হামিরপুর জেলা, হিমাচল প্রদেশ
হামিরপুর জেলা উত্তর ভারতে অবস্থিত হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের একটি জেলা। এটির জেলা সদর ও প্রশাসনিক দপ্তর রয়েছে হামিরপুর শহরে। ১,১১৮ বর্গকিলোমিটার অথবা ৪৩২ বর্গমাইল ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট এই জেলাটি হিমাচল প্রদেশের আয়তন বিচারে ক্ষুদ্রতম জেলা।
হামিরপুর জেলা | |
---|---|
হিমাচল প্রদেশের জেলা | |
হিমাচল প্রদেশের মানচিত্রে হামিরপুর জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক (হামিরপুর): ৩১.৬৭৯৮° উ, ৭৬.৫০২৬° পূ | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | হিমাচল প্রদেশ |
বিভাগ | ৫ |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৭২ |
সদর | হামিরপুর |
তহশীল | তালিকা
|
সরকার | |
• ভারতীয় সংসদ লোকসভা | হামিরপুর[২] |
• সাংসদ | অনুরাগ সিং ঠাকুর |
• বিধানসভা | বড়সর-৩৯, হামিরপুর-৩৮, সুজনপুর-৩৭, নাদোন-৪০, ভোরঞ্জ-৩৬ |
আয়তন | |
• সর্বমোট | ১,১১৮ বর্গকিমি (৪৩২ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• সর্বমোট | ৪,৫৪,৭৬৮ |
• জনঘনত্ব | ৪১০/বর্গকিমি (১,১০০/বর্গমাইল) |
জনতত্ত্ব | |
• সাক্ষরতার হার | ৮৮.১৫ |
• লিঙ্গানুপাত | ১০৯৫ |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫:৩০) |
ওয়েবসাইট | http://hphamirpur.nic.in/ |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে কাংড়া জেলা থেকে নতুন হামিরপুর জেলা গঠন করা হয়। হামিরপুরের সাথে কাংড়ার কটোচ রাজবংশের ইতিহাস জড়িয়ে আছে৷ পৌরাণিক সময়ে এটি জলন্ধর কেন্দ্রিক ত্রিগর্ত রাজ্য|ত্রিগর্ত রাজ্যের অংশ ছিলো৷[৩] পাণিনি এই রাজ্যের বাসিন্দাদের বীর যোদ্ধা জাতি বলে উল্লেখ করেছেন৷ কটোচ রাজবংশের রাজা হামির চাঁদের সময় থেকে তারা এই অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধি করতে সক্ষম হন৷ রাজা হামির ১৭০০ থেকে ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দের সময়কালে হামিরপুরে রাজত্ব করতেন, তিনি এখানে একটি দুর্গও নির্মাণ করেন৷ দুর্গটি পরে হামিরপুর দুর্গ নাম পায় এবং একই সাথে শহরটিও হামির চাঁদের নামানুসারে হামিরপুর নামে পরিচিত হয়ে ওঠে৷
ভূগোল
সম্পাদনাহামিরপুর জেলা ৩১°২৫′ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ৩১°৫২′ উত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত এবং ৭৬°১৮′ পূর্ব দ্রাঘিমা থেকে ৭৬°৪৪′ পূর্ব দ্রাঘিমা পর্যন্ত বিস্তৃত। সমুদ্রতল থেকে ৭৮০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত হামিরপুর শহর এই জেলার প্রশাসনিক সদর দপ্তর।
হামিরপুর জেলার উত্তর দিকে রয়েছে কাংড়া জেলা, পূর্ব দিকে রয়েছে মণ্ডী জেলা, দক্ষিণ দিকে রয়েছে বিলাসপুর জেলা এবং পশ্চিম দিকে রয়েছে উনা জেলা। হামিরপুর হিমাচল প্রদেশের অন্তর্বর্তী একটি জেলা, ফলে এই জেলার সীমা অপর কোন রাজ্যের সঙ্গে বণ্টিত নয়। বিপাশা নদী হামিরপুর ও কাংড়া জেলার সীমানা নির্ধারণ করেছে। শতদ্রু নদের পাশাপাশি প্রবাহিত হওয়া মান খাড় ও কুনা খাড় এই জেলার দুটি ভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে বিপাশা নদীতে মিলিত হয়েছে। খাড় বলতে স্থানীয় ভাষায় ছোট ছোট উপনদীকে বোঝায়। হামিরপুর জেলায় যথেষ্ট পরিমাণে পাইন গাছের বন রয়েছে এছাড়াও জেলাটি আমের ফলনের জন্য যথেষ্ট মনোরম।
আবহাওয়া
সম্পাদনাহিমাচল প্রদেশ রাজ্যের অন্যান্য অধিকাংশ জেলাগুলির মতো হা মিরপুরেও বিশুদ্ধ পার্বত্য আবহাওয়া লক্ষ্য করা যায়। শীতকালে জলবায়ু অধিক শীতল। আগস্ট মাসের শুরু থেকে মার্চ মাসের শেষ অবধি সাধারণত শীতবস্ত্রের প্রয়োজন পড়ে। আবার বিপরীতক্রমে গ্রীষ্মকালে উষ্ণতার কখনো কখনো ৪০ °C পর্যন্ত পৌঁছে যায়। সাধারণভাবে এই জেলায় তুষারপাত লক্ষ্য করা না গেলেও ২০১২ খ্রিস্টাব্দে জানুয়ারি মাসে এবং ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে জেলার উচ্চতর স্থানগুলিতে অতি অল্প পরিমাণে তুষারপাত লক্ষ্য করা গিয়েছে।
বিভাগ
সম্পাদনাজেলাটিতে পাঁচটি বিভাগ রয়েছে, এগুলি হলো: হামিরপুর, ভোরঞ্জ, সুরজপুর, বড়সর এবং নাদোন৷
হামিরপুর জেলার সাতটি তহশীলে বিভক্ত এগুলি হল:
- হামিরপুর সদর
- নাদোন
- সুরজপুর
- বড়সর
- ভোরঞ্জ
- তৌনি দেবী
- গালোর[১]
পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে; বড়সর-৩৯, হামিরপুর-৩৮, সুজনপুর-৩৭, নাদোন-৪০, ভোরঞ্জ-৩৬ কেন্দ্র যার মধ্যে ভোরঞ্জ তপশিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত আসন। প্রতিটিই হিমাচল প্রদেশের হামিরপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনা২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জনগণনা অনুসারে হামিরপুর জেলার মোট জনসংখ্যা ছিল ৪,৫৪,৭৬৮ জন। জনসংখ্যার বিচারে ২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের ৬৪০ টি জেলার মধ্যে এটি ছিল ৫৫০তম। জেলাটির জনঘনত্ব ৪০৭ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (১,০৫০ জন/বর্গমাইল), যা হিমাচল প্রদেশ রাজ্যে আপাত সর্বোচ্চ। ২০০১ থেকে ২০১১ খ্রিস্টাব্দে এর মধ্যে জেলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১০.১৯ শতাংশ।প্রতি হাজার পুরুষে এই জেলায় নারী সংখ্যা ১০৯৫ জন, যা রাজ্যের সর্বোচ্চ। আবার সাক্ষরতার হারের ক্ষেত্রে এই জেলা হিমাচল প্রদেশের সর্বাধিক সাক্ষর জেলা। জেলাটির সর্বমোট সাক্ষরতার হার শতাংশ ৮৮.১৫ যেখানে পুরুষ সাক্ষরতার হার ৯৪.৩৬ শতাংশ এবং নারী সাক্ষরতার হার ৮২.৬২ শতাংশ। জনসংখ্যার বিচারে এই জেলারটির ১০.৬৮ শতাংশ ছয় বছর অনূর্ধ্ব শিশু।[৪] জেলাটিন অধিকাংশ লোকই ভারতের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত, এটি বীরভূমি নামেও পরিচিত।[৫]
অন্তিম জনগণনা অনুসারে জেলাটির ০.৭৫ শতাংশ লোক ডোগরি ভাষী, ১৪.১০ শতাংশ হিন্দিভাষী, ৩.৫৫ শতাংশ লোক কাংড়িভাষী, ৭৫.৯৮ শতাংশ লোক পাহাড়িভাষী৷[৬]
বছর | জন. | ব.প্র. ±% |
---|---|---|
১৯০১ | ১,৬০,৩৭৪ | — |
১৯১১ | ১,৫৭,২৫১ | −০.২% |
১৯২১ | ১,৫৭,৩১৯ | +০% |
১৯৩১ | ১,৬৫,৮৩৭ | +০.৫৩% |
১৯৪১ | ১,৮৮,৮০৪ | +১.৩১% |
১৯৫১ | ১,৯১,৩১১ | +০.১৩% |
১৯৬১ | ২,২০,৩৪১ | +১.৪২% |
১৯৭১ | ২,৬৪,৯৯১ | +১.৮৬% |
১৯৮১ | ৩,১৭,৭৫১ | +১.৮৩% |
১৯৯১ | ৩,৬৯,১২৮ | +১.৫১% |
২০০১ | ৪,১২,৭০০ | +১.১২% |
২০১১ | ৪,৫৪,৭৬৮ | +০.৯৮% |
উৎস:[৮] |
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ https://www.census2011.co.in/data/district/234-hamirpur-himachal-pradesh.html
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ২৮ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "District Census 2011"। Census2011.co.in। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৮-৩০।
- ↑ "About District | District Hamirpur, Government of Himachal Pradesh - INDIA | India" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-০৫।
- ↑ 2011 Census of India, Population By Mother Tongue
- ↑ http://www.censusindia.gov.in/2011census/C-16.html
- ↑ Decadal Variation In Population Since 1901