ইবেরীয় উপদ্বীপ
ইবেরীয় উপদ্বীপ হল ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম উপদ্বীপ। বলকান উপদ্বীপের পর এর অবস্থান। সাধারণভাবে একে ইবেরিয়া বলে ডাকা হয়। মহাদেশের একেবারে দক্ষিণপশ্চিম প্রান্তে এর অবস্থান। এর মোট আয়তন ৫,৮২,০০০ বর্গ কিমি (২,২৫,০০০ বর্গ মাইল)। উপদ্বীপটিতে তিনটি দেশ অবস্থিত। এগুলো হল, স্পেন, পর্তুগাল, এন্ডোরা। সেসাথে ফ্রান্সের কিছু অংশ এবং জিব্রাল্টারের ব্রিটিশ সমুদ্র অঞ্চল রয়েছে।
| |
---|---|
ভূগোল | |
অবস্থান | দক্ষিণ & পশ্চিম ইউরোপ |
স্থানাঙ্ক | ৪০° উত্তর ৪° পশ্চিম / ৪০° উত্তর ৪° পশ্চিম |
আয়তন | ৫,৮১,৪৭১.১ বর্গকিলোমিটার (২,২৪,৫০৭.২ বর্গমাইল) |
সর্বোচ্চ উচ্চতা | ৩,৪৭৮ মিটার (১১,৪১১ ফুট) |
সর্বোচ্চ বিন্দু | মুলহাচেন |
প্রশাসন | |
বৃহত্তর বসতি | এন্ডোরা লা ভেলা |
বৃহত্তর বসতি | জিব্রাল্টার |
বৃহত্তর বসতি | লিসবন |
বৃহত্তর বসতি | মাদ্রিদ |
বৃহত্তর বসতি | ফন্ট-রোমু-ওডিলো ভিয়া |
জনপরিসংখ্যান | |
বিশেষণ | ইবেরিয়ান |
জনসংখ্যা | ৫৭.২ নিযুত |
ভূগোল
সম্পাদনাইউরোপের তিনটি উপদ্বীপের মধ্যে (ইতালি, বলকান ও ইবেরিয়া) এটি সর্বাপেক্ষা পশ্চিমে অবস্থিত। এর সীমানা হল, দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্বে ভূমধ্যসাগর এবং উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণপশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর। উত্তরপূর্বে পিরেনিজ পর্বতমালা উপদ্বীপকে বাকি ইউরোপ থেকে পৃথক করে রেখেছে। উপদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্ত আফ্রিকার উত্তরপশ্চিম উপকূলের খুবই নিকটবর্তী এবং জিব্রাল্টার প্রণালী দ্বারা পৃথক হয়ে আছে।
নাম
সম্পাদনাগ্রিক নাম
সম্পাদনাইবেরিয়া শব্দটি প্রাচীন গ্রিক শব্দ Ιβηρία (ইবেরিয়া) থেকে এসেছে। রোমান সাম্রাজ্যের অধীন গ্রিক ভূগোলবিদরা এই অঞ্চলকে বোঝাতে এ শব্দ ব্যবহার করতেন।[১] এ সময় শব্দটি দ্বারা কোনো একক রাজনৈতিক সত্তা বা পৃথক জাতিসত্তা বোঝাতে ব্যবহার হত না।[২] স্ট্রাবোর বর্ণিত ইবেরিয়ার সীমানা হল পিরেনিস পর্বতমালাসহ সেটি থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমের (তিনি শুধু পশ্চিম বলে উল্লেখ করেন) পুরো ভূভাগ।
প্রাচীন গ্রীকরা পশ্চিমমুখী নৌচালনা করে ইবেরিয়ান উপদ্বীপ আবিষ্কার করে। হেকাটিয়াস ৫০০ খ্রিষ্টপূর্বে এই শব্দটি ব্যবহার করেন বলে জানা যায়।[৩] হেরোডোটাস ফোকাইয়ানদের ব্যাপারে বলেন যে “তারা প্রথম গ্রীকদের ইবেরিয়ার সাথে পরিচিত করায়।"[৪] স্ট্রাবোর মতে[৫] "Ἶβηρος (Ibēros)" ইবেরোসের এলাকা উত্তরে ফ্রান্সের রন নদী পর্যন্ত বিস্তৃত, কিন্তু বর্তমানে তারা পিরেনিজ পর্যন্ত এর সীমা ধরে”। পলিবিয়াস এ মতের সাথে যোগ করেন[৬] যে ইবেরিয়া ভূমধ্যসাগর থেকে জিব্রাল্টার পর্যন্ত বিস্তৃত। তিনি আটলান্টিক অংশের কোনো নাম দেননি। অন্যদিকে[৭] তিনি বলেন যে সাগুনটো হল ইবেরিয়া ও সেল্টিবেরিয়ার সংযোগকারী পাহাড়শ্রেণীর সমুদ্রোভিমুখী পাদদেশ।“
স্ট্রাবো কারেটানিয়ানদের পিরেনিজে বসবাসকারী ইবেরিয়ার জনগণ বলে উল্লেখ করেন যারা কেল্ট বা সেলটিবেরিয়ানদের থেকে পৃথক।[৮]
রোমান নাম
সম্পাদনারোমানদের গ্রিক ভূগোলবিদদের থেকে পৃথকভাবে ইবেরিয়া উচ্চারণ করত। তারা একে ইবেরি বলে ডাকত।[৯] সর্বপ্রথম ২০০ খ্রিষ্টপূর্বে কুইনটাস এনিয়াস এ শব্দ ব্যবহার করেন। রোমানদের ইতোমধ্যেই কার্থেজের সাথে বিরোধের সময় উপদ্বীপের মানুষদের ব্যাপারে অভিজ্ঞতা হয়েছিল। রোমান ভূগোলবিদ ও অন্যান্য লেখকরা পরবর্তী রোমান প্রজাতন্ত্রের সময় থেকে পুরো উপদ্বীপকে হিস্পানিয়া বলে উল্লেখ করতেন।
রোমানরা নিকট ও দূর স্পেনের জন্য হিস্পানিয়া থিতেরিওর ও হিস্পানিয়া উলতেরিওর শব্দদ্বয় ব্যবহার করা শুরু করে। এসময় এর বিশাল অংশকে লুসিতানিয়া (দোউরু নদীর পর্তুগালের দক্ষিণ অংশ এবং পশ্চিম স্পেনের এক্সট্রেমাডুরা), গালাসিয়া (উত্তর পর্তুগাল ও স্পেনের গালিসিয়া ), থেলতিবেরিয়া (মধ্য স্পেন), বায়টিকা (আন্দালুসিয়া), ক্যানটাবরিয়া (উত্তর পশ্চিম স্পেন) এবং ভাসকোনস (বাস্ক) বলা হত। স্ট্রাবো বলেন যে রোমানরা হিস্পানিয়া ও ইবেরিয়া শব্দদ্বয় নিকট ও দূর বোঝাতে প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহার করত। তিনি যেসময় জীবিত ছিলেন সেসময় উপদ্বীপটি দুটি প্রদেশে বিভক্ত ছিল। এর একভাগ হল বায়টিয়া যা সেনেট কর্তৃক তদারক করা হত, বাকি অংশ সম্রাটের পক্ষ থেকে পরিচালিত হত।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ First known use in that sense dates to 1618."Iberian"। Online Etymological Dictionary।
- ↑ Strabo। "Book III Chapter 1 Section 6"। Geographica।
And also the other Iberians use an alphabet, though not letters of one and the same character, for their speech is not one and the same.
- ↑ Strabo (MCMLXXXVIII)। The Geography (ancient Greek and English ভাষায়)। II। Cambridge: Bill Thayer। পৃষ্ঠা 118, Note 1 on 3.4.19। অজানা প্যারামিটার
|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ I.163.
- ↑ III.4.19.
- ↑ III.37.
- ↑ III.17.
- ↑ III.4.11.
- ↑ "Iberia, Iberi"। Félix Gaffiot's Dictionnaire Illustré Latin Français। Librairie Hachette। ১৯৩৪।