অনুরাধাপুর রাজ্য (সিংহলি: අනුරාධපුර රාජධානිය, অনুবাদ: Anurādhapura Rājadhāniya, তামিল: அனுராதபுர இராச்சியம்), প্রাচীন শ্রীলঙ্কাসিংহলি জাতির প্রথম প্রতিষ্ঠিত রাজ্য ছিল। রাজ্যটির নামকরণ রাজ্যের রাজধানী শহরের থেকে করা হয়েছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৪৩৭ খ্রিস্টাব্দে রাজা পাণ্ডুকভায়া দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, রাজ্যের কর্তৃত্ব সারা দেশে বিস্তৃত ছিল, যদিও সময়ে সময়ে বেশ কয়েকটি স্বাধীন অঞ্চল আবির্ভূত হয়েছিল, যাদের সংখ্যা রাজ্যের শেষের দিকে আরও বৃদ্ধি পেয়েছিল। তা সত্ত্বেও, অনুরাধাপুরের রাজাকে অনুরাধাপুর যুগ জুড়ে সমগ্র দ্বীপের সর্বোচ্চ শাসক হিসেবে দেখা হতো।

অনুরাধাপুর রাজ্য

අනුරාධපුර රාජධානිය
৪৩৭ খ্রিস্টপূর্ব–১০১৭ খ্রিস্টাব্দ
অনুরাধাপুর রাজ্যের জাতীয় পতাকা
দুতুগেমুনু ও পরবর্তী শাসকগণ কর্তৃক ব্যবহৃত পতাকা।[প ১]
  অনুরাধাপুরা রাজ্য
  মালায়ার প্রিন্সিপালিটি (মালায়া রাতা)
  রুহুনার প্রিন্সিপালিটি (রুহুনা রাতা)
রাজধানীঅনুরাধাপুরা
প্রচলিত ভাষাসিংহলি, তামিল[২]
ধর্ম
বৌদ্ধধর্ম (২৬৭ খ্রিস্টপূর্ব থেকে)
হিন্দুধর্ম (~২৬৭ খ্রিস্টপূর্ব)[৩][৪]
সরকাররাজতন্ত্র
রাজতন্ত্র 
• ৪৩৭ খ্রিস্টপূর্ব-৩৬৭ খ্রিস্টপূর্ব
পাণ্ডুকভায়া
• ৯৮২–১০১৭
পঞ্চম মহিন্দ্রা
ইতিহাস 
• প্রতিষ্ঠা
৪৩৭ খ্রিস্টপূর্ব
• বিলুপ্ত
১০১৭ খ্রিস্টাব্দ
আয়তন
৬৫,৬১০ বর্গকিলোমিটার (২৫,৩৩০ বর্গমাইল)
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
তাম্বাপান্নির রাজ্য
পোলোন্নারুয়া রাজ্য

অনুরাধাপুর যুগে বৌদ্ধধর্ম একটি শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেছিল, যা রাজ্যের সংস্কৃতি, আইন ও শাসনের পদ্ধতিগুলিকে প্রভাবিত করেছিল।[প ২] রাজা দেওয়ানমপিয়া তিসার রাজত্বকালে বিশ্বাসের প্রচলন হলে সমাজ ও সংস্কৃতিতে বিপ্লব ঘটেছিল; এই সাংস্কৃতিক পরিবর্তন শ্রীলঙ্কায় বুদ্ধের দাঁতের অবশিষ্টাংশ আগমন ও তার শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতা দ্বারা আরও শক্তিশালী হয়েছিল।[৫]

রাজ্যের বেশিরভাগ সময় ধরে, দক্ষিণ ভারত থেকে আগ্রাসন একটি স্থায়ী হুমকি ছিল। দুতুগেমুনু, ওয়ালাগাম্বাধাতুসেনার মতো শাসকরা দক্ষিণ ভারতীয়দের পরাজিত করে এবং রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। দ্বিতীয় সেনা এর মতো অন্যান্য শাসকরা দক্ষিণ ভারতের মূল ভূখণ্ডে বাহিনী প্রেরণ এবং ৮৬২ খ্রিস্টাব্দে মাদুরাইকে পরাজিত করার মতো বেশ কিছু বিজয় অর্জনের জন্য উল্লেখযোগ্য। ইল্লান দক্ষিণ ভারতীয় প্রথম আক্রমণকারী ছিলেন, যিনি বিজিতপুরায় একটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন।

যেহেতু রাজ্যটি মূলত কৃষিভিত্তিক ছিল, ফলে সেচ কার্যক্রম নির্মাণ অনুরাধাপুর রাজ্যের একটি বড় অর্জন ছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল শুষ্ক অঞ্চলে জল সরবরাহ নিশ্চিত করা ও দেশকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে সাহায্য করা। বেশ কয়েকজন রাজা, বিশেষ করে ওয়াসভামহাসেনা, বড় জলাধার ও খাল নির্মাণ করেছিলেন, যা অনুরাধাপুরা যুগ জুড়ে রাজারতা এলাকায় একটি বিস্তৃত ও জটিল সেচ ব্যবস্থার নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিল। এই নির্মাণগুলি তৈরিতে ব্যবহৃত উন্নত প্রযুক্তিগত ও প্রকৌশল দক্ষতার একটি ইঙ্গিত প্রদান করে। সিগিরিয়ার বিখ্যাত চিত্রকলা ও কাঠামো; রুয়ানওয়ালিসেয়া, জেঠবনা স্তূপ ও অন্যান্য বড় স্তূপ; লোবামহাপায়া মত বড় ভবন; এবং ধর্মীয় কাজগুলি (অসংখ্য বুদ্ধ মূর্তির মতো) ভাস্কর্য নির্মাণে অনুরাধাপুর যুগের অগ্রগতি প্রদর্শনকারী ল্যান্ডমার্ক।

পদটীকা সম্পাদনা

  1. This flag, depicting the moon, sun and a lion bearing a sword, is believed to have been used as the royal standard of Dutthagamani, and subsequent rulers.[১]
  2. Buddhism was such an important factor in this period that Mendis (2000), p.196 asserts, "The island of Lanka belonged to the Buddha himself; it was like a treasury filled with the three gems".

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Sri Lanka's National Flag"The Sunday Times। ২০০৮-০২-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-০৪ 
  2. De Silva, K.M (২০০৫)। A History of Sri Lanka। Penguin Books India। পৃষ্ঠা 100। আইএসবিএন 9558095923 
  3. De Silva 2014, পৃ. 58।
  4. "The downfall of the Anuradhapura kingdom and South Indian influences" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০২১ 
  5. Perera (2001), p.45