বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ (সংক্ষেপেঃ বানৌজা) এলসিভিপি ০১২ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি ল্যান্ডিং ক্রাফট ভেহিকেল অ্যান্ড পার্সোনেল (এলসিভিপি) জাহাজ। এই জাহাজটিকে দেশীয় প্রযুক্তিতে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড কর্তৃক নির্মাণ করা হয়। এই জাহাজটি সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় অঞ্চলে উভচর অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি সেনাসদস্য, রসদ, অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং বিভিন্ন প্রকার সামরিক সরঞ্জাম পরিবহনে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজটি দুর্যোগ কালীন সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা ও দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ তৎপরতা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে।[১][২][৩][৪][৫][৬][৭]

ইতিহাস
বাংলাদেশ
নাম: এলসিভিপি ০১২
নির্মাতা: খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড
কমিশন লাভ: ১৯৮৪
মাতৃ বন্দর: খুলনা
শনাক্তকরণ: এল০১২
অবস্থা: সক্রিয়
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: ল্যান্ডিং ক্রাফট ভেহিকেল অ্যান্ড পার্সোনেল
ওজন: ৮৩ টন
দৈর্ঘ্য: ২১.৩ মিটার (৭০ ফু)
প্রস্থ: ৫.২০ মিটার (১৭.১ ফু)
গভীরতা: ১.৫০ মিটার (৪.৯ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • ২ × কেটিএ-১১৫০এম, কিউএসকে৬০-এম ৭৩০ অশ্বশক্তি (৫৪০ কিওয়াট) কামিন্স ডিজেল ইঞ্জিন (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)
  • ২ × শ্যাফট
গতিবেগ: ১২ নট (২২ কিমি/ঘ; ১৪ মা/ঘ)
সহনশীলতা: ১০ দিন
লোকবল: ১০ জন
রণসজ্জা: ২ × ১২.৭ মিমি বিমান বিধ্বংসী মেশিনগান

ইতিহাস সম্পাদনা

সশস্ত্র বাহিনীর জন্য গৃহীত দীর্ঘমেয়াদী আধুনিকায়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার দেশীয় উৎস থেকে সমরাস্ত্র সংগ্রহ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য জাহাজ নির্মানের পদক্ষেপ নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড কর্তৃক উভচর জাহাজটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। অবশেষে ১৯৮৪ সালে এলসিভিপি ০১২ জাহাজটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে।

বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো সম্পাদনা

এলসিভিপি ০১২ জাহাজটির দৈর্ঘ্য ২১.৩ মিটার (৭০ ফু), প্রস্থ ৫.২০ মিটার (১৭.১ ফু) এবং গভীরতা ১.৫০ মিটার (৪.৯ ফু)। এই উভচর জাহাজটির ওজন ৮৩ টন এবং জাহাজটিতে রয়েছে ২টি কেটিএ-১১৫০এম, কিউএসকে৬০-এম ৭৩০ অশ্বশক্তি (৫৪০ কিওয়াট) কামিন্স ডিজেল ইঞ্জিন (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)। যার ফলে জাহাজটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ১২ নট (২২ কিমি/ঘ; ১৪ মা/ঘ)। এটি ১০ জন জনবল নিয়ে একনাগাড়ে ১০ দিন অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম। বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে প্রায়শই অবাঞ্ছিত বাহিনী দ্বারা উভচর অবতরণ প্রতিরোধের জন্য সামরিক ভূমিকা পালন করতে হয় এবং উপকূলীয় অঞ্চলে মানবিক সহায়তা ও দুর্যোগ ত্রাণ (এইচএডিআর) অপারেশন পরিচালনা করতে হয়। দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত এলসিভিপি সমূহ এসকল প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য উপযুক্ত। উভচর সামরিক অভিযান পরিচালনাকালে নিজস্ব আক্রমণ দলকে তীরে অবতরণ করানোর পাশাপাশি প্রতিটি এলসিভিপি কিছু সময়ের জন্য একটি সৈন্যদল এবং সরঞ্জাম বহন করতে সক্ষম। এছাড়াও এসকল জাহাজ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও মোতায়েন করার উপযোগী।

রণসজ্জা সম্পাদনা

দুর্যোগ ও শান্তিকালীন সময়ে সহায়ক ভূমিকায় নিয়োজিত এই জাহাজটিতে রয়েছে:

  • ৪টি সিআইএস-৫০ ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান;
  • এছাড়াও যুদ্ধকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে জাহাজটিতে ২টি ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র কিউডব্লিউ-২ ম্যানপ্যাড মোতায়েন করা যায়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "সিলেট ও সুনামগঞ্জে ত্রাণ কার্যক্রমকে বেগবান করতে যোগ দিয়েছে নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজ"www.facebook.com। ২০২৩-০৭-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৫ 
  2. "ঘূর্ণিঝড় 'ইয়াস' পরবর্তী জরুরি উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তায় নৌবাহিনীর ১৮টি যুদ্ধজাহাজ, মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট ও হেলিকপ্টার"আইএসপিআর। ২০২১-১২-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-০৬ 
  3. "মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে ৫২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা মূল্যের ৮৭ লাখ ২৯ হাজার মিটার অবৈধ জাল আটক করেছে নৌবাহিনী"আইএসপিআর। ২০২২-১০-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-২৪ 
  4. "ঘূর্ণিঝড় 'সিত্রাং' পরবর্তী জরুরি উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তায় প্রস্তুত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ১৭টি জাহাজ, এমপিএ ও হেলিকপ্টার"আইএসপিআর। ২০২২-১০-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-২৪ 
  5. "Tender specification of spare parts for main engine (Brand:Cummins, USA)- BNS Mongla (LCVP-012 & 013)" (পিডিএফ)Directorate General Defense Purchase (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-১১-১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-১৪ 
  6. "সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার্তদের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মানবিক সহায়তা"। ১৪ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০২২ 
  7. "বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এলসিভিপি"www.facebook.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-১৯