এ. কে. এম. শামসুজ্জোহা

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ
(এ কে এম শামসুজ্জোহা থেকে পুনর্নির্দেশিত)

আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা যিনি এ কে এম শামসুজ্জোহা  নামে পরিচিত ছিলেন। একজন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ ও সাবেক সংসদ সদস্য। তার নির্বাচনী এলাকা নারায়ণগঞ্জ। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্ষেত্রে অনন্যসাধারণ ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে ২০১২ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক ২০১১ দেয়া হয়।[১]

এ. কে. এম. শামসুজ্জোহা
জাতীয় সংসদ
ঢাকা-৩০ আসনের
সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৭৩ – ১৯৭৫
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মআবুল খায়ের মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা
আনু. ১৯২৪
নারায়ণগঞ্জ জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭(1987-02-20) (বয়স ৬২–৬৩)
নাগরিকত্ব
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
দাম্পত্য সঙ্গীনাগিনা জোহা
সন্তান
পিতামাতাখান সাহেব এম. ওসমান আলী, জামিলা ওসমান
প্রাক্তন শিক্ষার্থীঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

তিনি ১৯২৪ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম খান সাহেব এম. ওসমান আলী এবং মাতার নাম জামিলা ওসমান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

কর্ম ও রাজনৈতিক জীবন সম্পাদনা

১৯৪২ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ ছাত্র মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক হন ও ১৯৪৫ সালে শিক্ষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪৯ সালে তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগে সদস্য হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫২ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ ভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি হিসেবে ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।[২] সেই সময় একটি মিথ্যা মামলায় তাকে ১৮ মাস কারাবন্দী রাখা হয়। ১৯৬৪ সালে নারায়ণগঞ্জ মহকুমা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ১৯৭০-এর নির্বাচনে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ভ্রমণ করে জনমত গঠন ও তহবিল সংগ্রহে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর তিনি মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে প্রথম বেতার ভাষণ প্রদান করেন এবং দেশের সর্বোচ্চ আদালতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।[২]

তিনি ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন ঢাকা-৩০ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৩] বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর মন্ত্রিত্ব গ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে তাকে ১৮ মাস বন্দী রাখা হয়।[২]

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ১৯৫০ সালে নাগিনা জোহাকে বিয়ে করেন।[৪] তার তিন পুত্র সংসদীয় নির্বাচনে জয়লাভ করে ও সাংসদ নির্বাচিত হয়। তাদের মধ্যে সেলিম ওসমাননাসিম ওসমান জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত এবং শামীম ওসমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হন।

মৃত্যু সম্পাদনা

তিনি ২০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৭ সালে মারা যান।[৫]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "ভাষাসৈনিক সামসুজ্জোহার মৃত্যুবার্ষিকী পালিত"দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৭তিনি ছিলেন একাধারে ভাষাসৈনিক, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, গণপরিষদের সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও সংসদ সদস্য। মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় তাকে ২০১২ সালে স্বাধীনতা পদক (মরণোত্তর) দেওয়া হয়। 
  2. মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি"old.cabinet.gov.bd। ৯ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  3. "১ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  4. "শামীম ওসমানের মা নাগিনা জোহা আর নেই"। ৭ মার্চ ২০১৬। ৯ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  5. "শামসুজ্জোহার মৃত্যুবার্ষিকী পালিত"দ্য রিপোর্ট। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৭