হেবা কুতুব ( আরবি: هبة قطب  ; জন্ম সেপ্টেম্বর ১৯, ১৯৬৭) একজন মিশরীয় নিবন্ধনধারি সেক্স থেরাপিস্ট এবং মিশরে যৌন পরামর্শ দেয়ার দ্য বিগ টক এর প্রধান হিসাবে প্রচারিত। দেশের প্রথম লাইসেন্সপ্রাপ্ত সেক্সোলজিস্ট, তিনি কোরানের শিক্ষার উপর ভিত্তি করে তার পদ্ধতির ভিত্তি তৈরি করেন। তিনি বলেন, সেক্স স্বামী -স্ত্রীর মধ্যে সুস্থ যৌন সম্পর্কসহ শক্তিশালী বৈবাহিক জীবনকে উৎসাহিত করে।[২]

হেবা জামাল কুতুব
জন্ম (1967-09-19) ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৬৭ (বয়স ৫৬)[১]
জাতীয়তামিশরীয়
পেশাযৌনবিশেষজ্ঞ
ওয়েবসাইটhttp://www.hebakotb.net

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা সম্পাদনা

কুতুববের জন্ম ও বেড়ে ওঠা মিশরে। তিনি একজন সার্জন হতে চেয়েছিলেন।[৩] তিনি কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং "যৌন নির্যাতিত শিশুদের মধ্যে যৌনরোগের মেডিকোলেগাল ইমপ্লিকেশনস" নামে একটি থিসিস লিখেন। তার থিসিস লেখার সময়, তিনি বুঝতে পারেন, স্বাভাবিক যৌনতা সম্পর্কে তার খুব কম ধারণা আছে।[৩] তিনি এই বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন। তিনি কুরআনের একটি অনুচ্ছেদে স্বামী ও স্ত্রীদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা জানতে পারেন এবং বুঝেন যে, নারীর যৌন অধিকার আছে। তিনি বলেন: “আমি আমার ধর্মের কাছে কৃতজ্ঞ যে, নারীর যৌন অধিকারের ক্ষেত্রে সুন্দর কথা বলেছে। অথচ আধুনিক বিজ্ঞান অনেক বছর ধরে তা জানতে পারেনি।” তিনি ২০০৩ সালে মিশরের প্রথম লাইসেন্সপ্রাপ্ত যৌনবিজ্ঞানী হন। তিনি মাইমনাইডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্লিনিকাল সেক্সোলজিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি "ইসলামে যৌনতা" শিরোনামে থিসিস করে পিএইচডি অর্জন করেন।

দ্য বিগ টক সম্পাদনা

কুতুবের টিভি অনুষ্ঠান দ্য বিগ টক সরাসরি প্রশ্ন-উত্তর অনুষ্ঠান হিসাবে আল-মেহওয়ার নামীয় মিশরীয় স্যাটেলাইট চ্যানেলে সম্প্রচারিত হয়।[৪] যেখানে তিনি সাধারণ যৌন বিষয় সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তরে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে হস্তমৈথুন এবং পর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। কুতুব সব প্রশ্নের উত্তর খোলাখুলিভাবে দিয়ে থাকেন তবে তার মূল উদ্দেশ্য বিবাহ বহির্ভুত যৌনমিলনের বিরূদ্ধতা করা এবং এ থেকে মানুষকে বিরত রাখা।[৫] যে বিষয়গুলি ইসলামে আলোচনা করা হারাম বা নিষিদ্ধ তা নিয়েও তিনি আলোচনা করেছেন যেমন নারীর মাসিক রজঃস্রাব চলাকালিন সময় স্ত্রীমিলন করা এবং স্ত্রীর পায়ুপথে সঙ্গম করা। যদিও কুতুবের অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং তা ইসলামের রক্ষণশীল আলেমের কাছে সমালোচিত।[৬] শেখ ইউসেফ আল-বাদারি একজন সংরক্ষণশীল আলেম, তিনি নারীর খাৎনা সুন্নত,[৭] বিষয়ে তার " সেক্স বৃদ্ধির বিকৃত উপায়" এ সমালোচনা করেন।[২]

যৌনতা সম্পর্কে বিশ্বাস সম্পাদনা

কুতুব কুরআনের দীর্ঘতম সূরা আল-বাকারার উদ্ধৃত দিয়ে বলেন, মানুষের যৌনতা বোঝার জন্য অনুপ্রেরণা দরকার। সেক্স একজন পুরুষ ও একজন মহিলার দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে কথা বলে এবং পুরুষকে আদেশ দেয় তার স্ত্রীর কাছে আনন্দ প্রদান করার।[২][৮] তিনি যুক্তি দেখান যে সাধারণভাবে ইসলাম এবং কুরআন যৌনতার জন্য অনুমোদিত ধর্ম। বিষয়টির আলোচনা ধর্ম দ্বারা নয়, সংস্কৃতি দ্বারা সমাধান করা হয়।[২] মিশরে এ বিষয়টি অত্যন্ত উদারপন্থী হিসাবে দেখা হয়। যৌনতা সম্পর্কে কুতুবের বিশ্বাস পশ্চিমা মান অনুসারে রক্ষণশীল। তিনি নারীদের দেহ অন্বেষণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন যে নারীদের হস্তমৈথুন করার দরকার নেই। এই অভ্যাসকে নিরুৎসাহিত করে তিনি বলে, "একজন নারীর বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত খালি থাকবে এবং হস্তমৈথুন করার দরকার নেই।"[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Resume (official site)"। ২০০৭-১০-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০২-২৮ 
  2. Clark-Flory, Tracy (২০০৭-০৬-০৬)। "Sex and the married Muslim"। ২০০৮-০৪-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০২-২৮ 
  3. "Egypt's 'Dr. Ruth': Let's talk sex in the Arab world"CNN। ২০০৭-০৪-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০২-২৮ 
  4. Jaafar, Ali (২০০৭-০৪-১৬)। "Femme-led talk shows tackle taboos"Variety 
  5. "Doctor airs sex talk in Egypt"United Press International। ২০০৭-০৪-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০২-২৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. Radwan, Amany (২০০৮-০২-২২)। "An Islamic Answer to Dr. Ruth"Time Magazine। ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০২-২৯ 
  7. "Egyptian ban on female circumcision upheld"BBC News। ১৯৯৭-১২-২৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০২-২৯ 
  8. Dinnick, Wilf; McGregor-Wood, Simon (২০০৭-০৪-১১)। ""Have More Sex" Says Muslim 'Dr. Ruth'"ABC News। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০২-২৯