মেজর জেনারেল অং সান (বর্মী: ဗိုလ်ချုပ် အောင်ဆန်း; আ-ধ্ব-ব: [bòdʑoʊʔ àʊɴ sʰáɴ] বোজৌক্‌ আওঁ সাঁ) (ফেব্রুয়ারি ১৩, ১৯১৫ – জুলাই ১৯, ১৯৪৭) মায়ানমারের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান নেতা ও সমরনায়ক। অং সান মায়ানমারের নাটমাউক (နတ်မောက် নাক্‌মাওক্‌) শহরে জন্মগ্রহণ করেন। স্থানীয় বিদ্যালয়ে শিক্ষাগ্রহণ করেন ও মেধাবী ছাত্র হিসেবে ছাত্রজীবন সমাপ্ত করেন। তিনি ইয়াংগুন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় রাজনীতিতে যোগ দেন। পরবর্তীকালে তিনি 'অ্যান্টি ফ্যাশিস্ট পিপল্‌স ফ্রিডম লিগ' (Anti Fascist People's Freedom League, AFPFL) প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠনই মায়ানমারের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেয়।

Major General
অং সান
অং সান এর প্রতিকৃতি
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মফেব্রুয়ারি ১৩, ১৯১৫
Natmauk, Magwe, বার্মা
মৃত্যুজুলাই ১৯, ১৯৪৭
ইয়াংগুন, বার্মা
জাতীয়তাবর্মী
সন্তানঅং সান উ, অং সান লিন, অং সান সু চী, অং সান ছিত
পেশা
  • Military Officer
জীবিকাMilitary
সামরিক পরিষেবা
আনুগত্যBurma National Army
Anti-Fascist People's Freedom League
পদমেজর জেনারেল
যুদ্ধদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মায়ানমারে জাপানি বিমান হামলা চলাকালে অং সান মায়ানমারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিযুক্ত হন। ১৯৪৫ সালে তিনি মায়ানমারের জাতীয় সেনাবাহিনীর কমান্ডার নিযুক্ত হন এবং মিত্রবাহিনীর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। ১৯৪৭ সালে মায়ানমারের আইনসভার নির্বাচনে AFPL নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে এবং দলটি মায়ানমারের পূর্ণ স্বাধীনতার ডাক দেয়। অং সান তখন মায়ানমারের অস্থায়ী সরকারের প্রধান ছিলেন। ১৯৪৭ সালের ১৯শে জুলাই মায়ানমারের স্বাধীনতা-চুক্তি স্বাক্ষরের মাত্র ছয় মাস আগে আততায়ীর গুলিতে অং সান ও তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী নিহত হন। আজও মায়ানমারের জনগণ তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে এবং "বগিয়োকে" (জেনারেল) ডাকণামে তাকে ডেকে থাকে। অং সান নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়িনী অং সান সু কি-র পিতা।

প্রাথমিক জীবন

সম্পাদনা

১৯১৩ সালে কেন্দ্রীয় বার্মার মাগওয়ে জেলার নাতমাউক শহরে আইনজীবী উ ফা এবং তার স্ত্রী দাও সু-র সচ্ছল ও প্রভাবশালী পরিবারে অং সানের জন্ম হয়। অং সানের দাদার ভাই বো মিন ইয়াউং ১৮৮৬ সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। [][] অং সান নাতমাউকের বৌদ্ধ মন্দিরের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা এবং ইয়েনাঙ্গিয়াউং হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। []

স্বাধীনতা সংগ্রাম

সম্পাদনা

অং সান ১৯৩৩ সালে ইয়াংগুন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন এবং শীঘ্রই একজন ছাত্র নেতায় পরিণত হন। তিনি ইয়াংগুন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী সভায় নির্বাচিত হন এবং তাদের ম্যাগাজিন ওয়ে-র সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। []

১৯৩৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সানের সম্পাদিত পত্রিকায় বেনামে একটি নিবন্ধ ছাপা হয়, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রবীণ কর্মচারীর সমালোচনা করা হয়। অং সান লেখকের নাম উন্মোচন করতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বিশ্ববিদালয় থেকে বহিস্কারের হুমকি দেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ধর্মঘট ডাকে এবং বহিস্কারের হুমকি উঠিয়ে নেওয়া হয়। ১৯৩৮ সালে অং সান সর্ব-বার্মা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন।[][] একই বছরে সরকার তাকে Rangoon University Act Amendment Committee-র ছাত্র প্রতিনিধির পদ দেয়।

১৯৩৮ সালে অং সান ইংরেজি সাহিত্য, আধুনিক ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন ও আইন স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৩৮-এর অক্টোবরে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে তিনি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে পুরোমাত্রায় জড়িয়ে পড়েন। এই পর্যায়ে তিনি ছিলেন ব্রিটিশ ও উপনিবেশবাদের ঘোর বিরোধী। ১৯৪০ সালের অগাস্ট পর্যন্ত তিনি দেশব্যাপী অনেকগুলি ধর্মঘট সংগঠন করেন যেগুলি Htaung thoun ya byei ayeidawbon (বা ১৩০০ সালের বিপ্লব, বর্মী পঞ্জিকা অনুসারে) নামে পরিচিত ছিল।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Aung San Suu Kyi (১৯৮৪)। Aung San of Burma। Edinburgh: Kiscadale 1991। পৃষ্ঠা 1,10,14,17,20,22,26,27,41,44। 
  2. Martin Smith (১৯৯১)। Burma - Insurgency and the Politics of Ethnicity। London and New Jersey: Zed Books। পৃষ্ঠা 90,54,56,57,58,59,60,65,69,66,68,62-63,65,77,78,6। 
  3. Maung Maung (১৯৬২)। Aung San of Burma। The Hauge: Martinus Nijhoff for Yale University। পৃষ্ঠা 22,23। 


বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা