ওয়াসিফ মঞ্জিল
ওয়াসিফ মঞ্জিল (ওয়াসেফ মঞ্জিল এবং নতুন প্রাসাদ নামেও পরিচিত) মুর্শিদাবাদের দ্বিতীয় নবাব ওয়াসিফ আলী মির্জা খান নির্মাণ করেছিলেন। হাজারদুয়ারি প্রাসাদের দক্ষিণ প্রান্তে পাহাড় বাগান সংলগ্ন কেল্লা নিজামত চত্বরে ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে এই প্রাসাদটি নির্মিত হয়েছিল বলেই এটিকে 'নতুন প্রাসাদ' বলা হয়।[১] নবাব ওয়াসিফ আলী মির্জা খান নদীয়া নদী বিভাগের অধীনস্থ গণপূর্ত উপবিভাগের আধিকারিক মিঃ ভিভিয়ান এবং বাঙালি প্রকৌশলী সুরেন্দ্র বারাতের নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে এটি নির্মাণ করিয়েছিলেন। এই ভবনটি তথা প্রাসাদটিকেই নবাব তার বাসভবন হিসেবে ব্যবহার করতেন। ভবনটি হাজারদুয়ারি প্রাসাদের দক্ষিণে এবং হাজারদুয়ারি প্রাসাদের মধ্যবর্তী নিজামত ইমামবাড়ার দক্ষিণ জুরুদ মসজিদের ঠিক বিপরীতে এবং ভাগীরথী-হুগলি নদীর সমান্তরালে নির্মিত।
ওয়াসিফ মঞ্জিল | |
---|---|
বিকল্প নাম | নতুন প্রাসাদ |
সাধারণ তথ্যাবলী | |
অবস্থান | পশ্চিমবঙ্গ ভারত |
শহর | মুর্শিদাবাদ |
দেশ | ভারত |
স্থানাঙ্ক | ২৪°১০′৫৮″ উত্তর ৮৮°১৬′১০″ পূর্ব / ২৪.১৮২৬৬৩° উত্তর ৮৮.২৬৯৪৯২° পূর্ব |
সম্পূর্ণ | বর্তমান ভবনটি ভূমিকম্পের পর ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে পুনরুদ্ধার করা হয় |
সংস্কার | ১৮৯৭ ভূমিকম্পের পরে সংস্কার করা হয়েছিল। বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণ করে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ। |
ভগ্নপ্রাপ্ত | ১২ জানুয়ারি ১৮৯৭ |
কারিগরী বিবরণ | |
তলার সংখ্যা | বর্তমানে ভবনটি বারান্দাসহ একতলার, প্রাচীন ভবনটি ছিল দ্বিতলের |
নকশা ও নির্মাণ | |
স্থপতি | নদীয়া নদী বিভাগের অধীনস্থ গণপূর্ত বিভাগের - মিঃ ভিভিয়ান, আধিকারিক সুরেন্দ্র বারাত, বাঙালি প্রকৌশলী |
Website | |
"Website URL"। |
ভূগোল
সম্পাদনাকারিগরি সমস্যার কারণে গ্রাফ এই মূহুর্তে অস্থায়ীভাবে অনুপলব্ধ রয়েছে। |
অবস্থান
সম্পাদনাওয়াসিফ মঞ্জিলটির অবস্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হলো যথাক্রমে ২৪.১৮২৬৬৩° উত্তর, ৮৮.২৬৯৪৯২° পূর্ব।
কিলা নিজামত এলাকায় হাজারদুয়ারি প্রাসাদ এবং এর সাথে সম্পর্কিত স্থানগুলি (পাশাপাশি মানচিত্রে কেন্দ্রীয় এলাকা গঠন) মুর্শিদাবাদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। একটু দূরে কাটরা মসজিদ, ফৌতি মসজিদ, জামে মসজিদ এবং মতিঝিল এলাকা। শহরের উত্তর অংশে একদল আকর্ষণ রয়েছে (যার পাশাপাশি মানচিত্রে দেখা যায়)। কিছু আকর্ষণ যেমন খুশবাগ, রোসনাইগঞ্জ, বরানগর, কিরীটেশ্বরী মন্দির, কর্ণসুবর্ণ এবং অন্যান্যগুলি নদীর ওপারে এবং পার্শ্ববর্তী বারহামপুর এলাকায়ও আকর্ষণ রয়েছে (মানচিত্রে দেখানো হয়নি।[২]
দ্রষ্টব্য: মানচিত্রটি মুর্শিদাবাদ শহরের কিছু উল্লেখযোগ্য স্থান উপস্থাপন করে। মানচিত্রে চিহ্নিত স্থানগুলির বেশিরভাগই বৃহত্তর পূর্ণ স্ক্রীন মানচিত্রে লিঙ্ক করা হয়েছে৷ কয়েকটি, এখনও পৃষ্ঠা ছাড়া, অচিহ্নিত রয়ে গেছে। মানচিত্রের একটি স্কেল আছে। এটি দর্শকদের দূরত্ব খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে।
ধ্বংস
সম্পাদনা১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ১২ জুনের ভূমিকম্পে প্রাসাদটির বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস হয়ে যায়। মুহূর্তেই রাজপ্রাসাদের দ্বিতীয় তলের পুরোটাই ভেঙ্গে পড়ে। প্রাসাদটি দ্বিতীয় তল ছাড়াই পুনরুদ্ধার করা হয়। ছোট অথচ অত্যন্ত সুন্দর প্রাসাদ সংলগ্ন স্থানে একটি কৃত্রিম পাহাড় এবং সুন্দর ল্যান্ডস্কেপের বাগান ছিল। প্রাসাদ পুনরুদ্ধার করা হলেও পাহাড়টি পুনর্গঠন হয়নি।[৩]
বৈশিষ্ট্য
সম্পাদনাওয়াসিফ মঞ্জিলটির নির্মাণ এমন নকশায় করা হয় যে এটি দেখতে কিছুটা দুর্গের মতো এবং কোণায় কোণায় রাখা হয় ছোট ছোট টাওয়ার বা বুরুজ। ১২০ বছরের পুরাতন ভবনটিতে বহু ঐতিহাসিক নিদর্শন সংরক্ষিত রয়েছে। দীর্ঘ ষোল বৎসর বন্ধ থাকার পর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে যাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়েছে।[১] প্রাসাদটিতে একটি অর্ধবৃত্তাকার পেডিমেন্ট রয়েছে যার উপর মুর্শিদাবাদের নবাবদের অস্ত্র রাখা আছে। বর্তমানে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ প্রাসাদটির সংরক্ষণ ত রক্ষণাবেক্ষণ করে। প্রাসাদ সংলগ্ন বাগানের একটি ফোয়ারা এবং বেশ কয়েকটি মার্বেল মূর্তি রাখা হয়েছে। সুদর্শন লোহার রেলিং দিয়ে ঘেরা বাগানটির প্রধান প্রবেশদ্বারে একটি নর্মান আর্চওয়ে যেখানে খোলা কাজের লোহার দরজা রয়েছে। প্রাসাদের ভিতরে মার্বেলে নির্মিত সিঁড়ি ও মূর্তিগুলোও নয়নাভিরাম।
ওয়াসিফ মঞ্জিল গ্যালারি
সম্পাদনা-
ওয়াসিফ মঞ্জিল
-
ওয়াসিফ মঞ্জিল
-
মূর্তি
-
অস্ত্র কোট - স্টুকো সজ্জা
-
ওয়াসিফ মঞ্জিল
এছাড়াও দেখুন
সম্পাদনা- নিজামত ফোর্ট ক্যাম্পাস এবং ক্যাম্পাসে নির্মিত অন্যান্য ভবন:
- হাজারদুয়ারি প্রাসাদ
- চক মসজিদ
- নিজামত ইমামবাড়া
- নবাব ওয়াসিফ আলী মির্জা খান, নবাব যিনি এই মহিমান্বিত প্রাসাদটি নির্মাণ করেছিলেন।
- বাংলা ও মুর্শিদাবাদের নবাব
- ↑ ক খ "১৬ বছর পরে খোলা হল ওয়াসিফ মঞ্জিল"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-২৯।
- ↑ "Offbeat Weekend in Murshidabad"। Outskirts of Killa Nizamat (Northern part)। Offbeat Weekend। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০২১।
- ↑ "Wasif Manzil, Murshidabad Overview"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-২৯।