ইদ্রিস ইবনে হাসান
আবু ‘আউন ইদ্রিস ইবনে হাসান ইবনে আবু নুমায়ী (আরবি: أبو عون إدريس بن حسن بن أبي نمي) ১৬০৩ থেকে ১৬২৪ সাল পর্যন্ত মক্কার আমির এবং হেজাজের শাসক ছিলেন।
ইদ্রিস ইবনে হাসান | |
---|---|
মক্কার আমির | |
রাজত্ব | নভেম্বর ১৬০৩ – অক্টোবর ১৬২৪ |
পূর্বসূরি | আবু তালিব ইবনে হাসান |
উত্তরসূরি | মুহসিন ইবনে হুসাইন |
সহঃ আমির | |
জন্ম | মে/জুন ১৫৬৭ হেজাজ (বর্তমানে সৌদি আরব) |
মৃত্যু | জাবাল শামার (বর্তমানে হাইল অঞ্চল, সৌদি আরব) |
রাজবংশ | |
পিতা | হাসান ইবনে আবু নুমায়ী |
মাতা | হানা? বিনতে আহমাদ |
জীবনী
সম্পাদনাইদ্রিস ৯৭৪ হিজরিতে (মে/জুন ১৫৬৭) ধু আল-কিদাহতে জন্মগ্রহণ করেন। সে সময় তাঁর পিতা শরীফ হাসান এবং তাঁর দাদা শরীফ দ্বিতীয় মুহাম্মদ আবু নুমায়ী যৌথ শাসক ছিলেন। তাঁর মা হলেন হানা বা হায়া বিনতে আহমাদ ইবনে হুমায়দা। তাঁর কুনিয়াত হলো আবু আউন। [১][২]
রাজত্ব
সম্পাদনা১০১০ হিজরির জমাদিউস সানিতে (নভেম্বর, ১৬০১) তাঁর পিতার মৃত্যুর পর ইদ্রিস ইস্তাম্বুল গমন করেন এবং সেখানে কিছুকাল অবস্থান করেন। [৩] তিনি তার ভাই শরীফ আবু তালিব ইবনে হাসানের রাজত্বকালে হেজাজে ফিরে আসেন। ১০১২ হিজরির জমাদিউস সানিতে (নভেম্বর, ১৬০৩) আবু তালিব মারা যান এবং আশরাফ ইদ্রিসকে আমির হিসাবে নির্বাচিত করেন সাথে তার ভাই ফুহায়িদ ইবনে হাসান এবং তার ভ্রাতুষ্পুত্র মুহসিন ইবনে হুসাইনকে সহঃ-শাসক হিসেবে নিযুক্ত করেন। দু'জনেই ইদ্রিসের পাশাপাশি দু'আতে নিযুক্ত ছিলেন এবং আমিরাতের আয়ের এক-চতুর্থাংশ বরাদ্দ ছিল। সুলতান প্রথম আহমেদ সিদ্ধান্তটি অনুমোদন করেন এবং প্রথাগত খিলাহ (সম্মানজনক পোশাক) এবং ইস্তাম্বুল থেকে উপাধি-পত্র প্রেরণ করেন। ১১ ই সফর ১০১৩ হিজরিতে (৭ জুলাই ১৬০৪) বুধবার মসজিদ আল হারামে রাজকীয় ঘোষণাপত্রটি প্রচার করা হয়। [৪][১]
পরে ১০১৯ হিজরির রবিউস সানিতে (জুলাই ১৬১০) ইদ্রিস ও মুহসিন ফুহায়দকে পদচ্যুত করে মক্কা থেকে নির্বাসিত করেন। [৪][১]
পদচ্যুতি
সম্পাদনা১০৩৩ হিজরিতে (১৬২৪ খ্রিস্টাব্দ) ইদ্রিস ও মুহসিনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত মুহসিন আশরাফ, আলেম, ফকীহগণ এবং মক্কার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের নিকটে আহলে আল-হল ওয়াল-আকদ আহ্বান করেন এবং তারা ইদ্রিসকে দায়িত্ব থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেন। বৃহস্পতিবার ৪ মহররম ১০৩৪ হিজরিতে (১৬ অক্টোবর ১৬২৪) মুহসিনকে মক্কার একমাত্র আমির হিসাবে ঘোষণা করায় লড়াই শুরু হয়। সে রাতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হয় যার শর্তানুসারে ইদ্রিসকে কয়েক মাস মক্কায় অবস্থান করতে দেয়া হয়। শুক্রবার শরীফ মুহসিনের একক নামে খুতবা দেওয়া হয়। [৪][১]
নির্বাসন এবং মৃত্যু
সম্পাদনা১০৩৪ হিজরির সফর মাসে (নভেম্বর/ডিসেম্বর ১৬২৪) ইদ্রিস অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ১২ রবিউল আউয়াল (আনু. ২২ ডিসেম্বর) রাতে অসুস্থ্য অবস্থায় মক্কা ত্যাগ করেন। [৪] [১] বিভিন্ন উৎস অনুসারে তিনি ১৪ ই জমাদিউস সানি (আনু. ২৪ শে মার্চ ১৬২৫) বা ১৭ ই জমাদিউস সানি (আনু. ২৭ মার্চ) জাবাল শামার অঞ্চলে মারা যান এবং ইয়াতাবে তাকে সমাহিত করা হয়। রজব এর প্রথম দিকে (এপ্রিল) তাঁর মৃত্যুর সংবাদ মক্কায় পৌঁছে এবং মসজিদ আল হারামে তাঁর জন্য গায়েবানা জানাজা (অনুপস্থিতিতে জানাজার নামাজ) আদায় করা হয়। [৪][১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ al-Sinjārī 1998।
- ↑ al-‘Aṣimī 1998।
- ↑ Uzunçarşılı 2003।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ al-Ghāzī 2009।
উৎস
সম্পাদনা- আল-গাজী, ‘আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ (২০০৯)। ইফাদাত আল-আনাম إفادة الأنام (আরবি ভাষায়) (১ম সংস্করণ)। মক্তবাত আল-আসাদি।
- আল-সিনজারি, ‘আলী ইবনে তাজ আল-দিন ইবনে তাকি আল-দিন (১৯৯৮)। মানায়িহ আল-করম ফি আকবার মক্কা ওয়াল-বায়ত ওয়া ওলাত আল-হারাম منائح الكرم في أخبار مكة والبيت وولاة الحرم (আরবি ভাষায়) (১ম সংস্করণ)। জামি‘আত উম্মুল কুরআন।
- আল-আসিমি, ‘আবদ আল-মালিক ইবনে হুসাইন (১৯৯৮)। সামত আল-নুজাম আল-আওয়ালি ফি আন্বা আল-আওয়াইল ওয়া-আল-তাওয়ালি سمط النجوم العوالي في أنباء الأوائل والتوالي (আরবি ভাষায়)। দার আল-কুতুব আল-ইলমিয়াহ।
- উজুনকারসিলি, ইসমাইল হাক্কি (২০০৩)। আশরাফ মাকাত আল-মুকাররামা ওয়া উমরাইহা ফি আল-আহাদ আল-উসমানী أشراف مكة المكرمة وأمرائها في العهد العثماني (আরবি ভাষায়) (১ম সংস্করণ)। আল-দার আল-‘আরাবিয়া লিল-মাওসোয়াত।
- হিকাজ বিলায়েতি সালনামেসি حجاز ولايتى سالنامهسى (উসমানীয় তুর্কি ভাষায়) (৫ম সংস্করণ)। বিলায়েত মাতবাসি [বিলায়েত প্রিন্টিং হাউস]। ১৮৯২। পৃষ্ঠা ১১৭।
- দ্য জাম্বৌর, ই. (১৯২৭)। ম্যানুয়েল দ্য জেনোলোজি এট দ্য ক্রোনোলজি পিউর আল'হিস্টোরি ডি আল'ইসলাম (ফরাসি ভাষায়)। হেইঞ্জ লাফায়ার। পৃষ্ঠা ২২।