অনুপম ঘটক
অনুপম ঘটক(১১ এপ্রিল ১৯১১- ১২ ডিসেম্বর ১৯৫৬) ছিলেন বাংলা সঙ্গীত জগতে এক কিংবদন্তি ভারতীয় বাঙালি গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক।[১] [২] [৩] বাংলা চলচ্চিত্রেও সুরারোপে করে খ্যাতি অর্জন করেন।[৪] তিনি ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা চলচ্চিত্র অগ্নিপরীক্ষায় অসামান্যভাবে 'ডিমিনিশড কর্ড' ব্যবহার করে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেন এবং নিজস্বতা প্রমাণ করেন।[৫]
অনুপম ঘটক | |
---|---|
জন্ম | ১১ এপ্রিল ১৯১১ পাথরাইল, টাঙ্গাইল (অধুনা বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ১২ ডিসেম্বর ১৯৫৬ ভারত | (বয়স ৪৫)
পিতা-মাতা |
|
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাঅনুপম ঘটকের জন্ম ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের ১১ই এপ্রিল বৃটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইলের পাথরাইল গ্রামে। পিতা অতুলচন্দ্র ঘটক ছিলেন গানবাজনার বিশেষ অনুরাগী। সঙ্গীতপ্রিয় পিতার সাহচর্যে কলকাতায় এসে আশুতোষ কলেজ থেকে স্নাতক হওয়া ও পরে রেলের চাকরি পাওয়ার পর, সব ছেড়ে সঙ্গীতকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
কর্মজীবন
সম্পাদনা১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ঊনিশ বৎসর বয়সে রেডিয়োতে গান গাওয়ার সুযোগ পান। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে তার পরিচয় হয় গায়ক গীতিকার সুরকার চলচ্চিত্র পরিচালক অভিনেতা সাহিত্যসেবী হীরেন বসুর এবং তারপর দিকপাল সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব রাইচাঁদ বড়ালের সঙ্গে। ক্রমে চলে আসেন পাদপ্রদীপের আলোয়। [৬] অনুপম ঘটক বাংলা গানে সুরারোপে এক নিজস্ব ঘরানা নিয়ে এসেছিলেন। অজস্র বাংলা গান তার সুরে আজও অমর। হীরেন বসুর সহকারী পরিচালক হিসাবে তিনি ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথম 'মহুয়া' ছবিতে কাজ শুরু করে ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে এককভাবে 'পায়ের ধুলো' ছায়াছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেন। এরপর তিনি বোম্বাই চলে যান এবং 'সাধনা', লেডিজ ওনলি', উসকি তামান্না' ইত্যাদি হিন্দি ছবিতে কাজ করেন। এরপর কলকাতায় ফিরে আসেন এবং বহু ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেন। অসামান্য সঙ্গীত রচনা করেছেন তিনি।
- শাপমুক্তি
- পাষাণ দেবতা
- মায়ের প্রাণ
- অগ্নিপরীক্ষা
- শঙ্করনারায়ণ ব্যাঙ্ক
- শ্রীতুলসীদাস
- সঞ্জীবনী
- অনুপমা
- পরেশ
- একটি রাত
প্রসঙ্গত সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া অগ্নিপরীক্ষা ছবির গান - গানে মোর কোন ইন্দ্রধনু.... গানের সুরে তখনকার দিনে 'ডিমিনিসিং কর্ড' ব্যবহার করে তিনি নিজস্বতার ছাপ রাখেন। লাহোরে গিয়ে বেশ কিছু হিন্দি ও উর্দু ছবিতেও কাজ করেছেন তিনি। বাংলা ছবি একতারা ছিল তাঁর শেষ সুরারোপিত ছবি।[৫] অনুপম ঘটক অকস্মাৎ ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১২ ডিসেম্বর মাত্র ৪৫ বৎসর বয়সে প্রয়াত হন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ হেমেটেক, উরসুলা; রেয়েস, আদেলাইদা (২০০৭)। Cultural diversity in the urban area: explorations in urban ethnomusicology। Institut für Volksmusikforschung und Ethnomusikologie। পৃষ্ঠা 43। আইএসবিএন 9783902153036। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ হুসেন, আকলম; ইসলাম, সিরাজুল (১৯৯৭)। History of Bangladesh, 1704-1971, Volume 1। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৪৬০। আইএসবিএন 9789845123372। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ আহমেদ, এ এফ সালাহউদ্দিন; চৌধুরী, বজলুল মোবিন (২০০৪)। Bangladesh, national culture, and heritage: an introductory reader। ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ। আইএসবিএন 978-984-8509-00-5। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ সরকার, ভাস্কর (২০০৯)। Mourning the Nation: Indian Cinema in the Wake of Partition। ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ৩২৭। আইএসবিএন 9780822392217। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ অভীক চট্টোপাধ্যায়, সম্পাদক (২০১৯)। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আনন্দধারা। সপ্তর্ষি প্রকাশন, কলকাতা। পৃষ্ঠা ১০৩। আইএসবিএন 978-93-8270-654-0।
- ↑ "গানে তার ইন্দ্রধনু"। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-০১।