কার্বন চক্র

পরিবেশে কার্বন বিনিময়কারী শারীরবৃত্তীয় চক্র

জড় পরিবেশ এবং জীবদেহের মধ্যে কার্বন-এর চক্রাকারে আবর্তন প্রক্রিয়াকে কার্বন চক্র (ইংরেজি: Carbon Cycle) বলে।

কার্বন চক্রের প্রথম ডায়াগ্রামটি দেখাচ্ছে কীভাবে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টন কার্বন স্থলভূমি, বায়ূমন্ডলে এবং সাগরের মধ্যে সঞ্চালিত হয়। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টন কার্বনের মধ্যে হলুদ নম্বরগুলো প্রাকৃতিক ফ্লাক্স, লালগুলো মানুষের অবদান। সাদা নম্বরগুলো সঞ্চিত কার্বন নির্দেশ করছে।

কার্বনের উপস্থিতি

সম্পাদনা

জীবনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় প্রোটিন, লিপিড, কার্বোহাইড্রেট, নিউক্লিক অ্যাসিড ইত্যাদি অণুর গঠন উপাদান হল কার্বন। কাজেই কার্বন জীবদেহ ও জীবনের জন্য অত্যাবশ্যক। কার্বন বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস হিসেবে অবস্থান করে। বায়ুমণ্ডলে এর পরিমাণ ০.০৩ ভাগ। কার্বন ডাই অক্সাইড জলে দ্রবীভূত অবস্থায় কার্বনেট ও বাইকার্বনেট হিসেবেও থাকে। এছাড়া বিভিন্ন খনিজের কার্বনেট যৌগেও পাওয়া যায় (যেমন: লাইম স্টোন)।

কার্বন চক্র

সম্পাদনা

কার্বন জীব ও জড় পরিবেশের মধ্যে প্রতিনিয়ত আবর্তিত হয়। বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইড সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ কর্তৃক রাসায়নিক পদার্থে (যেমন গ্ল‌ুকোজ) পরিণত হয়। উদ্ভিদদেহের অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থে তৈরিতে গ্লুকোজ ব্যবহৃত হয়। কাজেই উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় জড় পরিবেশ থেকে CO2 গ্যাসকে জৈব যৌগে পরিণত করে। উদ্ভিদদেহের গ্ল‌ুকোজ কোষীয় শ্বসন ক্রিয়ার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উদ্ভিদজাত পদার্থ বা উদ্ভিদাংশ খেয়ে যে সব প্রাণী বেঁচে থাকে তারাও গ্ল‌ুকোজকে তাদের শ্বসনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে। আবার যে সব অণুজীব উদ্ভিদ বা প্রাণীর মৃতদেহের পচনকার্য ঘটিয়ে থাকে তারাও গ্লুকোজ ও অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্যকে শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহার করে। ফলে সবাত শ্বসন প্রক্রিয়ায় কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন হয়ে পুনরায় বায়ুমণ্ডলে চলে যায়। একই ধরনের কার্বন চক্র জলজ জীব এবং জলে দ্রবীভূত কার্বন ডাই অক্সাইডের মধ্যেও চলতে থাকে। কার্বন চক্রের প্রতিটি পরিবর্তনই রাসায়নিক পরিবর্তন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা