আহমেদুর রহমান

বীর মুক্তিযোদ্ধা

আহমেদুর রহমান (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১৮ জুন, ২০০৬) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।[১]

আহমেদুর রহমান
মৃত্যু১৮ জুন, ২০০৬
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক

জন্ম ও শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

আহমেদুর রহমানের জন্ম চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম কধুরখিল গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুল আলী এবং মায়ের নাম আমাতুন নূর বেগম। তার স্ত্রীর নাম হোসনে আরা বেগম। তার দুই ছেলে ও সাত মেয়ে। [২]

কর্মজীবন সম্পাদনা

ইপিআরে চাকরি করতেন আহমেদুর রহমান। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন যশোর ইপিআর সেক্টরের অধীনে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে যুদ্ধে যোগ দেন। ইপিআরের ৪ উইংয়ের সৈনিক হিসেবে চুয়াডাঙ্গা জেলার সীমান্তবর্তী যাদবপুরে কর্মরত ছিলেন আহমেদুর রহমান। ২৭ মার্চ এ ক্যাম্প পরিদর্শনে আসেন অবাঙালি অফিসার ক্যাপ্টেন সাদেক। ক্যাম্পে বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত লাল সবুজ পতাকা দেখে তিনি সৈনিকসহ অন্যান্যদের খুব বকাবকি করেন। এতে প্রতিবাদ করায় সেখানে সিপাহি আশরাফকে ক্যাপ্টেন সাদেক সঙ্গে সঙ্গে গুলি করেন। পরবর্তীতে কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন সুবেদার মজিদ মোল্লার নির্দেশে আহমেদুর রহমানসহ ক্যাপ্টেন সাদেককে লক্ষ্য করে গুলি করেন। সঙ্গে সঙ্গে মারা যান ক্যাপ্টেন সাদেক।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা সম্পাদনা

১৯৭১ সালের ৩ অক্টোবর যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার অন্তর্গত বরণী এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা খবর পেলেন পাকবাহিনী সেখানে ঘাঁটি গেড়েছে। খবর পাওয়া মাত্রই মুক্তিযোদ্ধারা বরণীর উদ্দেশে রওনা দেন। তখন এ দলের কমান্ডার ছিলেন নাজমুল হুদা (বীর বিক্রম)। মুক্তিযোদ্ধারা সেখানে ভোর তিনটার সময় অ্যামবুশ করেন। তারপর কমান্ডারের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। নির্দেশ পাওয়ার পর সকাল ৬টায় আক্রমণ শুরু করেন মুক্তিযোদ্ধারা। শত্রুদের পক্ষ থেকেও গুলি আসতে থাকে। হঠাৎ আক্রমণে শত্রুরা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে। ৩০ জনের মতো মুক্তিযোদ্ধা ছিল সেখানে কিন্তু শত্রু ছিল অনেক। আড়াই ঘণ্টার মতো যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে আহমেদুর রহমান আহত হন। গোলার টুকরা তার ঊরুতে লাগে। আহত হওয়া সত্ত্বেও তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যান। পাকিস্তানি সেনা যেহেতু সংখ্যায় অনেক বেশি, তারা চারদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘিরে ফেলার চেষ্টা করে। আহমেদুর রহমানসহ একদল মুক্তিযোদ্ধা গভীর রাতে ভারত থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশের ভেতরে আসেন। তারা সীমান্তসংলগ্ন এক গ্রামে ফাঁদ পাতলেন। তারপর তারা অপেক্ষা করতে থাকলেন পাকিস্তানি সেনাদের জন্য। আক্রমণ শুরুর পর প্রচণ্ড পাল্টা আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা বেশ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যান। আহমেদুর রহমানসহ কয়েকজন মনোবল ও সাহস হারালেন না। বীরত্বের সঙ্গে পাকিস্তানিদের আক্রমণ মোকাবিলা করতে থাকলেন। তাঁদের বীরত্ব ও সাহসে উজ্জীবিত হলেন সহযোদ্ধারা। [৩]

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ২২-০২-২০১২[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৪৭১। আইএসবিএন 9789843351449 
  3. একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা (দ্বিতীয় খন্ড)। ঢাকা: প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা পৃ ২০৩। আইএসবিএন 9789849025375 

বহি:সংযোগ সম্পাদনা