হুমা হাতুন (উসমানীয় তুর্কি: هما خاتون, আনু. ১৪১০-সেপ্টেম্বর ১৪৪৯) দ্বিতীয় উসমানীয় সুলতান চতুর্থ মুরাদের স্ত্রী এবং দ্বিতীয় মেহমেদের মা ছিলেন।

হুমা হাতুন
Hüma Hatun
ভালিদে সুলতান
তুরস্কের বুরসায় হুমা হাতুনের সমাধি
রাজত্বআগস্ট ১৪৪৪-সেপ্টেম্বর ১৪৪৬
পূর্বসূরিদেভলেত হাতুন
উত্তরসূরিগুলবাহার হাতুন
জন্মআনু. ১৪১০
স্টেলা ইতালি
মৃত্যুসেপ্টেম্বর ১৪৪৯ (বয়স ৩৮-৩৯)
বুরসা, তুরস্ক, উসমানীয় সাম্রাজ্য
সমাধি
মুরাদিয়া কমপ্লেক্স, বুরসা
দাম্পত্য সঙ্গীদ্বিতীয় মুরাদ
বংশধরদ্বিতীয় মুহাম্মদ
ধর্মসুন্নি ইসলাম

জীবনী সম্পাদনা

হুমা হাতুন একজন সাধারণ দাসী ছিলেন।[১] একটি উসমানীয় শিলালিপিতে তাকে হাতুন বিনতে আবদুল্লাহ (আবদুল্লাহর কন্যা) হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। তার পারিবারিক পটভূমি সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না। সেই সময় যারা ইসলাম গ্রহণ করত তাদের আবদুল্লাহ নাম দেওয়া হত, যার অর্থ ঈশ্বরের দাস,[২] যা তার অমুসলিম বংশোদ্ভূত হওয়ার প্রমাণ।[৩] পারস্যের কিংবদন্তির নাম অনুসারে তার নাম রাখা হয় হুমা। যার অর্থ "স্বর্গের পাখি"। তার উৎস সম্পর্কে দুটি ঐতিহাসিক তত্ত্ব রয়েছে: (১)তিনি ইহুদি বংশোদ্ভূত;[৪] বা (২) তিনি সার্বিয়ান খ্রিস্টান বংশোদ্ভূত ছিলেন।[৫] তুর্কি ইতিহাসবিদ এবং অধ্যাপক ইলবার অরতায়লি সমর্থন করেছেন যে তিনি ছিলেন স্লাভিক বংশোদ্ভূত।

হুমা হাতুন দ্বিতীয় মুরাদকে বিয়ে করেছিলেন। ১৪৩২ সালের ৩০ মার্চ তিনি তার একমাত্র পুত্র মুহাম্মদের জন্ম দেন। ১৪৩৮ সালে শাহযাদা আলায়েদ্দিনের সাথে মুহাম্মদকে সুন্নত করানো হয়েছিল। ১১ বছর বয়সে মুহাম্মদকে গভর্নর হিসাবে মানিসায় প্রেরণ করা হলে হুমা হাতুন তার পুত্রের সাথে মনীসায় চলে গিয়েছিলেন। ১৪৪৪ সালে মুহাম্মদের বড় ভাই শাহজাদা আলাউদ্দীনের মৃত্যু বরণ করলে মুহাম্মদ সিংহাসনে একমাত্র উত্তরাধিকারী হন। একই বছর দ্বিতীয় মুরাদ সিংহাসন থেকে পদচ্যুত হন।[৬]

তার পুত্র শাহজাদা দ্বিতীয় মুহাম্মদ সিংহাসনের স্থলাভিষিক্ত হন, তিনি দুই বছর ভালিদে হাতুনের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, ১৪৪৬ সালে মুরাদ আবার সিংহাসন গ্রহণ করেন এবং হুমা এবং তার পুত্র আবার বুরসায় ফিরে আসে। যাইহোক, পিতার মৃত্যুর পরে আবারও মুহাম্মদ সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন, কিন্তু তিনি আর কখনও ভালিদে হাতুন হননি কারণ মেহমেদ সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার আগে মারা গিয়েছিলেন। তিনি কনস্টান্টিনোপল বিজয়ের আগেই মারা যান। কনস্টান্টিনোপল রাজধানী হয়ে ওঠে এবং ১৯২২ সালে সাম্রাজ্য বিলুপ্ত হওয়ার আগে প্রায় পাঁচ শতাব্দী ধরে উসমানীয় সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল।[৬]

মৃত্যু সম্পাদনা

তিনি সেপ্টেম্বর ১৪৪৯ সালে বুরসায় মারা যান। তার সমাধিটি মুরাদিয়া কমপ্লেক্সের পূর্বদিকে "হাতুনিয়া কেম্বিদি" নামে পরিচিত। সমাধিটি তার পুত্র মেহেমেদ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। যেখানে তাঁর সমাধি রয়েছে তা হুমা হাতুন কোয়ার্টার হিসাবে পরিচিত।[৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Decline and Fall of Byzantium to the Ottoman Turks"। Wayne State University Press। ১ জানুয়ারি ১৯৭৫। পৃষ্ঠা ৩০৪। আইএসবিএন 978-0-8143-1540-8 
  2. John Freely (২০০৯)। "The Grand Turk: Sultan Mehmet II - Conqueror of Constantinople, Master of an Empire and Lord of Two Seas"। I.B.Tauris। আইএসবিএন 978-0-857-73022-0 
  3. Babinger, Franz (১৯৯২)। "Mehmed the Conqueror and His Time"। Princeton University Press। পৃষ্ঠা ১১। আইএসবিএন 978-0-691-01078-6  অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  4. Babinger, Franz (১৯৯২)। "Mehmed the Conqueror and His Time"। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 11–12। আইএসবিএন 978-0-691-01078-6  অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য);
  5. Li Tang; Dietmar W. Winkler (২০১৩)। "From the Oxus River to the Chinese Shores: Studies on East Syriac Christianity in China and Central Asia"। LIT Verlag Münster। পৃষ্ঠা 308–। আইএসবিএন 978-3-643-90329-7  অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  6. "Hüma Hatun Biografi"somuncubaba.net। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০২০ 
  7. Ahmed Akgündüz, Said Öztürk (২০১১)। Ottoman History: Misperceptions and Truths। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-9-090-26108-9 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

  • Osmanlı Padişahlarının yabancı anneleri ve padişahların yabancılarla evlenme gerekçeleri. Cafrande Kültür Sanat ve Hayat. 13 March 2008. General Culture
উসমানীয় রাজপদবী
পূর্বসূরী
দেভলেত হাতুন
ভালিদে হাতুন
আগস্ট ১৪৪৪-সেপ্টেম্বর ১৪৪৬
উত্তরসূরী
গুলবাহার হাতুন