ইসহাক কাজল
ইসহাক কাজল সাংবাদিক, লেখক, রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা। ২০১৩ সালে প্রবাসে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বাংলা একাডেমি প্রবাসী লেখক পুরস্কারে ভূষিত হন।[১][২] মোট ২১টি গ্রন্থ রচনা করেন তিনি।
ইসহাক কাজল | |
---|---|
জন্ম | ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার |
মৃত্যু | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ রমফোর্ড কুইন্স হাসপাতাল, গ্রেটার লন্ডন |
সমাধিস্থল | হেইনল্ট কবরস্থান, লন্ডন ৫১°৩৬′৩১″ উত্তর ০°০৭′০৯″ পূর্ব / ৫১.৬০৮৭০৫° উত্তর ০.১১৯২২৫° পূর্ব |
পেশা | সাংবাদিক ও লেখক |
নাগরিকত্ব | পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ব্রিটিশ |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | মদনমোহন কলেজ |
সাহিত্য আন্দোলন | মুক্তিযুদ্ধ |
উল্লেখযোগ্য রচনা | সিলেটের শিল্পী সাধক সংগ্রামী, বরাক উপত্যকার বাংলা ভাষা-আন্দোলনের ইতিহাস, মুক্তিযোদ্ধারা সংগ্রামে সংকটে |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | বাংলা একাডেমি প্রবাসী লেখক পুরস্কার-২০১৩ |
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাইসহাক কাজল ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ সালে সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের ব্রাহ্মণউষা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৃত আমজাদ উল্লাহ ও মাতা সায়রা বেগম। তিনি পতনঊষার বালক প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক, নয়াবাজার কৃষ্ণচন্দ্র উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও মদনমোহন কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
রাজনৈতিক ও কর্মজীবন
সম্পাদনাইসহাক কাজলের ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয়দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনসহ বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলনে ছিল সক্রিয় অংশগ্রহণ। তিনি রাজনৈতিক জীবনে স্বাধীনতা উত্তর সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের শ্রমসম্পাদক, সিলেট জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক, সিলেট জেলা শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি, সিলেট জেলা সংবাদপত্র হকার্স ইউনিয়ন ও সমবায় সমিতির সভাপতি, সিলেট জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, ওয়ার্কার্স পার্টি সিলেট জেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আন্দোলন, সিলেট বিভাগ আন্দোলনসহ নানা আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন। [৩]
১৯৭৮ সাল থেকে পেশাদার সাংবাদিকতা শুরু করেন। সিলেটের সিলেটকণ্ঠ, যুগভেরী, জালালাবাদ, নতুন কথা, সিলেট সমাচার, সাপ্তাহিক খবর, রানার, জালালাবাদীসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেছেন।[৩]
২০০০ সালে সপরিবারে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য লন্ডনে চলে যান। বিলাতের বাংলা সংবাদপত্র সাপ্তাহিক জনমতের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ও পরে পলিটিক্যাল এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিলাতে প্রকাশিত ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা তৃতীয় ধারার প্রধান সম্পাদক ছিলেন।[৪]
২০১৩ সালে প্রবাসে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বাংলা একাডেমি প্রবাসী লেখক পুরস্কারে ভূষিত হন।[১][২]
গ্রন্থ
সম্পাদনাইসহাক কাজল বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় ২১টি গ্রন্থ রচনা করেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে:[৫][৬]
- বাঙালি ও বাংলাদেশ
- একাত্তরের যোদ্ধারা
- মুক্তিযুদ্ধ রাজনীতি ও অন্যান্য
- জনক তুমি বাংলাদেশ
- বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ
- বঙ্গবীর জেনারেল ওসমানী
- সিলেটের শিল্পী সাধক সংগ্রামী
- বরাক উপত্যকার বাংলা ভাষা-আন্দোলনের ইতিহাস
- গল্পে গল্পে বঙ্গবন্ধু
- স্মৃতিতে মাহমুদ হক
- মুক্তিযোদ্ধারা সংগ্রামে সংকটে
- দিলওয়ার: পৃথিবী স্বদেশ যার
- কিশোরদের বঙ্গবন্ধু
- ক্ষমতায়ন ও বাংলাদেশ
- দ্য ওয়ার্কার্স মুভমেন্ট ইন দ্য সুরমা ভ্যালি
- মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন সংগ্রাম
- সুরমা উপত্যকার চা শ্রমিক আন্দোলনের অতীত ও বর্তমান
- বাংলাদেশের অমর মুক্তিযোদ্ধারা
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইত্যাদি।
মৃত্যু
সম্পাদনাইসহাক কাজল ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে গ্রেটার লন্ডনের রমফোর্ড কুইন্স হাসপাতালে ক্যানসারের চিকিৎসাধীন মৃত্যুবরণ করেন।[১][৪][৭]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ "সাংবাদিক ইসহাক কাজল আর নেই"। দৈনিক প্রথম আলো। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ "পতনঊষার ইউনিয়নে জন্মগ্রহনকারী প্রখ্যাত ব্যক্তিবর্গ"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ ক খ "গ্রামীণ সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎ ইসহাক কাজল"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৬।
- ↑ ক খ "প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক ইসহাক কাজল আর নেই"। দৈনিক মানব জমিন। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Ishaque Kajol Books: ইসহাক কাজল এর বই সমূহ | Rokomari.com"। www.rokomari.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৭।
- ↑ "ইসহাক কাজল এর বই সমূহ অনলাইনে কিনুন | বইবাজার.কম"। BoiBazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৬।
- ↑ "সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক কাজল আর নেই"। জাগো নিউজ। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০।