আরাগনের প্রথম জেমস

আরাগনের রাজা

সম্রাট প্রথম জেমস (কাতালান: Jaume el Conqueridor, আরাগণীয়: Chaime lo Conqueridor, স্প্যানিশ: Jaime el Conquistador, ওসিটান: Jacme lo Conquistaire; ২ ফেব্রুয়ারি ১২০৮ - ২৭ জুলাই ১২৭৬) ১২১৩-১২৭৬ সাল পর্যন্ত ছিলেন বার্সেলোনার কাউন্ট, আরাগণের রাজা, ভ্যালেন্সিয়ার রাজাম্যাজোর্কার রাজা, মন্টপিলার-এর লর্ড। তার লম্বা শাসন বার্সেলোনা প্রাসাদকে সবদিকেই প্রসারিত করেঃ দক্ষিণে ভ্যালেন্সিয়া, উত্তরে ল্যাংকুয়েডক এবং পূর্বে ব্যালেরিক দ্বীপ পর্যন্তই তিনি তার রাজ্যকে প্রসারিত করেন। ফ্রান্সের নবম লুইস ও তার মধ্যকার চুক্তির মাধ্যমে তিনি নামেমাত্র ফরাসি শাসনাধীনে থেকে বার্সেলোনা এর কাউন্টিকে নিজের রাজ্যভুক্ত করেন। তার অংশের পুনর্বিজয় ছিল মধ্যযুগীয় স্পেনের ন্যায়, যা শাসন করতেন অ্যান্ডালুসার ক্যাস্টিলের তৃতীয় ফার্দিনান্দ

প্রথম জেমস
বার্সেলোনার কাউন্ট, আরাগণ, ভ্যালেন্সিয়া ও ম্যাজোর্কার রাজা, মন্টপিলার-এর লর্ড
আরাগণের রাজা
রাজত্ব১২ই সেপ্টেম্বর ১২১৩ - ২৭শে জুলাই ১২৭৬
পূর্বসূরিদ্বিতীয় পিটার
উত্তরসূরিতৃতীয় পিটার
ভ্যালেন্সিয়ার রাজা
রাজত্ব২৮শে সেপ্টেম্নর ১২৩৮ - ২৭শে জুলাই ১২৭৬
পূর্বসূরিনতুন পদবী
উত্তরসূরিপ্রথম পিটার
ম্যাজোর্কার রাজা
রাজত্ব৫ই সেপ্টেম্বর ১২৩১ - ২৭শে জুলাই ১২৭৬
পূর্বসূরিনতুন পদবী
উত্তরসূরিপ্রথম পিটার
জন্ম(১২০৮-০২-০২)২ ফেব্রুয়ারি ১২০৮
মন্টেপিলার
মৃত্যু২৭ জুলাই ১২৭৬(1276-07-27) (বয়স ৬৮)
ভ্যালেন্সিয়া
সমাধি
দাম্পত্য সঙ্গীক্যাস্টিলের এলিয়ানর
হাঙ্গেরির ভায়োলান্ট
তেরেসা গিল দ্য ভিডার
বংশধর
অন্যান্যদের মধ্যে...
ভায়োলান্ট, ক্যাস্টিলের রাণী
আরাগণের কনস্ট্যান্স, ভিলেনার লেডি
আরাগণের তৃতীয় পিটার
ম্যাজোর্কার দ্বিতীয় জেমস
ইসাবেলা, ফ্রান্সের রাণী
রাজবংশবার্সেলোনার প্রাসাদ
পিতাআরাগণের দ্বিতীয় পিটার
মাতামন্টেপিলারের মারিয়া
ধর্মরোমান ক্যাথলিজম

একজন বিধানকর্তা ও সংগঠক হিসেনে তিনি অন্যান্য স্প্যানিশ রাজাদের মধ্যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রয়েছেন, তিনি লিব্রে দেল কনসুলেট দ্য মার[১]-এর সংকলন শেষ করেন যা সামুদ্রিক বাণিজ্যকে সহায়তা করেন এবং পশ্চিমা মধ্যযুগে কাতালান সার্বভৌমত্ব স্থাপনে অবদান রাখেন। কাতালান সাহিত্যর কদর করে এবং তার অঞ্চলের আপাতদৃষ্টিতে আত্মজীবনীমূলক ক্রনিকল লিব্রে দেলস ফেৎস লিখে তিনি কাতালান ভাষার উন্নয়নেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

প্রথম জীবন ও সংখ্যাগরিষ্ঠপূর্ব রাজত্ব সম্পাদনা

মন্টেপিলারের অষ্টম উইলিয়ামইউডোকিয়া কোমেনের উত্তরাধিকারী, আরাগণের দ্বিতীয় পিটারমন্টেপিলারের মারিয়ার একমাত্র সন্তান জেমস মন্টেপিলারে জন্মগ্রহণ করেন। শিশু হিসেবে জেমস ছিল প্রোঁভেস-এর শক্তিশালী রাজনীতির এক গুটি। তখন তার পিতা লেইস্টারের পঞ্চম আর্লের নেতৃত্বে আলবিজেনিস্তান ধর্মযুদ্ধকারীদের বিরুদ্ধে আলবির পাষণ্ড ক্যাথারদের সাহায্য করার জন্য পরিশ্রম করছিলেন। ধর্মযুদ্ধকারীরা চাচ্ছিলত তাকে উপড়ে ফেলতে। পিটার উত্তরের ধর্মযুদ্ধকারীদের শান্ত করার জন্য তার সন্তান জেমসের সাথে সাইমনের কন্যার বিয়ে দেন। তিনি ১২১১ সালে মন্টফোর্টে তার সন্তানের শিক্ষার ব্যবস্থা করার বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন, তবে এর পরপরই তার বিরুদ্ধে অস্ত্র উত্থাপনে বাধ্য হন এবং ১২ই সেপ্টেম্বর, ১২১১ সালের মুরেটের যুদ্ধে মারা যান। মন্টফোর্ট ইচ্ছা করেই জেমসকে তার নিজের শক্তি ব্যাপ্ত করবার এক উপায় হিসেবে ব্যবহার করেন এবং আরাগণীয়দের পোপ তৃতীয় ইনোসেন্টের কাছে কোনরূপ অভিযোগ দাখিল করতে দিতেন না। পোপই মন্টফোর্টকে আত্মসমর্পণের বাধ্য করেন। ১২১৪ সালের মে বা জুনে কারাকাসোনেতে তাকে বেনেভেন্টোর পিটার নামক পোপসংক্রান্ত রাজদূতের হাতে হস্তান্তর করা হয়।

এরপর জেমসকে মনজনে পাঠানো হয় যেখানে তিনি স্পেনপ্রোভেঁসে গিলিয়াম দ্য মন্টরেডো, নাইট সঙ্ঘের প্রধানের কাছে থাকেন। ইতোমধ্যেই রাজপ্রতিনিধিত্ব তার বড় চাচা রৌসেলিনের কাউন্ট স্যাঞ্চো ও তার ছেলে, রাজার চাচাতো ভাই নুনোর হাতে যায়। যতদিন না ১২১৭ সালে কতিপয় সঙ্ঘের সভ্য ও মহান ব্যক্তি তরুণ রাজাকে জারাগোজায় নিয়ে আসেন, ততদিন রাজ্য নিয়ে এই সংশয় চলতেই থাকে।[২]

জেমস প্রথমে ১২২১ সালে ক্যাস্টিলের অষ্টম আলফোনসোইংল্যান্ডের এলিয়ানর-এর কন্যা এলিয়ানরকে বিয়ে করেন। এর পরের ছয়বছরের শাসন ছিল মহাত্মনদের বিদ্রোহে ভরা। ৩১শে মার্চ, ১২২৭ সালে এলাইসের শান্তিচুক্তির মাধ্যমে মহাত্মন ও রাজা মধ্যস্থতায় আসেন।[২]

আর্জেল-এর প্রশাসনিক অধিগ্রহণ সম্পাদনা

১২২৮ সালে জেমস সামন্তবাদীদের দিক থেকে কঠোর বিরোধের সম্মুখীন হয়। চতুর্থ দ্য গুয়েরাউ ক্যাবেরা অষ্টম আরমেঙ্গলের উত্তরাধিকারিণী অরিমবিয়াক্স-এর বিরুদ্ধে গিয়ে আর্জেল রাষ্ট্রলাভ করেন। ১২০৮ সালে অষ্টম আরমেঙ্গল কোন পুত্রসন্তান ছাড়াই মারা যান। যদিও অরিমবিয়াক্সের মা এলভিরা নিজেকে জেমসের পিতার প্রডিজি দাবি করেন, ১২২০ সালে তার মৃত্যুর পর গুয়েরাউ দেশটির অধিকার নিয়ে নেয় এবং অরিমবিয়াক্সকে বাস্তুচ্যুত এই বলে যে কোন নারী উত্তরাধিকারী হতে পারে না।

জেমস অরিমবিয়াক্সের পক্ষ নিয়ে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। তিনি গুয়েরাউকে সিংহাসন থেকে সরিয়ে অরিমবিয়াক্সকে বসান এবং তাকে শাসন চালিয়ে যেতে বলেন, যিনি লিয়েডায় মারা যান। সম্ভবত, তিনি জেমসের প্রথমদিককার উপপত্নী ছিলেন।[৩] তিনি জেমসের কাছে লিয়েডাকে সমর্পণ করেন এবং তার পক্ষ নিয়ে আর্জেল শাসন করতে সম্মত হন। ১২৩১ সালে তার মৃত্যুর পর জেমস বিপত্নীক পর্তুগালের পিটার-এর জন্য আর্জেলের সাথে ব্যালেরিক দ্বীপের অদল-বদল করেন।

ফ্রান্স এবং ন্যাভেরার সঙ্গে সম্পর্ক সম্পাদনা

১২৩০ থেকে ১২৩২ সালের মধ্যে জেমস ন্যাভেরার সপ্তম স্যাঞ্চোর সাথে মধ্যস্থতা করেন, যিনি তার ভাগ্নে এবং নিকটতম জীবিত পুরুষাত্মীয় চ্যামপাগ্নের চতুর্থ থিওবাল্ড-এর বিপক্ষে তার সাহায্য কামনা করেছিলেন। জেমস ও স্যাঞ্চো একটি চুক্তি করেন তবে জেমস বৃদ্ধ স্যাঞ্চোর মৃত্যুর পর ন্যাভেরা অধিগ্রহণ করে নেন, তবে তা ঘটতে ঘটতে ন্যাভেরার মহাত্মনেরা থিওবাল্ডকে সিংহাসনে চড়ান (১২৩৪) এবং জেমস তার সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটিতে পোপ নবম গ্রেগরির হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়েছিল।[৪] শেষে জেমস থিওবাল্ডের শাসন মেনে নেন।

জেমস পিয়েরেনেসের চতুর্দিকে একটি রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত নেন যেন ফ্রান্সের উত্তর লোয়রা শাসনের দিক থেকে ভারসাম্যপূর্ণ হয়। তবে এই নীতি নানাবিধ শারীরিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক বাঁধার সম্মুখীন হয়। ন্যাভেরার ন্যায় তিনি বিপজ্জনক ইভেন্টের মধ্যে আরম্ভ করতে অস্বীকার করেন। মে, ১২৫৮ সালে সাক্ষরকৃত করবেলের চুক্তির মাধ্যমে ফ্রান্সের নবম লুইসের সাথে তার দীর্ঘদিনের ঝামেলার অবসান ঘটে এবং ফরাসি দাবির আত্মত্যাগকে সুরক্ষিত করে ফ্রান্স কাতালোনিয়ার ওপর সার্বভৌমত্বের দাবি করে।[৫]

পুনর্বিজয় সম্পাদনা

পারস্পরিক গ্রহণের মাধ্যমে ন্যাভেরার সাম্রাজ্যর সাথে আরাগনকে একত্রিত করার শুরুটাই ভুলভাবে ঘটে যাবার পর জেমস দক্ষিণ এবং ভূমধ্যসাগরের দিকে তাকান, যেখানে তিনি ৩১শে ডিসেম্বর ১২২৯ সালে ম্যাজোর্কাব্যালেরিক দ্বীপের অবশিষ্টাংশ অধিগ্রহণ করেন। যদিও রাজার প্রতি দায়বদ্ধ হওয়ায়ই আরাগণীয় সৈনিকেরা যুদ্ধে যোগদান করেন, ম্যাজোর্কার পুনর্বিজয় মূলত কাতালান অধিগ্রহণেরই নামান্তর ছিল (কাতালানেরা পরবর্তীতে ম্যাজোর্কার সংখ্যাগুরু হয়ে যায়)। ৫ই সেপ্টেম্বর, ১২২৯ সালে আরাগণের সৈনিকেরা ১৫৫টি জাহাজ, ১৫০০টি ঘোড়সওয়ারী এবং ১৫, ০০০ সৈনিক মিলে তারাগোনা, সালোউ, এবং ক্যাম্বরিলস থেকে যাত্রা শুরু করে[৬] আবু ইয়াহিয়া (দ্বীপটির আধা-স্বাধীন আলমোহাদ গভর্নর) থেকে ম্যাজোর্কা জয় করতে।

১২৩২ সালে মিনোর্কা এবং ১২৩৫ সালে ইবিজার পুনর্বিজয়ের সময় এই কাজ করা হয়েছিল। ভ্যালেন্সিয়া ২৮শে সেপ্টেম্বর ১২৩৮ সালে [৫] বুরিয়ানার সিয়েজ এবং নিষ্পত্তিমূলক পুইগের যুদ্ধ, (যেখানে আরাগণীয় কমান্ডার ও রাজার চাচাতো ভাই, বার্নার্ডো গুইলিয়ার্মো দ্য এনতেঞ্জা আহতাবস্থায় মারা যান) এর পর আরাগণের নিকট আত্মসমর্পণ করে। বিভিন্ন নথিপত্র থেকে বোঝা যায় যে মুসেরোস-এর দুর্গে গানপাউডার ব্যবহৃত হয়েছিল।

করবেলের তার বাকি দুই দশক সময় জেমস তার জামাই ক্যাস্টিলের দশম আলফোনসোর পক্ষে মুর্সিয়ায় মুরদের সাথে যুদ্ধ করেন। ২৬শে মার্চ, ১২৪৪ সালে এ দুই রাজা আলমিজরার চুক্তিতে সাক্ষর করেন আন্ডালুসায় তাদের নিজেদের অঞ্চল চিহ্নিত করার জন্য এবং দীর্ঘদিনের ঝগড়া বন্ধ করার জন্য। জেমস সময়মত চুক্তিসাক্ষর করলেও আলফোনসো এটা দীর্ঘদিন মানেন না। চুক্তি অনুসারে বায়ার থেকে ভিলাজোয়োসা পর্যন্ত (বাস্কট অন্তর্ভুক্ত) দক্ষিণের সীমান্ত থাকবে ক্যাস্টিলের অধীনে।

১২৬৯ সালের ধর্মযুদ্ধ সম্পাদনা

দ্য খান অফ টারাটারি (প্রকৃতপক্ষে ইলখান) আবাকা জেমসের সাথে ১২৬৭ সালের প্রথম দিকে মঙ্গলবাহিনীর সাথে যুক্ত হয়ে ধর্মযুদ্ধ করতে বলেন।[৭] জেমস আবাকায় জাইম আলারিক দ্য পের্পিজ্ঞান নামক এক রাষ্ট্রদূতকে পাঠান যিনি ১২৬৯ সালে মঙ্গল দূতাবাস সাথে নিয়ে আসেন।[৮] পোপ চতুর্থ ক্লিমেন্ট জেমসকে উপ-সমাবস্থার চরিত্রের কথা স্মরণ করে ধর্মযুদ্ধ থেকে নিবৃত্ত করা চেষ্টা করেন। দশম আলফোনসোও একই চেষ্টা করেন। তবু জেমস, যিনি তখন মুর্সিয়াতে প্রচারণার কাজ করছিলেন, গ্রানাডার সুলতান মোহাম্মদ ই ইবনে নাসের-এর সাথে শান্তি আনয়ন করেন এবং ধর্মযুদ্ধের অর্থসংগ্রহ শুরু করেন। সেপ্টেম্বর, ১২৬৯ সালে বার্সেলোনাতে তার অনুপস্থিতি ও দ্রুত একত্রিকরণের ব্যবস্থা করে তিনি পূর্বের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। প্রেমমূলক গীতিকার অলিভিয়ার লো টেমপ্লিয়ার উক্ত যাত্রা এবং এর সাফল্যের প্রার্থনা করে এক গান রচনা করেন। একটি ঝড় তার কাজে বাঁধা দেয় এবং তিনি আইগুয়েস-মর্টেস-এ নামেন। টিয়েরের উইলিয়াম এর উত্তরাধিকারীর ন্যায় তিনি মন্টেপিলার হয়ে ফিরে আসেন পর ল'আমোর দ্য সা দাম বেরেঙ্গুইরে ("লেডি বেরেঙ্গুইরের ভালবাসার জন্য") এবং এরপর আর কোন ধর্মযুদ্ধের চেষ্টা করেননি।

জেমসের পুত্র পেদ্রো ফার্নান্দেজ এবং ফার্নান স্যাঞ্চেজ, যারা বহরের একাংশের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তারা আক্রের উদ্দেশ্যে তাদের যাত্রা বজায় রাখেন। তারা তাদের গন্তব্যে ডিসেম্বর মাসে পৌছান। তারা দেখতে পায় যে মিশরের মামেলুকে সুলতান বাইবারেরা জেরুজালেমের সাম্রাজ্যর সাথে তাদের সাময়িক যুদ্ধবিরতি ভেঙে আক্রের সামনে সামরিক বাহিনীর শক্তির উপপাদন করছে। এই সময়ে মিশরীয় বাহিনী ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে থেকে আগত ফ্রাঙ্কিশ শক্তির ওপর আক্রমণ করে। ঘটনাটি গ্যালিলিতে ঘটে, জেমসের পুত্র সাথে সাথেই যুদ্ধ করতে চাইলেও পরে বাঁধা দেখে সিসিলি হয়ে দেশে ফিরে আসেন। সিসিলিতে আগে থেকেই ফার্নান স্যাঞ্চেজ, আনজাউয়ের চার্লস কর্তৃক নিরাপদে ছিলেন।

শিল্প, শিক্ষা ও সাহিত্যের প্রতি অণুরাগ সম্পাদনা

 
মাদ্রিদের সাবাটিনি গার্ডেনসে প্রথম জেমস-এর মূর্তি
(জে. লিওন, ১৭৫৩)

জেমস লিয়েডার ক্যাথেড্রাল নির্মাণ ও পবিত্র করেন, যা রোমানিজকোয়ে এবং গোথিক এর সমন্বয়ে এক ধরনের পরিবর্তনকালী শিল্পে নির্মিত হয়েছিল। এর ওপর কিছুটা প্রভাব রেখেছে মুরিশ স্টাইল[১]

মন্টেপিলার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায়ও জেমসের অবসান ছিল। এর প্রতিষ্ঠাত উদ্দীপনা তিনিই সকলের মধ্যে এনে দেন।[১] তিনি ১২৪৫ সালে ভ্যালেন্সিয়ায় একটি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয় এবং এটি পোপ চতুর্থ ইনোসেন্ট এর জন্য বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা করলেও একে দুর্দান্তভাবে উন্নত করা হয়নি।[১] ১২৬৩ সালে জেমস বার্সেলোনাতে ইহুদি রাব্বি নাহ্‌মানিডেস এবং পাবলো খ্রিস্টীয়দের মধ্যে একটি বিতর্কের ব্যবস্থা করেন।

জেমসই ছিলেন কাতালান সাহিত্যের প্রথম পৃষ্ঠপোষক ও রক্ষাকর্তা। অবশ্যই তাকে বলা যায় "কাতালান গদ্য লেখকদের মধ্যে প্রথম"।[৯] জেমস কাতালানে তার জীবন সম্পর্কে বিভিন্ন ধাপ লিখেছিলেন বা তার মাধ্যমেই নির্দেশিত হয়েছিল। লিব্রে দেলস ফেৎস ছিল প্রথম কোন খ্রিস্টান রাজার লেখা আত্মজীবনী। আত্মজীবনীর এক উত্তম উদাহরণ হওয়া ছাড়াও বইটি রাজতন্ত্র শক্তি এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধারণা দেয়, সামন্ততান্ত্রিক আনুগত্য ও বিশ্বাসঘাতকতার উদাহরণ দেয়। বিতর্কিতভাবে রোমান সাম্রাজ্যওসিটানিয়া থেকে পৃথক হয়ে কাতালান মানুষদের পরিচয় হিসেবেও কোন কোন ঐতিহাসকগণ এর বিচার করেছেন।

এছাড়াও জেমস লিব্রে দ্য লাঁ স্যাভিয়েসা বা বিচক্ষণতার বই লিখেছেন। বইটি রাজা সলোমোনের সময় থেকে শুরু করে তার সময়ের আলবার্ট ম্যাগণাস পর্যন্ত বিভিন্ন লেখকের প্রবাদবাক্যকে সংকলিত করেছে। এতে এমনকি মধ্যযুগীয় আরব দার্শনিক থেকে এবং হনেইন বেন ইশাক-এর এপোথেগমাতা ফিলোসোফোরাম থেকেও প্রবচন রয়েছে যা সম্ভবত তার রাজত্বের সময় বার্সেলোনায় অনুবাদ করা হয়েছে। জেহুদা নামক এক হিব্রু অনুবাদক ব্যক্তিকে এই সময়ে তার সভায় স্থান দেয়া হয়েছিল। একটি হিব্রু Jehuda নামের অনুবাদক এই সময়ের মধ্যে জেমস এর আদালতে এ নিযুক্ত করা হয়েছিল।[৯]

যদিও নিজেই একজন গদ্যলেখক ছিলেন এবং মূলত গদ্যলেখারই পৃষ্ঠপোষকতা করেন, কবিতারও গুণগ্রাহী ছিলেন তিনি।[১০] আলবিজেনিস্তান ধর্মযুদ্ধকালীন সময়ে অনেক প্রেমমূলক গীতিকার বাধ্য হয়েছিল দক্ষিণ ফ্রান্স চলে আসতে। তাদের মধ্যে অনেকেই আরাগণে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পুরোহিত র‍্যামন দ্য পেনিয়াফোর্ট-এর মাধ্যমে কবিতার প্রতি প্রথমদিকে তার পৃষ্ঠপোষকতা সত্ত্বেও জেমস ১২৩৩ সাল পর্যন্ত বাইবেলের স্বদেশীয় অনুবাদ প্রতিরোধ করেন।[১০]

পারম্পর্য সম্পাদনা

 
১৮৫৬ সালে উদ্ধারকৃত জেমস এর মমিকৃত মাথা

জেমস সর্বদাই মহাত্মনদের প্রতিবাদ সত্ত্বেও নেতৃত্বের দিক থেকে তার বৈধ সন্তানদেরই অবৈধ সন্তানদের থেকে বেশি পক্ষপাত দেখিয়েছেন। তার পরবর্তী সন্তানদের মধ্যে একজন, ফার্নান স্যাঞ্চেজ, যিনি তার বাবার প্রতি স্থূল অকৃতজ্ঞতা ও বিশ্বাসঘাতকতাময় ব্যবহার করেছেন, জেমসের বৈধ পুত্র পিটার কর্তৃক নিহত হন। বৃদ্ধ রাজা তার প্রতি নিজের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন।

তার উইলে তিনি তার সমস্ত রাজ্য তার সন্তানদের মধ্যে ভাগ করে দেন। হাঙ্গেরির জোলান্ডার সন্তানদের মধ্যে উপরিউক্ত পিটার মূলভূমি এবং জেমসের ম্যাজোর্কা সাম্রাজ্য (রৌসেলিনসিরদানিয়ার দেশ এবং ব্যালেরিক দ্বীপও এর অন্তর্ভুক্ত) লাভ করেন। এছাড়াও তিনি মন্টেপিলারের লর্ডশিপ পান। এই বিভাজন স্বাভাবিকভাবেই ভ্রাতৃগত দ্বন্দ্ব্ব ডেকে আনে। ১২৭৬ সালে আলজিরায় রাজা খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাজ্যশাসন থেকে বিরত হন। তিনি পোবলেট আশ্রম থেকেই অবসর নিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ২৭শে জুলাই ভ্যালেন্সিয়ায় পরলোকগমন করেন।

১৮৫৬ সালে আশ্রম সংস্কারকালে তার মমিকৃত দেহ পাওয়া যায়। তখনই তার একটি ছবি তোলা হয়। ছবিতে স্পষ্টই প্রতীয়মান হয় তার বাম চোখের ভ্রুতে এক ক্ষত, যার উল্লেখ তার লিব্রে দেলস ফেৎস ("কীর্তির বই") বইয়ে পাওয়া যায়।

আমি যখন সৈন্য নিয়ে আসছিলাম, আমি সারাসিনদের দেখার জন্য আমার মাথা শহরের দিকে নেই, যারা এক বিশাল বাহিনী নিয়ে আসছিল। যখন এক ক্রস-তীরন্দাজ আমার দিকে তীর ছুঁড়ল এবং সান-হুডের পাশে আক্রমণ করল, তখন তীরটি আমার মাথায় আঘাত করে এবং এটি কপালের কাছে বজ্রের ঝলকানি নিয়ে আসল। ঈশ্বরের ইচ্ছার ফলে এটি আমার মাথা ভেদ করেনি, তবে তীরটির ফলা এর অর্ধেক ভেদ করেছিল। আমি রেগে গিয়ে আমার হাতের মাধ্যমে তীরটিকে আঘাত করি এবং ভেঙে ফেলিঃ আমার মুখ দিয়ে রক্তের ধারা নামে। আমি আমার কাছে থাকা "সেন্ডাল"-এর আঙরাখা দিয়ে রক্ত মুছে নেই এবং হাসতে হাসতে যেতে থাকি যেনা সৈন্যদল সচেতন না হতে পারে।[১১]

বিয়ে ও সন্তান সম্পাদনা

টেমপ্লেট:বার্সেলোনার প্রাসাদ জেমস প্রথমে ১২২১ সালে ক্যাস্টিলের অষ্টম আলফোনসোইংল্যান্ডের এলিয়ানর-এর কন্যা এলিয়ানরকে বিয়ে করেন। যদিও পরবর্তীকালে তিনি বিয়েটি নাকচ করে দেন, তার শাসনামলেই তিনি তার এক সন্তানকে স্বীকৃতি দেনঃ

১২৩৫ সালে জেমস হাঙ্গেরির দ্বিতীয় এন্ড্রু ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী কার্টেনায়ে দ্য জোলান্ডার কন্যা জোলান্ডাকে বিয়ে করেন। তাদের অনেক সন্তান হয়ঃ

জেমস তৃতীয়বারের মত তেরেসা গিল দ্য ভিডারকে বিয়ে করেন, শুধুমাত্র একটি ব্যক্তিগত নথির প্রমাণ রেখে, এবং তার কুষ্ঠ হওয়ায় তাকে ত্যাগ করেন।

তার শেষের স্ত্রীর সন্তানদের তিনি তার শেষ উইলে স্বীকৃতি দিয়ে যান এবং তাদেরকেই সিংহাসনের অধিকার দেন, পূর্বের সন্তানেরা ব্যর্থ হয়।

এছাড়াও জেমস আরো অনেককে ভালবাসতেন, বিয়ের আগে ও পরে এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ তাকে অবৈধ সন্তান উপহার দেয়।

ব্লাঙ্কা ডি'এন্টিলন-এর সন্তানঃ

  • ফেরান স্যাঞ্চেজ (বা ফার্নান্দো স্যাঞ্চেজ; ১২৪০-১২৭৫), ক্যাস্ট্রোর ব্যারন
  • বেনেঙ্গুয়েলা ফার্নান্দাজ-এর সন্তানঃ
  • পেদ্রো ফার্নান্দাজ, হিজার-এর ব্যারন

এলভিরা সারাকো-এর সন্তানঃ

টীকা সম্পাদনা

  1. Chaytor, 96.
  2. Chaytor, 82.
  3. Chaytor, 83.
  4. Chaytor, 86.
  5. Chisholm 1911
  6. Herradón, Oscar (২০০৮)। Jaime I el Conquistador, el rey cruzado (James I the Conqueror, king of the crusades)Historia de Iberia Vieja: revista de historia de España (History of Ancient Iberia: review of the history of Spain)। পৃষ্ঠা 15। আইএসএসএন 1699-7913 
  7. Chaytor, 90.
  8. Runciman, History of the Crusades, pp. 330–332
  9. Chaytor, 93.
  10. Chaytor, 94.
  11. Translated by John Forster। "The Chronicle of James I, King of Aragon, Surnamed The Conqueror" (পিডিএফ)Chapter CCLXVI (Catalan ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০১২ 
  12. Ricardo del Arco y Garay: Sepulcros de la Casa Real de Aragón
  13. Consejo Superior de Investigaciones Científicas (Spain) (১৯৫৬)। Homenaje a Millás-Vallicrosa। Consejo Superior de Investigaciones Científicas। পৃষ্ঠা 230। 

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  • Chaytor, H. J. আরাগণ ও কাতালোনিয়ার ইতিহাস. লন্ডন: মিথুয়েন, ১৯৩৩.
  • আরাগণের প্রথম জেমসের কীর্তিমূলক বই। মধ্যযুগীয় কাতালান লিব্রে দেলস ফেৎস-এর অনুবাদ. অনুবাদঃ ড্যামিয়ান স্মিথ এবং হেলেন বাফারি (আল্ডারশট: অ্যাশগেট, ২০০৩) (Crusade Texts in Translation, 10.) Pp. xvii + 405 incl. 5 maps.
  • চিসাম, হিউ, সম্পাদক (১৯১১)। "আরাগণের প্রথম জেমস"। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

আরাগনের প্রথম জেমস
জন্ম: ২ ফেব্রুয়ারি ১২০৮ মৃত্যু: ২৭ জুলাই ১২৭৬
রাজত্বকাল শিরোনাম
পূর্বসূরী
দ্বিতীয় পিটার
আরাগণীয় রাজা
বার্সেলোনার কাউন্ট

১২১৩-১২৭৬
উত্তরসূরী
তৃতীয় পিটার
নতুন পদবী ভ্যালেন্সিয় রাজা
১২৩৮-১২৭৬
ম্যাজোর্কার রাজা
১২৩১-১২৭৬
উত্তরসূরী
প্রথম জেমস
পূর্বসূরী
মারিয়া
মন্টেপিলারের লর্ড
১২১৯-১২৭৬

টেমপ্লেট:আরাগণীয় রাজা