কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ
কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কুষ্টিয়া শহরের অভ্যন্তরে অবস্থিত কলেজটি বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত।[১][২]
কলেজের প্রধান ফটক | |
ধরন | সরকারি কলেজ |
---|---|
স্থাপিত | ১৯৪৭ |
ইআইআইএন | ১১৭৮০৮ |
অধ্যক্ষ | মো: রুহুল আমীন বেলাল |
শিক্ষার্থী | ২৮,০০০ জন (প্রায়) |
অবস্থান | , ৭০০০ , |
শিক্ষাঙ্গন |
|
ভাষা | বাংলা |
অধিভুক্তি | জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় |
ক্রীড়া | ক্রিকেট, ফুটবল, টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন |
ওয়েবসাইট | kushtiagovcollege |
![]() | |
![]() |
ইতিহাস
সম্পাদনাকুষ্টিয়া সরকারি কলেজ বাংলাদেশের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ কলেজগুলির মধ্যে একটি। এটি ০১ জানুয়ারি, ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এটি খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া শহরে অবস্থিত। কলেজটি বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে অধিভুক্ত এবং বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্স চালু আছে।[৩]
কলেজটির একটি দীর্ঘ এবং বর্ণাঢ্য ইতিহাস রয়েছে। এটি রাজনীতিবিদ, বিজ্ঞানী, শিল্পী এবং লেখক সহ অনেক উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন ছাত্র তৈরি করেছে। বাংলাদেশের শিক্ষার উন্নয়নেও কলেজটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।[৩]
প্রারম্ভিক বছর
সম্পাদনাকলেজটি ১৯৪৮ সালে স্থানীয় সমাজসেবী এবং শিক্ষাবিদদের একটি গ্রুপ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন জনাব এম এম হোসেন। কলেজটি প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র কয়েকটি স্নাতক কোর্স চালু করেছিল, কিন্তু এটি ধীরে ধীরে বছরের পর বছর ধরে আরও কোর্স যুক্ত করে। ১৯৬০-এর দশকে, কলেজটি দ্রুত বৃদ্ধির সময়কাল অতিক্রম করে। কলেজে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায় এবং নতুন বিভাগ যুক্ত করা হয়। ১৯৬৫ সালে, কলেজটি সরকার কর্তৃক প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা পায়।[৩]
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়কাল
সম্পাদনা১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর কলেজটির বিকাশ ও বিকাশ অব্যাহত থাকে। এই সময় আরো কিছু নতুন বিভাগ যোগ করা হয়েছিল এবং কলেজের অবঠামো উন্নত করা হয়েছিল। স্বাধীনতা-উত্তরকালে বাংলাদেশে শিক্ষার উন্নয়নেও কলেজটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।[৩]
বর্তমান সময়ে
সম্পাদনাআজ, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কলেজগুলির মধ্যে একটি। কলেজটিতে একটি বৃহৎ ও সুসজ্জিত লাইব্রেরি, একটি আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব এবং অন্যান্য অনেক সুবিধা রয়েছে।[৩]
কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ বাংলাদেশের একটি প্রধান শিক্ষাকেন্দ্র। এটি অনেক উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন ছাত্র তৈরি করেছে এবং এটি দেশের শিক্ষার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।
সাম্প্রতিক অর্জন
সম্পাদনাসাম্প্রতিক বছরগুলোতে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। ২০১৮ সালে, কলেজটি বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বাংলাদেশের শীর্ষ ১০০টি কলেজের মধ্যে একটি হিসাবে স্থান পেয়েছে। ২০২০ সালে, কলেজটি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কর্তৃক “সেরা কলেজ পুরস্কার” প্রদান করে।[৩]
কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ একটি সমৃদ্ধশালী প্রতিষ্ঠান যা তার শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কলেজটি ২১ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সুসজ্জিত, এবং এটি বাংলাদেশের শিক্ষার উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত।
অবকাঠামো
সম্পাদনাক্যাম্পসটি ২০ একর জায়গায় অবস্থিত। বর্তমানে এই কলেজে ২৭০০০ এর বেশি শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। কলেজে ১টি ছাত্রাবাস ও ২টি ছাত্রীনিবাস রয়েছে।
বিভাগসমূহ
সম্পাদনাউচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে যশোর বোর্ডের অধীনে ০৩টি বিভাগ রয়েছে।[৪] বর্তমানে কলেজটিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯ টি বিষয় অনার্স ও ২০টি মাস্টার্স চালু রয়েছে।[৫][৬] এগুলো হলো:
- উচ্চমাধ্যমিক
- বিজ্ঞান
- মানবিক
- ব্যবসায় শিক্ষা
- বি.এ.
- বাংলা বিভাগ
- ইংরেজি বিভাগ
- দর্শন বিভাগ
- ইতিহাস বিভাগ
- ইসলাম শিক্ষা বিভাগ
- ইসলামের ইতিহাস সংস্কৃতি বিভাগ
- বি.এস.এস.
- ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ
- অর্থনীতি বিভাগ
- সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
- সমাজকর্ম বিভাগ
- রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
- বি.এসসি.
- গণিত বিভাগ
- রসায়ন বিভাগ
- পদার্থ বিভাগ
- প্রাণিবিদ্যা বিভাগ
- উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ
- পরিসংখ্যান
- বি.বি.এ.
- ফিন্যান্স ও ব্যাকিং
- হিসাববিজ্ঞান বিভাগ
- মার্কেটিং বিভাগ
- ব্যবস্থাপনা বিভাগ
- ডিগ্রী
- বিজ্ঞান
- মানবিক
- সামাজিক বিজ্ঞান
- ব্যবসায় শিক্ষা
চিত্রশালা
সম্পাদনা-
কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ
-
নবনির্মিত ১০ তলা ভবন
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী
সম্পাদনা- আবদুর রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য
- আবুল বারকাত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান
- আমিনুল হক বাদশা' স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, সাংবাদিক ও গ্রন্থকার
- এ টি এম আব্দুল ওয়াহাব, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসর প্রাপ্ত মেজর জেনারেল ও রাজনীতিবিদ
- কামরুল ইসলাম সিদ্দিক, বাংলাদেশি প্রকৌশলী
- খন্দকার মাহমুদুল হাসান, বাংলাদেশী শিশুসাহিত্যিক, গবেষক ও বহুমাত্রিক লেখক
- গোলাম সাকলায়েন, বাংলাদেশী লেখক
- নূর আলম জিকু, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য
- ফরিদা পারভীন, বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য কণ্ঠশিল্পী
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "At a Glance – Kushtia Government College"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-০৬।
- ↑ "কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ - কুষ্টিয়া জেলা"। kushtia.gov.bd। ২০২০-০১-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-৩০।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "Brief History – Kushtia Government College"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-০৬।
- ↑ "Kushtia Government College"। kushtiagovernmentcollege.jessoreboard.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-০৬।
- ↑ "Department – Kushtia Government College"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-০৬।
- ↑ "National University :: College Details"। www.nubd.info। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-০৬।