩.৩″
আপাত  মান (V) ১৩.৩
বিবরণ
ভর১.৩৪৭ M
ব্যাসার্ধ১.৮৪৩ R
তাপমাত্রা৫৯৩৩ K
বয়স৩.৫ Gyr
অন্যান্য বিবরণ
কেপলার-৭ এর সাথে সূর্যের তুলনা

নামকরণ ও আবিষ্কার সম্পাদনা

কেপলার-৭ কেপলার মহাকাশযানের নামে নামকরণকৃত সপ্তম নক্ষত্র, যা নাসার একটি প্রকল্প যে পৃথিবী থেকে দেখা যায় এরূপ নক্ষত্রের পথের মধ্যে পৃথিবী সাদৃশ গ্রহ খোঁজার কাজে ব্যবহৃত হয়।[২] ৪টি গ্রহ সহ কেপলার-৭ নক্ষত্রটি কেপলার মহাকাশযান আবিষ্কার করে, এবং সঠিক পরিমাপ করতে সক্ষম হয়।[৩] কেপলার-৭বি ৪ জানুয়ারি, ২০১০ তারিখে ওয়াশিংটন ডিসিতে আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির ২১৫তম সভায় কেপলার-৪বি, কেপলার-৫বি, কেপলার-৬বি ও কেপলার-৮ সহ ঘোষণা করা হয়। কেপলার-৭বি সল্প ঘনত্তের হিসেবে চিহ্নিত করা হয় ।[১]

গ্রহটি প্রাথমিকভাবে কেপলার আবিষ্কার করে, এবং হাওয়াই, টেক্সাস, অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া এবং কানাডার পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করে।[৪]

বৈশিষ্ট্যসমূহ সম্পাদনা

কেপলার-৭ সূর্যের মত একটি নক্ষত্র যা ১.৩৪৭ Msun এবং ১.৮৪৩ Rsun. এর অর্থ নক্ষত্রটি সূর্য থেকে ৩৫% বেশি ভারী এবং ৮৪% বেশি প্রশস্ত। নক্ষত্রটির বয়স আনুমান করা হচ্ছে ৩.৫ (±১) বিলিয়ন বছর। আর অনুমান করা হচ্ছে এর ধাতব গুণ [Fe/H] = ০.১১ (± ০.০৩), এর অর্থ কেপলার-৭ সূর্য থেকে আনুমানিক ৩০% বেশি ধাতব সমৃদ্ধ; ধাতব গুণ গ্রহ মণ্ডলীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে, বেশি ধাতব সমৃদ্ধ হওয়ার জন্য গ্রহ সমুহ খুব নিকটবর্তী কক্ষপথে অবস্থান করে।[৫] নক্ষত্রটির সক্রিয় তাপমাত্রা ৫৯৩৩ (± ৪৪) K.[৬] তুলনামুলক, ৪.৬ বিলিয়ন বছরের সূর্যের তাপমাত্রা[৭] কম, সক্রিয় তাপমাত্রা ৫৭৭৮ K.[৮]

 
কেপলারের আবিষ্কৃত পাঁচটি গ্রহের আপেক্ষিক আকৃতি দেখানো একটি ছবি। কেপলার-৭বি পাঁচটির মধ্যে বৃহত্তম, হলুদ রংয়ে নির্দেশিত।

নক্ষত্রটির আপাত উজ্জ্বলতার মান ১৩.৩meঅর্থ হচ্ছে পৃথিবী থেকে অত্যন্ত অস্পষ্ট দৃশ্যমান হয়। এটি খালিচোখে দেখা যায়না।[৩] এটা সৌরমন্ডল থেকে ১০০০ এবং ১৪০০ আলোকবর্ষ মধ্যে থাকতে পারে অনুমান করা হচ্ছে।[৯]

গ্রহমণ্ডল সম্পাদনা

কেপলার-৭বি একমাত্র গ্রহ যেটি কেপলার-৭ এর কক্ষপথে আবিষ্কৃত হয়। এর পরিমাপ .৪৩৩ MJ এবং ১.৪৭৮RJ, অর্থ হচ্ছে এর ভর বৃহস্পতি গ্রহ তুলনায় ৪৩%, কিন্তু এর আকৃতি তিন গুন বড়। এর ঘনত্ব হচ্ছে ০.১৬৬ grams/cc,[৩] নক্ষত্রটির ঘনত্ব ১৭% পানির ঘনত্বের তুলনায়।[১] নক্ষত্র থেকে এর দূরত্ব ০.০৬২২৪ AU, কেপলার-৭বি ৪.৮৮৫৫ দিনে কেপলার-৭ এর কক্ষপথে প্রতিবার আবর্তন করে।[৩] বুধ গ্রহ সূর্য থেকে .৩৮৭১ AU দুরত্তে অবস্থিত, এবং ৮৭.৯৭ দিনে একবার কক্ষপথ পরিক্রম করে।[১০] কেপলার-৭ এর উৎকেন্দ্রিকতা ০ ধরা হয় , যা কেপলার-৭বি কে একটি বৃত্তাকার কক্ষপথে সংজ্ঞাইত করে।[৩]

কেপলার-৭ গ্রহমণ্ডল[৩]
সহচর
(তারকার অনুক্রম)
ভর পরাক্ষ
(AU)
কক্ষীয় পর্যায়কাল
(দিনসমূহ)
উৎকেন্দ্রিকতা কক্ষীয় নতি ব্যাসার্ধ
কেপলার-৭বি ০.৪৩৩ MJ ০.০৬২২৪ ৪.৮৮৫৫ 0 ১.৪৭৮ RJ

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Rich Talcott (৫ জানুয়ারি ২০১০)। "215th AAS meeting update: Kepler discoveries the talk of the town"Astronomy.comAstronomy magazine। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  2. "Kepler: About the Mission"Kepler Mission। NASA। ২০১১। ৮ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  3. "Summary Table of Kepler Discoveries"। NASA। ২০১০-০১-০৪। ২০১৭-০৪-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-০৬ 
  4. "NASA's Kepler Space Telescope Discovers its FIrst Five Exoplanets"NASA। ৪ জানুয়ারি ২০১০। ৪ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  5. Henry Bortman (১২ অক্টোবর ২০০৪)। "Extrasolar Planets: A Matter of Metallicity"। Space Daily। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  6. "Notes for star Kepler-7"Extrasolar Planets Encyclopaedia। ২০১০। ২১ জানুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  7. Fraser Cain (১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৮)। "How Old is the Sun?"। Universe Today। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  8. David Williams (১ সেপ্টেম্বর ২০০৪)। "Sun Fact Sheet"Goddard Space Flight CenterNASA। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  9. Boyle, Alan। "How astronomers mapped the patchy clouds of an alien world"। NBC News। সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০১৩ 
  10. David Williams (১৭ নভেম্বর ২০১০)। "Mercury Fact Sheet"Goddard Space Flight CenterNASA। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১