উকবা ইবনে আবু মুয়াত
উকবা ইবনে আবু মুয়াত (আরবি: عقبة بن أبي معيط; মৃত্যু ৬২৪) ইসলামের অন্যতম প্রধান বিরোধী ছিলেন। তিনি ছিলেন কুরাইশ নেতা এবং কুরাইশ গোত্রের বনু আবদ শামস বংশের সদস্য।
উকবা ইবনে আবু মুয়াত | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ৬২৪ খ্রিস্টাব্দ |
মৃত্যুর কারণ | নবী মুহাম্মদ কর্তৃক মৃত্যুদণ্ড |
সমাধি | মক্কা |
জাতীয়তা | আরবী |
অন্যান্য নাম | আবু মুয়াত |
পরিবার
সম্পাদনাবংশপরিচয়
সম্পাদনাউকবা হলেন আবু মুয়াত ইবনে আবু আমর ইবনে উমাইয়া ইবনে আবদ শামস এবং বানু আমিরের শায়মা বিনতে আবদ-আল-উযযার ছেলে। আবু মু‘আতের মা ছিলেন বনু আমিরের খাবশা বিনতে আবদ-আল-মানাত। উকবার চাচী সাফিয়া বিনতে আবি আমর আবু সুফিয়ানকে বিয়ে করেছিলো।
সাংসারিক জীবন
সম্পাদনাতিনি আবদ শামস বংশের সদস্য এবং আফফান ইবনে আবু আল-আস -এর বিধবা স্ত্রী আরওয়া বিনতে কুরাইজকে বিয়ে করেছিলেন। উকবা ও আরওয়ার ছয়টি সন্তান ছিল: ওয়ালিদ, আম্মারা, খালিদ, উম্মে কুলসুম, উম্মে হাকিম এবং হিন্দ। তার সব সন্তানই মুসলমান হয়েছিল। [১]:১৬১
মুহাম্মদের বিরোধিতা করার ক্ষেত্রে উকবার ভূমিকা
সম্পাদনাউকবা ছিলেন মুহাম্মদের প্রতিবেশীদের একজন। তবুও একেশ্বরবাদ প্রচার করায় তিনি মুহাম্মদকে মৌখিক এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছিলেন।[২] পরে মক্কায় প্রচার করার সময় তিনি মুহাম্মদকে অবিরত বিদ্রূপও করতেন। একবার, মুহাম্মদ যখন কাবার আঙ্গিনায় নামাজ পড়ছিলো, তখন উকবা সেখানে জড়ো হওয়া অন্যান্য কুরাইশ নেতার পরামর্শে জবাই করা উটের (অন্ত্র, রক্ত, গোবর ইত্যাদি) বর্জ্য নিয়ে এসে তা সিজদায় থাকাকালীন মুহাম্মদের পিঠে রাখেন। ওজনের কারণে তিনি সে অবস্থানে থেকে গিয়েছিলেন এবং তাঁর মেয়ে এসে এটিকে অপসারণ না করা পর্যন্ত সেজদা থেকে মাথা তুলতে পারেননি।[৩] অন্য একটি অনুষ্ঠানে, উকবা তার বন্ধু উবে ইবনে খালাফকে প্ররোচিত করে মুহাম্মদের মুখে থুতু ফেলায়। ইসলামী ইতিহাস অনুসারে, কুরআনের আয়াত [কুরআন ২৫:২৯] মুহাম্মদের কাছে উকবা ও উবাই সম্পর্কে ঐ মুহুর্তেই অবতীর্ণ হয়েছিল।[৪]
মৃত্যু
সম্পাদনাসহীহ বুখারী এবং ইবনে সাদের জীবনীসংগঠনের বর্ণনা 'তাবকাত আল-কুবরা'র মতো অসংখ্য খাঁটি ও বিশ্বাসযোগ্য তথ্য অনুসারে, উকবা বদরের যুদ্ধের সময় যুদ্ধের ময়দানে মারা গিয়েছিলেন এবং কুরাইশ নেতাদের মধ্যে ছিলেন যাদের লাশ একটি গর্তে দাফন করা হয়েছিল।[৩][৫][৬] তবে ইবনে হিশামের জীবনী অনুসারে, মুহাম্মদের আদেশে উকবাকে বদরের যুদ্ধের পরে বন্দী হিসাবে আসিম বিন সাবিত মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেছিলেন।[৭][৮] মুসলিম পণ্ডিত সাফিউর রহমান আল-মোবারকপুরীর মতে, বদরের যুদ্ধের পরে নাদর বিন হারিস এবং ‘উকবা ইবনে আব মুয়াত নামে দুজন বন্দীকে আলি শিরশ্ছেদ করেছিল। মোবারকপুরী উল্লেখ করেছেন যে শিরশ্ছেদ করা সম্পর্কে এই ঘটনাটি সুনান আবু দাউদ নং ২৬৮৬ ও আনওয়াল মা'বুদ ৩/১২ তেও উল্লেখ করা হয়েছে।[৯]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Muhammad ibn Saad. Kitab al-Tabaqat al-Kabir Volume 8. Translated by Bewley, A. (1995). The Women of Madina. London: Ta-Ha Publishers.
- ↑ Sahih Bukhari: Volume 6, Book 60, Number 339
- ↑ ক খ Sahih Bukhari: Volume 1, Book 9, Number 499
- ↑ Ibn Ishaq, Sirat Rasul Allah (The Life of Muhammad), A. Guillaume, tr. (New York: Oxford University Press, 1980), pp. 164–165.
- ↑ Sahih Bukhari: Volume 1, Book 4, Number 241
- ↑ Al Tabaqat-al-Kubra, Muhammad Ibn Sa'd, Volume 2, p.260, ghazwatul Badr, Darul Ihya'it-Turathil-'Arabi, Beirut, Lebanon, First Edition, (1996)
- ↑ Ibn Ishaq, Sirat Rasul Allah (The Life of Muhammad), A. Guillaume, tr. (New York: Oxford University Press, 1980), p. 308.
- ↑ Gabriel Said Reynolds, The Emergence of Islam (Minneapolis: Fortress Press, 2012), p. 39.
- ↑ Mubarakpuri, The Sealed Nectar (Free Version)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], p. 129