ঐশ্বর্য রাজ্য লক্ষ্মী দেবী শাহ

নেপালের রাণী (১৯৪৯-২০০১)

ঐশ্বর্য রাজ্য লক্ষ্মী দেবী শাহ বা রাণী ঐশ্বরিয়া (৭ নভেম্বর ১৯৪৯ - ১ জুন ২০০১) ১৯৭২ থেকে ২০০১ পর্যন্ত নেপালের রাণী ছিলেন, তাকে বড় মহারানি নামেও অভিহিত করা হত। রাণী ঐশ্বরিয়া ধ্রুপদী সৌন্দর্যের একজন মহিলা হিসাবে বিশ্বসমাদৃত ছিলেন, এবং তিনি তার চুলের স্টাইল ও পোশাক পরিধানের জন্যও জগৎবিখ্যাত ছিলেন।

রাণী ঐশ্বরিয়া
রাণী ঐশ্বরিয়া (সাল -১৯৭২)
নেপালের রানী
কার্যকাল৩১ জানুয়ারি ১৯৭২ – ১ জুন ২০০১
রাজ্যাভিষেক২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫
জন্ম(১৯৪৯-১১-০৭)৭ নভেম্বর ১৯৪৯
লজিমপাত দরবার, কাঠমুন্ডু, নেপাল
মৃত্যু১ জুন ২০০১(২০০১-০৬-০১)
দাম্পত্য সঙ্গীবীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব (বি. ১৯৭০)
পূর্ণ নাম
ঐশ্বর্য রাজ্য লক্ষ্মী দেবী শাহ
পিতাজেনারেল কেন্দ্র শমসের জং বাহাদুর রানা
মাতাশ্রী রাজ্য লক্ষ্মী দেবী শাহ
ধর্মহিন্দু

শিক্ষা

সম্পাদনা

রাণী ঐশ্বরিয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে- ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সেন্ট হেলেনস কনভেন্ট, কার্সিওং এবং সেন্ট মেরিস অব জাওয়ালাখেল। তিনি ১৯৬৩ সালে কান্তি ঈশ্বরী রাজ্য লক্ষ্মী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে SLC পাশ করেন। এরপর তিনি ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত পদ্মকন্যা কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৬৭ সালে চারুকলায় স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

জন্ম ও পারিবারিক জীবন

সম্পাদনা

রাণী ঐশ্বরিয়া নেপালের বিখ্যাত রানা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যারা কিনা ১০৪ বছর নেপালে শাসন করেছিল। নেপালের জেনারেল কেন্দ্র শামশের জং বাহাদুর রানা (১৯২১-১৯৮২) এবং তাঁর স্ত্রী শ্রীরাজ্য লক্ষ্মী শাহ (১৯২৬-২০০৫) এর বড় মেয়ে ছিলেন রাণী ঐশ্বরিয়া। তার দুই ভাইয়ের নাম ছিল সুরজ শামশের জং বাহাদুর রানা ও উদয় শামশের জং বাহাদুর রানা এবং দুই বোন রানী কোমল রাজ্য লক্ষ্মী দেবী শাহ; রাজকুমারী প্রক্ষ রাজ্য লক্ষ্মী দেবী শাহ।

নেপালের রানীর দায়িত্ব

সম্পাদনা

১৯৭০ সালে নেপালের রাজপুত্র বীর বিক্রম শাহ নেপালের বিখ্যাত রানা পরিবারের সন্তান রাণী ঐশ্বরিয়াকে বিবাহ করেন[]।  ১৯৭২ সালে রাজা মহেন্দ্র মারা যাওয়ার পর, রাজা  বীরেন্দ্র রাজ-দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। রাণী ঐশ্বরিয়া ছিলেন অত্যন্ত উদ্যমী, স্পষ্টভাষী এবং বুদ্ধিমান। তিনি নেপালজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। রাণী ঐশ্বরিয়া তার স্বামীকে প্রতিটি ধাপে সমর্থন করেছিলেন, যদিও পুরো সময়ে তারা নানান সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। তিনি ছিলেন একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মহিলা যিনি তার দেশ এবং জনগণের চাহিদা বুঝতে পারতেন।[]

সাহিত্যে অবদান

সম্পাদনা

রাণী ঐশ্বরিয়া চাঁদনী শাহ ছদ্মনামে কবিতা লিখতেন, এবং  কয়েক ডজন কবিতা লিখেছিলেন। এছাড়াও তিনি বহু বিখ্যাত গানের সুরকারও ছিলেন এবং তার গানগুলি প্রায়ই রেডিও নেপাল এবং নেপাল টেলিভিশনে প্রচারিত হতো।

হত্যা এবং মৃত্যু

সম্পাদনা

২০০১ সালের ১ জুন রাণী ঐশ্বরিয়া, তার স্বামী রাজা বীরেন্দ্র, তাদের ছেলে রাজকুমার নীরাজন, মেয়ে রাজকুমারী শ্রুতিসহ রাজ পরিবারের মোট সাতজন সদস্যকে গুলি করে হত্যা করা হয়। অনেকের ধারণা, হত্যার মূল কারন হচ্ছে দেবযানী রানার সাথে যুবরাজ দীপেন্দ্র বীর বিক্রম শাহের প্রস্তাবিত বিয়ে নিয়ে তীব্র ঝামেলা। এই হত্যাকাণ্ডে গুলির আঘাতে রানী ঐশ্বরিয়ার মুখ এতটাই বিকৃত হয়ে গিয়েছিল যে, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ও শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের জন্যও একটি চীনামাটির মুখোশ দিয়ে তার মুখ ঢাকতে হয়েছিল।[]

সম্মাননা

সম্পাদনা

জাতীয়

সম্পাদনা

আন্তর্জাতিক

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "King Birendra of Nepal"www.telegraph.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-০৭ 
  2. "Aishwarya: Nepal's forceful queen" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০১-০৬-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-০৭ 
  3. Amy Willesee & Mark Whittaker (2004). Love & Death in Kathmandu A Strange Tale of Royal Murder, 1st U.S. ed. New York : St. Martin's Press, 2004আইএসবিএন 1-84413-558-6 
  4. "Cyranos" 
  5. https://s-media-cache-ak0.pinimg.com/originals/6c/87/72/6c8772247750f50378b302d4c5c34f5d.jpg
  6. http://l7.alamy.com/zooms/153971e4c1e3430d9fc5dbaca4ac92db/nepals-king-birendra-2nd-r-and-queen-aishwarya-r-decorate-crown-prince-gywwpm.jpg
  7. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৭ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০২১ 
  8. http://c7.alamy.com/comp/BTNK7X/-BTNK7X.jpg
  9. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৮ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০২১ 
  10. "Bilateral relations"La France au Népal। ১৮ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ এপ্রিল ২০১৮ 
  11. "Boletín Oficial del Estado" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২১ এপ্রিল ২০১৮ 
  12. https://s-media-cache-ak0.pinimg.com/originals/65/35/92/653592ba21a54229ca8c1189fb861d38.jpg
  13. "Boletín Oficial del Estado" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২১ এপ্রিল ২০১৮ 
  14. "Alamy" 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা