ইসমাঈল খাঁ মধ্যযুগীয় বাংলার একজন অভিজাত ছিলেন। তিনি ছিলেন বারো-ভুঁইয়াদের সরদার ঈশা খাঁর ছোট ভাই।[১]

ইসমাঈল খাঁ
জন্মসরাইল, ভাটি অঞ্চল, শাহী বাংলা
মৃত্যুশাহী বাংলা
রাজবংশসরাইলের দেওয়ান বংশ
পিতাসুলেমান খাঁ
মাতাসৈয়দা মোমেনা খাঁতুন
ধর্মইসলাম

জীবনী সম্পাদনা

ইসমাঈল খাঁ ষোড়শ শতকে বাংলার ভাটি অঞ্চলের সরাইলের দেওয়ান বংশ নামে পরিচিত এক অভিজাত বাঙ্গালী সুন্নি মুসলিম জমিদার খান্দানে পয়দা হন। তাঁর দাদা দেওয়ান ভগীরথ অযোধ্যার বৈস রাজপুত বংশের একজন ছিলেন এবং বাংলার সুলতান গিয়াসউদ্দীন মাহমূদ শাহের দেওয়ান হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার বাদে সরাইলে বসতি স্থাপন করেন। তার বাবা দেওয়ান সুলেমান খাঁ (পূর্বে কালিদাস গজদানী নামে পরিচিত) এই পদের উত্তরাধিকারী হন এবং সোনারগাঁর বিখ্যাত আলেম ইব্রাহীম দানিশমন্দ সাহেবের কাছে ইসলাম গ্রহণ করেন। ইসমাঈল খাঁর মা সৈয়দা মোমেনা খাঁতুন ছিলেন সুলতান মাহমূদ শাহের কন্যা।[২] তার খালা খিজির খাঁন সূরকের সাথে বিয়ে করেছিলেন।[৩] ইসমাঈল খাঁর বড় ভাই ছিলেন ঈশা খাঁ, যিনি পরবর্তীতে বাংলার শাসনকর্তা হন, এবং বোন ছিলেন শাহেনশাহ বিবি[৪]

ইসমাঈল খাঁর নানা, বাংলার সুলতান গিয়াসউদ্দীন মাহমূদ শাহ, ১৫৩৮ খ্রীষ্টাব্দে পাঠান সুলতান শের শাহ সূরীর কাছে পরাজিত হন, যার ফলে বাংলা সূরী সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশে পরিণত হয়। ১৫৪৫ খ্রীষ্টাব্দে ইসলাম শাহ সুরীর শাসনামলে, মুহম্মদ খাঁন সূরকে বাংলার আমিন হিসেবে নিযুক্ত করা হয় এবং এই অঞ্চলের বিদ্রোহী সর্দারদের তাড়ানোর জন্য দায়ী করা হয়। সরাইলের দেওয়ানরা সূরী কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রতিরোধ ছিল এবং ইসমাঈল খাঁর বাবাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তাজ খাঁ এবং দরিয়া খাঁর নেতৃত্বে একটি বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করা হয় এবং দেওয়ানদের কঠোর প্রতিরোধ সত্ত্বেও, ইসমাঈল খাঁর বাবা সুলাইমান শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষে নিহত হন। ইসমাঈল খাঁ এবং তার বড় ভাই ঈশা খাঁকে পরবর্তীতে বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তুরানের ইরানী ব্যবসায়ীদের কাছে ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি করা হয়।[৫]

১৫৬৩ খ্রীষ্টাব্দে কররানী রাজবংশ বাংলা ও বিহারের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ইসমাঈল খাঁর চাচা দেওয়ান কুতুব খাঁ সুলতান তাজ খান কররানীর দরবারে নিযুক্ত ছিলেন এবং সফলভাবে তার ভাতিজাদের সন্ধান করেছিলেন।[৫] কুতুব খাঁ তাদের মালিকদের সাথে মুদ্রা বিনিময় করে ইসমাঈল ও তার ভাইকে আজাদ করতে কামিয়াব হন।[৬]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Bhattasali, Nalini Kanta (১৯২৯)। "Bengal Chiefs' Struggle for independence in the reign of Akbar & Jahangir"Calcutta Historical Society: 33–34। 
  2. Islam in Bangladesh Through AgesIslamic Foundation Bangladesh। ১৯৯৫। পৃষ্ঠা 30। 
  3. Chowdhury, Kamal (২০০৫)। Banglar Baro Bhuiyan and Maharaj Pratapaditya। পৃষ্ঠা 164। 
  4. Abdul Karim (১৯৯১)। "Masnad-I-Ali Isa Khan"। Institute of Bangladesh Studies 
  5. Rashid, Haroon (২০০৮)। History of the Pathans: The Ghurghushti, Beitani and Matti tribes of Pathans। পৃষ্ঠা 342। 
  6. Islam, Zahurul (১৯৫২)। "A note on Isa Khan and his family": 331।