বৃক্ক
বৃক্ক বা কিডনি হলো মেরুদণ্ডী প্রাণিদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি দেহের রেচন তন্ত্রের প্রধান অংশ। এর প্রধান কাজ রক্ত ছেঁকে বর্জ্য পদার্থ (যেমন ইউরিয়া) পৃথকীকরণ ও মূত্র উৎপাদন। মানব দেহের সমুদয় রক্ত দিনে প্রায় ৪০ বার বৃক্কের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়াও দেহে পানি ও তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থ বা ইলেকট্রোলাইট যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদির ভারসাম্য বজায় রাখে। এছাড়া এটি অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি হিসাবে হরমোন নিঃসরণ করে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
বৃক্ক | |
---|---|
বিস্তারিত | |
ধমনী | বৃক্কের ধমনী |
শিরা | বৃক্কের শিরা |
স্নায়ু | বৃক্কের স্নায়ু |
শনাক্তকারী | |
লাতিন | ren |
মে-এসএইচ | D007668 |
টিএ৯৮ | A08.1.01.001 |
টিএ২ | 3358 |
এফএমএ | FMA:7203 |
শারীরস্থান পরিভাষা |
মানব দেহের অভ্যন্তরভাগে উদর গহ্বরের পশ্চাৎভাগে মেরুদণ্ডের দুই পাশে দুটি বৃক্ক অবস্থিত। বৃক্কের দৈর্ঘ্য ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি। আকারে অনেকটা শিমের মতো। রং খানিকটা লালচে বাদামী। প্রতিটি বৃক্ক স্বচ্ছ ও পাতলা পেরিটোনিয়াম ঝিল্লি দ্বারা আবৃত থাকে। এর ভেতর দিয়ে ইউরেটার ও রেনাল শিরা বের হয় এবং রেনাল ধমনী ও স্নায়ূ বৃক্কে প্রবেশ করে। যকৃতের অবস্থানের কারণে ডান বৃক্ক বাম বৃক্ক অপেক্ষা সামান্য নিচে থাকে।[১][২]
অবস্থান
সম্পাদনাবৃক্ক উদরীয় গহ্বরে পেরিটোনিয়ামের পিছনে অবস্থান করে। ডান বৃক্ক মধ্যচ্ছদার নিচেই যকৃৎ এর পিছনে এবং বাম বৃক্ক মধ্যচ্ছদার নিচে প্লীহার পিছনে থাকে।বৃক্কের উপরিভাগ ১১ তম এবং ১২ তম পর্শুকা(RIB)দ্বারা আংশিক আবৃত থাকে।এখানে অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি রয়েছে।সমস্ত বৃক্ক পেরিরেনাল ও প্যারারেনাল ফ্যাট এবং রেনাল পর্দা (Renal Fascia) দ্বারা আবৃত। পুরুষের বৃক্কের ওজন ১৫০ - ১৭০ গ্রাম এবং স্ত্রীর ১৩০ - ১৫০ গ্রাম।সচরাচর বাম বৃক্ক ডান বৃক্ক থেকে সামান্য বড় হয়ে থাকে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
গঠন
সম্পাদনাবৃক্কের উত্তল এবং অবতল পৃষ্ঠ রয়েছে।অবতল পৃষ্ঠের গভীরতম অংশকে বৃক্কীয় হাইলাম বলে।এর মধ্য দিয়ে বৃক্কের ধমনী প্রবেশ করে এবং বৃক্কের শিরা ও মূত্রনালি বের হয়।
বৃক্কের গাঠনিক এবং কার্যকরী একককে নেফ্রন বলে। বৃক্কের প্যারেনকাইমা দুই ভাগে ভাগ হয়।বৃক্কীয় কর্টেক্স এবং বৃক্কীয় মেডুলা।এরা ৮ - ১৮ টি বৃক্কীয় লোবিউল এ বিভক্ত হয়।এদেরকে বৃক্কীয় পিরামিড বলে যেখানে বৃক্কীয় কর্টেক্সের চারপাশে মেডুলার কিছু অংশ বেষ্টন করে রাখে।দুটো বৃক্কীয় পিরামিডের মধ্যবর্তী অংশে বৃক্কীয় কর্টেক্সের কিছু অংশকে বৃক্কীয় কলাম বলে।
কর্টেক্সে অবস্থিত নেফ্রনের যে অংশ ছাঁকনে নিয়োজিত থাকে,তাকে বৃক্কীয় করপাসল বলে,যার পরেই থাকে বৃক্কীয় নালিকা (Renal Tubule)যা কর্টেক্স থেকে মেডুলার গভীরে প্রবেশ করে। বৃক্কীয় কর্টেক্সের কিছু অংশ, বৃক্কীয় টিউবিউলের সমষ্টিকে মেডুলারি রে (Medullary Ray) যা পরবর্তীতে একক সংগ্রাহী ডাক্ট(Collecting Duct) এ পতিত হয়।প্রতিটি পিরামিডের চূড়া বা প্যাপিলা ছোট ক্যালিক্সে(Minor Calyx),কতগুলো ছোট ক্যালিক্স বড় ক্যালিক্সে(Major Calyx)এবং বড় ক্যালিক্স সম্মিলিতভাবে বৃক্কীয় পেলভিসেউদগত হয় যেখান থেকে মূত্রনালি বের হয়।
হাইলামের ভিতর দিয়ে মূত্রনালি এবং বৃক্কীয় শিরা বের হয় এবং বৃক্কীয় ধমনী ও স্নায়ু বৃক্কে প্রবেশ করে।এদের চারপাশে হাইলার ফ্যাট(Hilar Fat) লসিকা গ্রন্থি থাকে।হাইলার ফ্যাট, বৃক্কীয় সাইনাস নামক আরেকটি ফ্যাটি গহ্বরের সাথে সংযুক্ত থাকে।সামগ্রিকভাবে এরা বৃক্কীয় পেলভিস এবং ক্যালিক্স ধারণ করে এবং এদের বৃক্কীয় মেডুলারি টিস্যু থেকে পৃথক করে। [৩]
কাজ
সম্পাদনাআবশ্যকীয় উপাদানের পুনর্শোষণ
সম্পাদনাপরাবর্ত নালিকায় গ্লুকোজ সম্পূর্ণ পুনর্শোষিত হয়।এটি Na+/গ্লুকোজ কোট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে হয়। প্লাজমায় ৩৬০ mg/dL এর মত গ্লুকোজ থাকলে বাহক সম্পৃক্ত হবে এবং মূত্রে গ্লুকোজের উপস্থিতি পাওয়া যাবে।গ্লাইকোজ-ইউরিয়া হবার জন্য প্লাজমায় ১৬০ mg/dL গ্লুকোজ থাকাই যথেষ্ট,যা বহুমূত্র রোগের নির্ণায়ক।
পরাবর্ত নালিকায় অ্যামিনো অ্যাসিড পুনর্শোষিত হয়।[৪]
পুনর্শোষণ সংঘটিত হবার স্থান | পুনর্শোষিত উপাদান | টীকা |
---|---|---|
পরাবর্ত নালিকার প্রথম অংশ | গ্লুকোজ (১০০%), অ্যামিনো এসিড (১০০%), বাইকার্বোনেট (৯০%), Na+ (৬৫%), Cl−,ফসফেট ও H2O (৬৫%) |
|
সরু হেনলির লুপ | H2O |
|
পুরু হেনলির লুপ | Na+ (১০–২০%), K+, Cl−; পরোক্ষভাবে Mg2+, Ca2+ |
|
দূরসংবর্ত নালিকার প্রথম অংশ | Na+, Cl− |
|
সংগ্রাহী নালিকা | Na+(৩–৫%), H2O |
|
গর্ভাবস্থা গ্লুকোজ ও অ্যামিনো এসিডের পুনর্শোষণ কমায়। হরমোন উৎপাদন করে যা লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। ভিটামিন ডি তৈরি করে।
তাছাড়া এটি রক্তের pH নিয়ন্ত্রণ বা অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে ৷
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- Grey's Anatomy for student book. আইএসবিএন ০-৮০৮৯-২৩০৬-৪
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Picture of the Kidneys
- ↑ How your Kidney works
- ↑ Clapp, WL. "Renal Anatomy". In: Zhou XJ, Laszik Z, Nadasdy T, D'Agati VD, Silva FG, eds. Silva's Diagnostic Renal Pathology. New York: Cambridge University Press; 2009.
- ↑ ক খ Le, Tao. First Aid for the USMLE Step 1 2013. New York: McGraw-Hill Medical, 2013. Print.
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- The NephCure Foundation offers educational materials on the kidney diseases/conditions Nephrotic Syndrome and FSGS
- The Kidney Foundation of Canada
- electron microscopic images of the kidney (Dr. Jastrow's EM-Atlas) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে
- European Renal Genome project kidney function tutorial
- Kidney Foundation of Canada kidney disease information
- Kidney Stones ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে
- Kidney Diseases ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে
- Kidney Information
- Animated Presentatin on Kidney Function
- CAT Scans of various kidney diseases and conditions - CT Cases
- Kidney Stones; Information and Treatments
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |