এ বি এম আব্দুল্লাহ
এ বি এম আবদুল্লাহ (জন্ম ১৯৫৪) একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশি চিকিৎসক ও ইমেরিটাস অধ্যাপক। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং মেডিসিন অনুষদের ৩ বার ডিন নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৬ সালে তিনি একুশে পদক পান এবং ২০১৭ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে।[১] তিনি রাষ্ট্রীয় ভাবে পূর্ণ সচিব পদমর্যাদায় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। ২০২২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ইমেরিটাস অধ্যাপক পদবীতে ভূষিত করে।[২]
ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | ১৯৫৪ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
শিক্ষা | এমবিবিএস (ঢাকা), এমআরসিপি (লন্ডন); এফআরসিপি (এডিন) |
পেশা | অধ্যাপক, চিকিৎসক |
পুরস্কার | একুশে পদক |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাআবদুল্লাহ ১৯৫৪ সালে জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার হাড়িয়াবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[৩] তিনি হারিয়াবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। ১৯৬৯ সালে ইসলামপুর নেকজাহান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন।[৩] ১৯৭২ সালে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭৮ সালে তিনি এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন।[৩]
কর্মজীবন
সম্পাদনাআবদুল্লাহ ১৯৭৮ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করার পর কিছুদিন গ্রামে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর পাঁচ বছর সৌদি আরবে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করার পর ১৯৯২ সালে লন্ডনের 'রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস' এর অধীনে এমআরসিপি ডিগ্রি লাভ করে দেশে এসে হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে দুই বছর পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি সহকারী অধ্যাপক হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তৎকালীন পিজি হাসপাতাল) যোগদান করেন।[৩] পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়টির মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক এবং ডীন হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর তিনি সচিব পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ পান।[৪]
গ্রন্থ
সম্পাদনাঅধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ জনগণের স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ে বিভিন্ন নিয়মিত লেখালেখি করছেন। এছাড়াও তিনি মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য ছয়টির বেশি মেডিকেল পুস্তক রচনা করেছেন, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
- শর্ট কেসেস ইন ক্লিনিক্যাল মেডিসিন
- লং কেসেস ইন ক্লিনিক্যাল মেডিসিন
- ইসিজি অব মেডিক্যাল প্র্যাকটিস
- রেডিওলজি অব মেডিক্যাল প্র্যাকটিস
- স্বাস্হ্য বিষয়ক নির্বাচিত কলাম
তার রচিত এ সকল মেডিকেল পুস্তক বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ব্রিটেনসহ আরব বিশ্বের বিভিন্ন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়।[৫] এছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় সংবাদপত্রে নিয়মিত স্বাস্থ্য বিষয়ক কলাম লিখে থাকেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনা- ২০১৫: "শর্ট কেসেস ইন ক্লিনিক্যাল মেডিসিন" নামক পুস্তকটি রচনার জন্য ‘ইউজিসি অ্যাওয়ার্ড ২০১৩’ অর্জন করেন।[৬]
- ২০১৬: গবেষণায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একুশে পদকে ভূষিত হন।[৭]
- ২০১৭: বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রদত্ত ফেলোশিপ লাভ করেন।[৮]
- ২০১৯: ইউজিসি অধ্যাপক নিযুক্ত হন।[৯]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "বাংলা একাডেমির সম্মানসূচক ফেলোশিপ পেলেন যারা"। দৈনিক যুগান্তর। ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
- ↑ hide (জানুয়ারি ৩১, ২০২২)। "ইমেরিটাস অধ্যাপক হলেন ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ"। দ্য ডেইলি স্টার বাংলা। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১১, ২০২৪।
- ↑ ক খ গ ঘ "দেরিতে হলেও যা চেয়েছি, পেয়েছি : ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ"। এনটিভি। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ "প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক হলেন এ বি এম আব্দুল্লাহ"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ http://www.bd-pratidin.com/home/printnews/180272/2016-10-28%7Cঅধ্যাপক ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০২১-০৯-০৪ তারিখে এ বি এম আবদুল্লার সাক্ষাৎকার
- ↑ "ইউজিসি অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ"। দৈনিক কালের কণ্ঠ। ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ "একুশে পদক নিলেন ১৬ জন"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "বাংলা একাডেমির ফেলোশিপ পেলেন সাত বিশিষ্টজন"। দৈনিক কালের কণ্ঠ। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "ইউজিসি প্রফেসর হিসেবে ইতিপূর্বে যারা মনোনীত হয়েছেন তাদের তালিকা" (পিডিএফ)। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০২১।