উম্মে সুলাইম বিনতে মিলহান

বিখ্যাত মহিলা সাহাবী

রুমাইসা বিনতে মিলহান (রাঃ) বা উম্মে সুলাইম বিনতে মিলহান(রাঃ) মুহাম্মাদ ﷺ এর একজন মহিলা সাহাবা ছিলেন। যিনি আনাস ইবনে মালিকে(রাঃ)র আম্মা ছিলেন।[১][২]

হযরত

উম্মে সুলাইম

রাদিয়াল্লাহু আনহা
أم سليم
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম
রুমাইসা বিনতে মিলহান
মৃত্যুআনু. ৬৫০
ধর্মইসলাম
দাম্পত্য সঙ্গীমালেক ইবনে নাযর
আবু তালহা আনসারী
সন্তানআনাস ইবনে মালিক, আবদুল্লাহ ইবনে আবু তালহা
পিতামাতা
  • মিলহান ইবনে খালিদ (পিতা)
  • মুলাইকা বিনতে মালিক (মাতা)
জাতিসত্তাআরব
রাজবংশবনু খাযরাজ
সম্পর্কহারাম বিন মিলহান (ভাই), উম্মে হারাম বিনতে মিলহান (বোন)

নাম ও বংশ পরিচয় সম্পাদনা

রুমাইসা বিনতে মিলহান এর ডাকনাম উম্মে সুলাইম। আর এ নামেই তিনি প্রসিদ্ধ লাভ করেছেন। এছাড়াও তার আসল নাম সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে,সেগুলো হলঃ রুমাইসা, সাহলা, রুমাইলা, মুলাইকা। এর মধ্যে রুমাইসা নাম সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য।[৩]

উম্মে সুলাইম মদীনার খাজরাজ গোত্রের সম্ভ্রান্ত শাখা আদি বিন নাজ্জার শাখার মেয়ে। তার পিতার নাম মিলহান ইবনে খালিদ এবং মাতার নাম মুলাইকা বিনতে মালিক

ইসলাম গ্রহণ সম্পাদনা

মুহাম্মাদ ﷺ মদিনায় হিজরতের পূর্বেই মদিনা থেকে কিছু লোক মক্কায় এসে আকাবার প্রথম শপথ করে মদিনায় ফিরে গেলেই উম্মে সুলাইম ইসলাম গ্রহণ করে মদিনার প্রাথমিক ইসলাম গ্রহণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হন।[৪]

জীবন বৃত্তান্ত সম্পাদনা

ইসলাম গ্রহণের পূর্বে প্রথমে মালেক ইবনে নযরের সাথে তার বিবাহ হয়। এই ঘরেই আনাস ইবনে মালিক জন্মগ্রহণ করেন। উম্মে সুলাইম ইসলাম গ্রহণ করায় তার স্বামী মালেক ইবনে নাযর ক্ষুব্ধ হয়ে দেশত্যাগ করে সিরিয়ায় চলে যায় এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে আবু তালহা আনসারী উম্মে সুলাইমকে বিয়ে করে ইসলাম গ্রহণ করেন।[৫][৬]

আবু তালহা আনসারী এই ঘরে আবু উমাইর জন্ম গ্রহণকরেন এবং ছোট অবস্থায়ই অসুস্থ হয়ে মারা যান। পরবর্তীতে আবদুল্লাহ নামে একটি শিশু জন্মগ্রহণ করে।[৭][৮]

চারিত্রিক গুণাবলী সম্পাদনা

উম্মে সুলাইম বিনতে মিলহান একজন যত্নবান ধৈর্যশীল মা ও নারী ছিলেন। তিনি প্রতিবেশীদের খাবার উপকৌঠন পাঠাতে পছন্দ করতেন। তিনি মুহাম্মাদ ﷺ এর পরিবারের জন্যও খাবার পাঠাতেন। ইবাদত ও আল্লাহ্‌ভীতিতে তিনি শেষ জীবন অতিবাহিত করেছেন। তিনি তৎকালীন আরব সমাজে একজন বিজ্ঞ ফকিহ ও হাদিস বর্ণনাকারী নারী ছিলেন।[৩]

আল্লামা ইবনে আসির তার সম্পর্কে লিখেছেন : তিনি অন্যতম জ্ঞানী মহিলা ছিলেন।

যুদ্ধে অংশগ্রহণ সম্পাদনা

উম্মে সুলাইম ইবনে মিলহান উহুদ, খায়বার এবং হুনাইন ছাড়াও অনেক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মশক ভরে পানি আনতেন, আহতদের পানি পান করাতেন, ছাতু গুলিয়ে দিতেন, তীর উঠিয়ে দিতেন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসার সরঞ্জাম দিয়ে সহযোগিতা করতেন।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. (মুসলিম, হাদিস: ২৪৫৬) 
  2. [মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ১১৯৫৫] 
  3. মাসিক, আল কাউসার (ফেব্রুয়ারি ২০১২)। "এক জান্নাতী সাহাবিয়ার অনন্যসাধারণ ঘটনা"মাসিক আল কাউসার। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১৯ 
  4. "হযরত উম্মু সুলাইম (রা.)"The Daily Sangram। ২০১৭-০৪-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-১৫ 
  5. [সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ৩৩৪০] 
  6. [মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১০৪১৭] 
  7. [সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৩০১] 
  8. [ফাতহুল বারী ৩/২০১]