অনুসন্ধান কমিটি, ২০১২
অনুসন্ধান কমিটি, ২০১২ হলো বাংলাদেশের ১১তম নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ের জন্য ২০১২ সালের ২২ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান কর্তৃক গঠিত একটি কমিটি। সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে সভাপতি করে এই কমিটির সদস্য সংখ্যা ৪ জন। নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য বাংলাদেশে এই ধরনের কমিটির মধ্যে এটিই প্রথম। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি রকিবুদ্দিন কমিশন গঠন করেন।
গঠিত | ২২ জানুয়ারি ২০১২ |
---|---|
বিলুপ্ত | ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২ |
ধরন | সরকারি |
উদ্দেশ্য | প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারগণের নিয়োগদানের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করা |
যে অঞ্চলে কাজ করে | বাংলাদেশ |
সদস্যপদ | ৪ |
সভাপতি | সৈয়দ মাহমুদ হোসেন |
সদস্য | |
সম্পৃক্ত সংগঠন | বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি |
প্রেক্ষাপট
সম্পাদনা২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শামসুল হুদা কমিশন নিয়োগ লাভ করে, যাদের অধীনে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।[১] ২০১১ সালের ১০ মে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় দেয়। এছাড়াও বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এ সরকার ব্যবস্থাকে বাতিল করা হয়।[২] ২০১২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি শামসুল হুদা কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়। তার পূর্বে ১১তম নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান।[৩] সংলাপে বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সহ কয়েকটি দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহালের পক্ষে মত দেন৷[৪][৫] ২০১২ সালের ১২ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সাথে সংলাপ করার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির সংলাপ অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।[৬] ২২ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতি চার সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে দেন।[৭]
সদস্যবৃন্দ
সম্পাদনাকমিটির সদস্যবৃন্দ:[৮]
- সৈয়দ মাহমুদ হোসেন
- মোহাম্মদ নূরুজ্জামান
- এ. টি. আহমেদুল হক চৌধুরী
- আহমেদ আতাউল হাকিম
কর্মপদ্ধতি
সম্পাদনামন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন অনুসারে, এই অনুসন্ধান কমিটির প্রধান বা সভাপতি হবেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের মনোনীত বিচারপতি৷ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সার্চ কমিটিকে সব ধরনের সাচিবিক সহায়তা দেবে৷ অনুসন্ধান কমিটির সভায় কমপক্ষে দুই জন উপস্থিত না হলে কোরাম হবেনা৷ তারা তাদের নিজেদের সভার কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে পারবেন৷ কমিটি গঠনের ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে তাদের সুপারিশ পেশ করতে হবে৷ তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারের প্রতিটি পদের বিপরীতে দুইজনের নাম সুপারিশ করবেন৷ আর তাদের মধ্য থেকেই রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন৷ সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে সার্চ কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে৷ তবে সমতার ক্ষেত্রে কমিটির সভায় সভাপতিত্বকারীর নির্ণায়ক সিদ্ধান্ত দেয়ার ক্ষমতা থাকবে৷[৭]
কার্য বিবরণী
সম্পাদনা২০১২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি অনুসন্ধান কমিটি রাষ্ট্রপতিকে সুপারিশ জমা দেন। সুপারিশ মোতাবেক রাষ্ট্রপতি ৮ ফেব্রুয়ারি রকিবুদ্দিন কমিশন গঠন করেন।[৮]
প্রতিক্রিয়া
সম্পাদনাপ্রধান বিরোধী দল বিএনপি এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবি অব্যাহত রাখে।[৯]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "ইতিহাসের পাতায় বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন"। ডয়েচে ভেলে বাংলা। ৬ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ কল্লোল, কাদির (১০ মে ২০১১)। "তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল ঘোষণা"। বিবিসি বাংলা।
- ↑ কুমার দে, সমীর (২২ ডিসেম্বর ২০১১)। "নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শুরু"। ডয়েচে ভেলে বাংলা।
- ↑ স্বপন, হারুন উর রশীদ (২ জানুয়ারি ২০১২)। "সব দলের মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে: রাষ্ট্রপতি"। ডয়েচে ভেলে বাংলা।
- ↑ স্বপন, হারুন উর রশীদ (১২ জানুয়ারি ২০১২)। "তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে অটল বিএনপি"। ডয়েচে ভেলে বাংলা।
- ↑ স্বপন, হারুন উর রশীদ (১২ জানুয়ারি ২০১২)। "নির্বাচন কমিশন নিয়ে রাষ্ট্রপতির উদ্যোগ সমর্থন করবে আওয়ামী লিগ"। ডয়েচে ভেলে বাংলা।
- ↑ ক খ স্বপন, হারুন উর রশীদ (২২ জানুয়ারি ২০১২)। "নির্বাচন কমিশনারদের অনুসন্ধানে কমিটি গঠন"। ডয়েচে ভেলে বাংলা।
- ↑ ক খ "নতুন সিইসি কাজী রকিব"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ শায়লা, রুখসানা (২২ জানুয়ারি ২০১২)। "সার্চ কমিটি গঠিত"। বিবিসি বাংলা।