কল্পনা লাজমি

ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালিকা

কল্পনা লাজমি (১৯৫৪ - ২০১৮) ছিলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক,[১] প্রযোজক এবং চিত্রনাট্যকার। তিনি একজন স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা ছিলেন যিনি বাস্তবসম্মত, কম বাজেটের চলচ্চিত্রে বেশি কাজ করেছিলেন, যেগুলি ভারতে সমান্তরাল চলচ্চিত্র হিসেবে পরিচিত। তাঁর চলচ্চিত্রগুলি প্রায়শই নারীকেন্দ্রিক ছিল। তিনি দীর্ঘদিন ভূপেন হাজারিকার ম্যানেজার ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালে কিডনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং ২০১৮ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর ৬৪ বছর বয়সে মারা যান।[২]

কল্পনা লাজমি
জন্ম১৯৫৪ (1954)
মৃত্যু২০১৮ (বয়স ৬৩–৬৪)
পেশাচলচ্চিত্র নির্মাতা
পিতা-মাতা
আত্মীয়গুরু দত্ত (কাকা)
আত্মা রাম (কাকা)

জীবনী সম্পাদনা

কল্পনা লাজমি চিত্রশিল্পী ললিতা লাজমি এবং নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন গোপী লাজমির কন্যা ছিলেন।[৩] তিনি ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা গুরু দত্তের ভাইঝি। প্রবীণ চলচ্চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনেগালের অধীনে একজন সহকারী পরিচালক তিনি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। তিনি পাড়ুকোন পরিবারেরও আত্মীয় ছিলেন। পরে তিনি শ্যাম বেনেগালের ভূমিকা: দ্য রোল -এ সহকারী পোশাক পরিকল্পক হিসেবে কাজ করেন। তিনি ১৯৭৮ সালে প্রামাণ্য চলচ্চিত্র (ডকুমেন্টারি ফিল্ম) ডিজি মুভি পাইওনিয়ার দিয়ে পরিচালনায় আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর তিনি এ ওয়ার্ক স্টাডি ইন টি প্লাকিং (১৯৭৯) এবং অ্যালং দ্য ব্রহ্মপুত্র (১৯৮১) -র মতো আরও তথ্যচিত্র পরিচালনা করেন। তিনি ১৯৮৬ সালে শাবানা আজমি, নাসিরুদ্দিন শাহ এবং ফারুক শেখ অভিনীত এক পল (এ মোমেন্ট) দিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র (ফিচার ফিল্ম) পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি চলচ্চিত্রটি প্রযোজনাও করেছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি চলচ্চিত্র রচনায় অংশ নেন এবং গুলজারের সাথে চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন।

এরপর তিনি চলচ্চিত্র পরিচালনা থেকে বিরতি নেন এবং তানভি আজমি অভিনীত তাঁর প্রথম টেলিভিশন ধারাবাহিক লোহিত কিনারে (১৯৮৮) পরিচালনা করেন। তিনি ১৯৯৩ সালে ডিম্পল কাপাড়িয়া অভিনীত রুদালি ছবি দিয়ে সিনেমায় প্রত্যাবর্তন করেন, ছবিটি সমালোচকদের দ্বারা প্রশংসিত হয়। ডিম্পল কাপাড়িয়া তাঁর অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জেতেন এবং কল্পনা লাজমিও ছবিটি পরিচালনার জন্য প্রশংসিত হন।

তাঁর পরবর্তী চলচ্চিত্র ছিল দরমিয়াঁ: ইন বিটুইন (১৯৯৭), যেটি তিনি পরিচালনা ও প্রযোজনা করেছিলেন। চলচ্চিত্রটিতে কিরণ খের এবং টাবু গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

২০০১ সালে তাঁর পরবর্তী ছবি ছিল দামন: এ ভিক্টিম অফ ম্যারিটাল ভায়োলেন্স। ছবিটি বিতরণ করেছিল ভারত সরকার এবং সমালোচকেরা এর প্রশংসা করেছিলেন। কল্পনা লাজমির পরিচালনায় এটি দ্বিতীয়বারের মতো সেরা অভিনেত্রীর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছিল। এই ছবিতে নায়িকা ছিলেন রবীনা ট্যান্ডন, যাঁকে এর আগে সেইভাবে কাজে লাগানো হয়নি, এবং কল্পনা লাজমিকে কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছিল রবীনার মধ্যে লুকানো প্রতিভা বার করে আনার জন্য।

তার পরবর্তী ছবি কিঁউ? (২০০৩) সেভাবে কেউ খেয়াল করেনি। তাঁর শেষ চলচ্চিত্র ছিল ২০০৬ সালে চিঙ্গারি যেখানে সুস্মিতা সেন একজন গ্রাম্য পতিতা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। চিঙ্গারি বাণিজ্যিকভাবে বক্স-অফিসে ফ্লপ হয়।

চলচ্চিত্রের তালিকা সম্পাদনা

বছর চলচ্চিত্র ভূমিকা(গুলি)
১৯৭৮ ডিজি মুভি পাইওনিয়ার পরিচালক
১৯৭৯ এ ওয়ার্ক স্টাডি ইন টি প্লাকিং পরিচালক
১৯৮১ অ্যালং দ্য ব্রহ্মপুত্র পরিচালক
১৯৮৬ এক পল পরিচালক, প্রযোজক, লেখক
১৯৮৮ লোহিত কিনারে পরিচালক
১৯৯৩ ''রুদালি'' পরিচালক, লেখক
১৯৯৭ ''দরমিয়াঁ: ইন বিটুইন'' পরিচালক, প্রযোজক
২০০১ দামন: এ ভিক্টিম অফ ম্যারিটাল ভায়োলেন্স পরিচালক, লেখক
২০০৩ কিঁউ? পরিচালক, প্রযোজক
২০০৬ ''চিঙ্গারি'' পরিচালক, প্রযোজক, লেখক

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Director Kalpana Lajmi's producer in slugfest"The Times of India। ৭ জুন ২০১২। ২৯ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১২ 
  2. "Filmmaker Kalpana Lajmi, director of Rudaali, dies in Mumbai at 64"Hindustan Times। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  3. "Kalpana Lajmi: A life in focus | India News - Times of India"The Times of India। ২৫ জুলাই ২০০৩। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা