নাসা
ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইংরেজি: National Aeronautics and Space Administration (NASA)) হল মার্কিন ফেডারেল সরকারের একটি স্বাধীন সংস্থা; যা বিমানচালনাবিদ্যা ও মহাকাশ সম্পর্কিত গবেষণা করে থাকে।
![]() নাসা এর লোগো | |
সংস্থার সংক্ষিপ্ত বিবরণ | |
---|---|
সংক্ষেপ | নাসা |
গঠিত | ২৯ জুলাই ১৯৫৮ |
পূর্ববর্তী সংস্থা |
|
প্রকার | Space agency |
অধিক্ষেত্র | মার্কিন ফেডারেল সরকার |
সদর দপ্তর | ওয়াশিংটন, ডি.সি. ৩৮°৫২′৫৯″ উত্তর ৭৭°০′৫৯″ পশ্চিম / ৩৮.৮৮৩০৬° উত্তর ৭৭.০১৬৩৯° পশ্চিম |
নীতিবাক্য | সকলের কল্যাণের জন্য[২] |
প্রাথমিক মহাকাশ বন্দরs | |
মালিক | ![]() |
কর্মচারী | ১৭,৯০০[৩] |
বার্ষিক বাজেট | ![]() |
ওয়েবসাইট | NASA.gov |
১৯৫৮ সালে ন্যাশনাল অ্যাডভাইসরি কমিটি ফর অ্যারোনটিক্স (নাকা) এর পরিবর্তে একটি নতুন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা গঠন করা হয়। যার নাম রাখা হয় নাসা। নবগঠিত সংস্থাটির জন্য একটি ভিন্ন ধরনের তত্ত্বাবধায়ন আশা করা হচ্ছিল, যা মহাকাশ বিজ্ঞান সম্পর্কিত গবেষণা ও প্রয়োগে উৎসাহিত করার মাধ্যমে মহাকাশ গবেষণার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ মহাকাশ অনুসন্ধানের নেতৃত্বে নাসা ভূমিকা পালন করে, যার মধ্যে অ্যাপোলো মুন ল্যান্ডিং মিশন, স্কাইল্যাব স্পেস স্টেশন এবং স্পেস শাটল মিশন ছিল। নাসা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের উন্নয়নে সহযোগিতা করছে এবং ওরিয়ন স্পেসক্রাফট, স্পেস লঞ্চ সিস্টেমের বিকাশে তদারকি করছে। এজেন্সি লঞ্চ সার্ভিস প্রোগ্রামের জন্যও নাসা কাজ করে যাচ্ছে। নাসা আর্থ অবসার্ভিং সিস্টেমের মাধ্যমে পৃথিবীকে আরও ভালোভাবে বুঝার দিকে মনোনিবেশ করেছে। নাসার গবেষণা ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে, সাইন্স মিশন ডিরেক্টরেটের হেলিওফিজিক্স গবেষণা কার্যক্রমের প্রচেষ্টার মাধ্যমে হেলিওফিজিক্সের অগ্রগতি করা;নিউ হরাইজনসের মতো উন্নত রোবোটিক মহাকাশযানের মাধ্যমে সৌরজগৎ জুড়ে প্রাণীদেহ অনুসন্ধান করা;বিগ-ব্যাংয়ের মতো জ্যোতির্বিজ্ঞানের বিষয়গুলি নিয়ে গবেষণা।
ইতিহাসসম্পাদনা
সৃষ্টিসম্পাদনা
১৯৪৬ সালে, ন্যাশনাল এডভাইসরি কমিটি ফর আরোনটিক্স রকেট বিমান নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিল। বিশেষ করে সুপারসনিক বেল এক্স-১ নিয়ে তারা তাদের গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছিল।[৫] ১৯৫০ এর দশকের প্রথম দিকে, জিওগ্রাফিকাল বর্ষে (১৯৫৭-১৯৫৮), এই কমিটির ওপর একটি কৃত্রিম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের গুরুদায়িত্ব এসে পড়ে। এই প্রজেক্টটির নাম দেয়া হয় ভ্যানগার্ড। ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর, সোভিয়েত স্পেস প্রোগ্রামের প্রথম কৃত্রিম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপিত হওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত একটি কৃত্রিম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ইউ এস কংগ্রেসে,এ ব্যাপারে দ্রুতগামী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। রাষ্ট্রপতি ডিওয়াট ডি. আইজেনহাওয়ার এবং তার উপদেষ্টারা এ বিষয়ে আলোচনা করেন। ১৯৫৮ সালের ১৪ জানুয়ারী, কমিটির প্রধান হিউজ ড্রাইডেন "এ ন্যাশনাল রিসার্চ পোগ্রাম ফর স্পেস টেকনলজি" নামে একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করেন এবং বলেনঃ[৬]
জাতিগত সম্মান ও সামরিক প্রয়োজনীয়তা বিবেচনার দিক থেকে আমাদের দেশের জন্য এটি একটি মহা জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে এই চ্যালেঞ্জটি (স্পুটনিক ১) একটি শক্তিশালী গবেষণা কার্যক্রম এবং মহাকাশ বিজয়ের ক্ষেত্রে উন্নয়ন সাধনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে...এটা প্রস্তাবিত যে বৈজ্ঞানিক গবেষণাগুলো জাতীয় সিভিলিয়ান সংস্থার অধীনস্থ হওয়া উচিত। নাকা সক্ষম... মহাকাশ প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব দানের ক্ষেত্রে দ্রুত, বর্ধিত এবং বিস্তৃত প্রচেষ্টার মাধ্যমে।
নেতৃত্বসম্পাদনা
সংস্থাটির নেতা অর্থাৎ নাসার প্রশাসক, মার্কিন সিনেট অনুমোদনের সাপেক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি সিনিয়র স্পেস সাইন্স অ্যাডভাইসরের দায়িত্ব পালন করেন। যদিও মহাকাশ অনুসন্ধান কার্যক্রম নির্দলীয় নয়, তবে নিয়োগকারী সাধারণত রাষ্ট্রপতির রাজনৈতিক দলের (ডেমোক্রেট বা রিপাবলিকান) সাথে যুক্ত হন এবং রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রদূতগণের মধ্যে পরিবর্তন আনলে সাধারণত একজন নতুন প্রশাসককে নিয়োগ দেয়া হয়। ড্যানিয়েল গোল্ডিনকে রিপাবলিকান পার্টির জর্জ এইচ. ডাব্লিউ. বুশ নিয়োগদান করেছিলেন এবং তিনি ডেমোক্রেট পার্টির বিল ক্লিনটনের ক্ষমতাকালেও নিজ পদে বহাল ছিলেন। ডেমোক্রেট বারাক ওবামার অধীনে সহযোগী প্রশাসক রবার্ট এম লাইটফুট জুনিয়রকে রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক হিসাবে রাখা হয়েছিল যতক্ষণ না ট্রাম্প নিজ পছন্দমতো জিম ব্রিডেনস্টাইনকে এপ্রিল ২০১৮ সালে নিয়োগদান করেন। বিল নেলসন বর্তমানে জো বাইডেনের অধীনে নাসার প্রশাসক হিসেবে নিয়োজিত আছেন।
সম্পর্কিত আইনসমূহসম্পাদনা
- ১৯১০ – ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পিএল ৮৫-৫৬৮ ( ২৯ জুলাই পাশকৃত)
- ১৯৬১ – অ্যাপোলো অভিযান পিএল ৮৭-৯৮ এ
- ১৯৭০ – ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিসার্চ এন্ড ডেভলাপমেন্ট পিএল ৯১-১১৯
- ১৯৮৪ – ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অথোরাইজেশন অ্যাক্ট পিএল ৯৮-৩৬১
- ১৯৮৮ – ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অথোরাইজেশন অ্যাক্ট পি এল ১০০-৬৮৫
বাজেটসম্পাদনা
১৯৬৬ সালে অ্যাপোলো প্রোগ্রাম চলাকালীন মোট ফেডারেল বাজেট থেকে নাসার প্রাপ্য অংশের হার প্রায় ৪.৪১% পর্যন্ত পৌঁছেছিল, ১৯৭৫ সালে যা দ্রুত হ্রাস পেয়ে প্রায় ১% এ দাঁড়ায় এবং ১৯৯৯ সাল জুড়ে এ হারের কাছাকাছি ছিল । এরপরে এ হার ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে এবং ২০০৬ সালে প্রায় ০.৫ শতাংশে (২০০২ সালে যা ফেডারেল বাজেটের ০.৪৮% অনুমান করা হয়েছিল) পৌঁছানো পর্যন্ত।
রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালের মার্চ মাসে নাসার ট্রানজিশন অথোরাইজেশন অ্যাক্টে স্বাক্ষর করেন, যাতে নাসার বাজেট প্রায় ১৯.৫ বিলিয়ন ডলার নির্ধারিত হয়। নাসার ২০১৭ সালের জন্য ১৯.৩ বিলিয়ন ডলার বাজেট নির্ধারিত হওয়ার ব্যাপারেও প্রতিবেদন করা হয়েছিল।
প্রস্তাবিত কিছু এফওয়াই২০১৮ বাজেটের উদাহরণ:
- অভিযান: $৪.৭৯ বিলিয়ন
- গ্রহ বিজ্ঞান: $২.২৩ বিলিয়ন
- পৃথিবী বিজ্ঞান: $১.৯২ বিলিয়ন
- বিমানচালনাবিদ্যা: ০.৬৮৫ বিলিয়ন
বিবিধসম্পাদনা
কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবসম্পাদনা
নাসা পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি না হওয়া পর্যন্ত তার সমস্ত ফিল্ড সেন্টার ভিজিটর কমপ্লেক্স অস্থায়ীভাবে বন্ধ করার ঘোষণা করে দেয়, পাশাপাশি সম্ভবপর সকল নন-ক্রিটিকাল (দুর্যোগ মোকাবেলায় সরাসরি সম্পৃক্ত নয় এমন) কর্মীদেরকে বাড়ি থেকে কাজ করার পরামর্শ দেয়। মিচাউড অ্যাসেমব্লিলি ফ্যাসিলিটিতে স্পেস লঞ্চ সিস্টেম এর নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, এবং জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ এর নির্মাণ কাজ সম্পন্নকরণেও আরও বিলম্ব আশা করা হচ্ছিল, যদিও ২০ শে জুন ২০২০ এর কাজ আবার শুরু হয়েছে।
জনসন স্পেস সেন্টারের বেশিরভাগ কর্মীদেরকে টেলিওয়ার্কিং করার এবং আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন মিশনের ক্রিটিকাল (দুর্যোগ মোকাবেলায় সরাসরি সম্পৃক্ত) কর্মীদেরকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মিশন কন্ট্রোল রুমে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। স্টেশন অপারেশনগুলি তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে নতুন অভিযাত্রী নভোচারীদের ফ্লাইটের আগে দীর্ঘতর ও কঠোর কোয়ারেন্টাইন পালন করতে হয়েছিল।
চিত্রশালাসম্পাদনা
পর্যবেক্ষণসমূহসম্পাদনা
অতীত ও বর্তমান স্পেসক্রাফটসম্পাদনা
জেমিনি, মারকিউরি এবং এপোলোর হার্ডওয়্যার তুলনা[note ১]
হাবলার স্পেস টেলিস্কোপ, পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ করছে।
পারসেভারেন্স রোভার
পরিকল্পিত স্পেসক্রাফটসম্পাদনা
স্পেস লঞ্চ সিস্টেম রকেট
লুনার গেটওয়ে স্পেস ষ্টেশন
পরিকল্পনাসম্পাদনা
নাসা অনেক প্রযুক্তিগত কল্পনাকে সম্প্রসারিত করে বাস্তব পরিকল্পনায় রূপান্তর করেছে।
আরও দেখুনসম্পাদনা
পাদটীকাসম্পাদনা
- ↑ From left to right: Launch vehicle of Apollo (Saturn 5), Gemini (Titan 2) and Mercury (Atlas). Left, top-down: Spacecraft of Apollo, Gemini and Mercury. The Saturn IB and Mercury-Redstone launch vehicles are left out.
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ US Centennial of Flight Commission, NACA ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৪ তারিখে. centennialofflight.net. Retrieved on November 3, 2011.
- ↑ Lale Tayla; Figen Bingul (২০০৭)। "NASA stands 'for the benefit of all.'—Interview with NASA's Dr. Süleyman Gokoglu"। The Light Millennium। অক্টোবর ১২, ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮। অজানা প্যারামিটার
|name-list-style=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ "www.employeeorientation.nasa.gov"। ১৯ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০১০।
- ↑ Casey Dreier (ডিসেম্বর ৩০, ২০১৯)। "NASA's FY 2020 Budget"। The Planetary Society। ডিসেম্বর ৩১, ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ৩১, ২০১৯।
- ↑ "The NACA, NASA, and the Supersonic-Hypersonic Frontier" (পিডিএফ)। NASA। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১১।
- ↑ Erickson, Mark। Into the Unknown Together—The DOD, NASA, and Early Spaceflight (পিডিএফ)। আইএসবিএন 1-58566-140-6। সেপ্টেম্বর ২০, ২০০৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
সাধারণসম্পাদনা
- নাসার প্রধান পাতা
- স্প্ল্যাশ পৃষ্ঠা বাদ দিয়ে সরাসরি নাসার প্রধান পাতায় যাবার লিংক ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ জানুয়ারি ২০০৭ তারিখে
- নাসা টেলিভিশন
- নাসাক্যাস্ট, NASA's Podcasting
- নাসার ছবিসমূহ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ নভেম্বর ২০১০ তারিখে
- নাসা ওয়াচ
- নাসার মহাকাশ অভিযান
অন্যান্য গবেষণাসম্পাদনা
- নাসার ইতিহাস সংবলিত প্রকাশনা[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- নাসার ঐতিহাসিক উপাত্ত সংবলিত গ্রন্থ (এসপি-৪০১২)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- নাসা সম্পর্কে কংগ্রেশনাল রির্স্চ সার্ভিসের (সিআরএস) প্রতিবেদন[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- নাসার ইতিহাস: নামসার ঐতিহাসিকতার গাইড (পিডিএফ – ১,০১২ কিলোবাইটের বেশি)
- এনটিআরএস: নাসা টেকনিক্যাল রিপোর্টস সার্ভার
- বিভিন্ন ঘটনা ও সুযোগ
- ছোটদের জন্য নাসা