আহোম ভাষা

অসমে বসবাস করা আহোম জাতির লোকের মধ্যে প্রচলিত একটি মৃতপ্রায় ভাষা

আহোম ভাষা (অসমীয়া: আহোম ভাষা) অসমে বসবাস করা আহোম জাতির লোকের মধ্যে প্রচলিত একটি মৃতপ্রায় ভাষা। শ্যান ও খামটি ভাষার সহিত এই ভাষার নিকটতম সাদৃশ্য ও থাই ভাষার সহিত কিছু মিল দেখা যায়। অসমে আহোম শাসকেরা বৃহত্তর অসমীয়া জাতির সহিত মিলিত হওয়ার ফলে ১৯শতকে অসমে আহোম ভাষার পরিবর্তে অসমীয়া ভাষা কথিত ভাষার স্থান দখল করে। ২০০০ সনের হিসাব মতে প্রায় ২০০ আহোম পুরোহিত সম্প্রদায় অসমীয়া ভাষা জানেন কিন্তু পরাম্পরাগত অনুষ্ঠানেই কেবল আহোম ভাষার ব্যবহার করেন। বর্তমান কথিত রূপে আহোম ভাষার প্রচলন নাই যদিও বর-অম্র নামক আহোম-অসমীয়া অভিধানে আহোম সাম্রাজ্যে ব্যবহৃত আহোম ভাষার রূপটি সংরক্ষিত অবস্থায় আছে।

আহোম
দেশোদ্ভবভারত
অঞ্চলঅসম
জাতিআহোম জাতি
মাতৃভাষী

ধর্মীয় কার্যে ব্যবহার
কড়াই
  • টাই
    • দক্ষিণ-পশ্চিম (থাই)
      • উত্তর-পশ্চিম
        • আহোম
আহোম লিপি
ভাষা কোডসমূহ
আইএসও ৬৩৯-৩aho
গ্লোটোলগahom1240[১]

বৈশিষ্টসমূহ সম্পাদনা

আধুনিক প্রচলিত টাই ভাষা যেমন শ্যান, খামটি, আইটন ইত্যাদির সহিত আহোম ভাষার মিল আছে। আহোম ভাষার নিজস্ব লিপি আছে[২] ও অন্যান্য টাই ভাষার মত এই ভাষারও কিছু কিছু বৈশিষ্ট আছে।

  • বাক্যবিন্যাস সাধারনত কর্ত্তা ক্রিয়া কর্ম/ কর্ত্তা কর্ম ক্রিয়া ইত্যাদি[৩][৪]
  • স্বর[৩][৪][৫]
  • উচ্চারণ অনুযায়ী একটা শব্দের বিভিন্ন অর্থ হয়[৩][৪][৫][৬]
  • বিশ্লেষণাত্মক বাক্য রচনা[৪]

ইতিহাস সম্পাদনা

টাই-কড়াই পরিবারের অন্তর্গত)[৪] কাম-টাই-ঠালের[৬] ২০০০ বৎসর পুরোনো প্রোটো-টাই ভাষা[৫][৬] থেকে আহোম ভাষার উৎপত্তি হয়েছে। অবশ্যে কিছু লোকের মতে টাই ভাষাসমূহ ভিন্ন পরিবারের যা টাই-কড়াইয়ের অংশ নয়[৫]। আহোম জাতি ও আহোম ভাষার মুল স্থান হচ্ছে বৃহত্তম চীনের ইউনান অঞ্চল। তাঁরা উত্তরে ভিয়েতনাম ও গুয়েংজি প্রদেশের সীমান্ত থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অববাহিকায় ও ম্যানমারে পরিব্রাজন করেছিল। আহোম রাজত্বকালে অসমের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় কথিত রূপে আহোম ভাষার ব্যবহার ছিল[৩]। ১৫-১৬ শতিকায় আহোম রাজসভায় কেবল আহোম ভাষার প্রচলন ছিল। পরবর্তী সময়ে অসমীয়া ভাষায় রাজসভায় স্থান পায়[৬] । বর্তমানে আহোমেরা পারম্পিক অণুষ্ঠান ও উৎসবে আহোম ভাষার ব্যবহার করেন।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "Ahom"গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট। 
  2. আহোম প্রাইমার। বুরঞ্জী আরু পুরাতত্ব বিভাগ, অসম চরকার। ২০১০। পৃষ্ঠা ১০। 
  3. Diller, A. (1993). Tai Languages. In International Encyclopedia of Linguistics (Vol. 4, pp. 128-131). Oxford, UK: Oxford University Press.
  4. Blake, B. J. (1994). Language Classification. In The Encyclopedia of Language and Linguistics (Vol. 4, pp. 1952-1957). New York, NY: Pergamon Press Press.
  5. French, M. A. (1994). Tai Languages. In The Encyclopedia of Language and Linguistics (Vol. 4, pp. 4520-4521). New York, NY: Pergamon Press Press.
  6. Hongladarom, K. (2005). Thai and Tai Languages. In Encyclopedia of linguistics (Vol. 2, pp. 1098-1101). New York, NY: Fitzroy Dearborn.