আরিফ বাট (উর্দু: عارف بٹ‎‎; জন্ম: ১৭ মে, ১৯৪৪ - মৃত্যু: ১১ জুলাই, ২০০৭) পাঞ্জাবের লাহোরে জন্মগ্রহণকারী বিশিষ্ট পাকিস্তানি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৫ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

আরিফ বাট
সংগৃহীত স্থিরচিত্রে আরিফ বাট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামআরিফ বাট
জন্ম(১৯৪৪-০৫-১৭)১৭ মে ১৯৪৪
লাহোর, পাঞ্জাব, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমানে - পাকিস্তান)
মৃত্যু১১ জুলাই ২০০৭(2007-07-11) (বয়স ৬৩)
লাহোর, পাকিস্তান
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪৭)
৪ ডিসেম্বর ১৯৬৪ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট২৯ জানুয়ারি ১৯৬৫ বনাম নিউজিল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৯৭
রানের সংখ্যা ৫৯ ৪০১৭
ব্যাটিং গড় ১১.৮০ ২৯.১০
১০০/৫০ –/– ৪/২২
সর্বোচ্চ রান ২০ ১৮০
বল করেছে ৬৬৬ ১১৮৭৯
উইকেট ১৪ ২০১
বোলিং গড় ২০.৫৭ ২৬.৭৯
ইনিংসে ৫ উইকেট ১০
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৬/৮৯ ৮/৪৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং –/– ৪৪/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৩ নভেম্বর ২০১৬

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানি ক্রিকেটে লাহোরের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। এছাড়াও, নিচেরসারির কার্যকরী ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবেও তার সুনাম ছিল।

ঘরোয়া ক্রিকেট সম্পাদনা

তার চাচা খাজা আব্দুর রব তাকে প্রশিক্ষণ দিতেন। এ সময়ে লাহোরের ফ্রেন্ডস ক্রিকেট ক্লাবের সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৬০-৬১ মৌসুমে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে ১৬ বছর বয়সে তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। এরপর ১৯৬২-৬৩ মৌসুম থেকে অবসর নেয়ার পূর্ব-পর্যন্ত ১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে পাকিস্তান রেলওয়েজের পক্ষে খেলেন।

১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে কায়েদ-ই-আজম ট্রফির ফাইনালে করাচির বিপক্ষে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করেন। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে রেলওয়েজের অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে প্যাট্রন্স ট্রফি ও কায়েদ-ই-আজম ট্রফির শিরোপা জয়ে ভূমিকা রাখেন। কায়েদ ফাইনালে সিন্ধুর বিপক্ষে ৬/৫৫ পান ও ঐ মৌসুমে ৭১৮ রান তোলেন। তন্মধ্যে পাঞ্জাবের বিপক্ষে ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমে সর্বোচ্চ ১৮০ রান তোলেন। ১৯৭২-৭৩ মৌসুমে সারগোদার বিপক্ষে নিজস্ব সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৮/৪৫ লাভ করেন।

টেস্ট ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে মেলবোর্নে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক হয়। প্রথম ইনিংসেই তিনি ৬/৮৯ লাভ করেন।[১] এরফলে প্রথম পাকিস্তানি হিসেবে টেস্ট অভিষেকে পাঁচ-উইকেট লাভের গৌরবগাঁথা রচনা করেন আরিফ বাট। এছাড়াও, আঘাতপ্রাপ্ত উইকেট-রক্ষক আবদুল কাদিরের পরিবর্তে দ্বিতীয় ইনিংসে দলের ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন। প্রায় এক ঘণ্টা নতুন বলের অস্ট্রেলীয় বোলিং আক্রমণ রুখে ১২ রান তোলেন।[২] এরপর নিউজিল্যান্ড সফরে যান। তিন টেস্ট সিরিজের প্রথম দুইটিতে অংশ নিয়ে ২৪.২৮ গড়ে ৭ উইকেট তুলেন। শেষ টেস্ট ইনিংসে ইন্তিখাব আলমের সাথে নবম উইকেট জুটিতে মূল্যবান ৫২ রান তুল দলকে ড্রয়ের দিকে নিয়ে যেতে প্রভূতঃ সহায়তা করেন।

বাউন্সার ও লেগ কাটারের সমন্বয়ে নিজের বোলিংকে সমৃদ্ধ করেছেন। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি কেবলমাত্র তিন টেস্ট খেলার সুযোগ পান। ঐ সময় পাকিস্তান দলে কার্যকরী ফাস্ট বোলার ছিল না। ১৯৬৭ সালে ইংল্যান্ড সফরে গেলেও পুরোপুরি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হন।[৩] নয় খেলায় অংশ নিয়ে ৫৪.৫০ গড়ে ১২ উইকেট তুলেন।

 
সংগৃহীত স্থিরচিত্রে আরিফ বাট

দেহাবসান সম্পাদনা

হৃদযন্ত্র ক্রীয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১১ জুলাই, ২০০৭ তারিখে আরিফ বাটের দেহাবসান ঘটে। এরপূর্বে ডায়াবেটিসের কারণে ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছিলেন। লাহোরে তার শবানুষ্ঠান হয়। এতে সরফরাজ নওয়াজসহ সাবেক ক্রিকেটার ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।[৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Six wickets on Test debut"। ১ এপ্রিল ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৮ 
  2. Australia v Pakistan, Melbourne 1964-65
  3. Wisden 2008, p. 1548.
  4. "Archived copy"। ২০০৭-০৯-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৭-১৭ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা