হাঁস
হাঁস অ্যানাটিডি (Anatidae) পরিবারের অন্তর্ভুক্ত পাখিদের বেশ কিছু প্রজাতির সাধারণ নাম। পৃথিবীর সব হাঁস এসেছে বনো-পাখি থেকে। এই বুনো পাখি আমাদের দেশের মাটিতে একদিন চরে বেড়াত। সে হাঁস এশিয়ার অন্য বুনো-হাঁসের মত এখানকার পানিতে, জঙ্গলে চরে বেড়াতো। এই বুনো হাঁস "ম্যালারড্" গোষ্ঠীর। [১]
হাঁস | |
---|---|
![]() | |
স্ত্রী ও পুরুষ নীলশির | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | পক্ষী |
বর্গ: | Anseriformes |
পরিবার: | Anatidae |
প্রজাতিসম্পাদনা
অ্যানাটিডি পরিবারের অন্য দুই সদস্য মরাল আর রাজহাঁস থেকে এরা আকারে ভিন্ন। হাঁসেরা এ শ্রেণীর বেশ কয়েকটি উপশ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। [২] প্রায় একই রকম দেখতে আর আচরণগত সাদৃশ্য থাকলেও পাতি কুট, মার্গেঞ্জার, ডুবুরি প্রভৃতি পাখি হাঁস নয়। [৩]
শারীরিক গঠনসম্পাদনা
শারীরিক দিক থেকে হাঁস চ্যাপ্টা ঠোঁট ও খাটো গলাবিশিষ্ট মাঝারি থেকে ছোট আকারের পাখি। স্ত্রী ও পুরুষ হাঁসের মধ্যে বৈসাদৃশ্য দেখা যায়। এদের ডাকও বেশিরভাগক্ষেত্রে ভিন্ন। পুরুষ হাঁস বছরে দুইবার পালক বদলায়। স্ত্রী হাঁস একসাথে অনেকগুলো ডিম পাড়ে এবং ডিমের খোলস রাজহাঁস বা মরালের মত খসখসে নয়, মসৃণ। বেশিরভাগ হাঁসই জলচর; স্বাদুপানি আর লোনাপানি দুই ধরনের পরিবেশেই এরা বিচরণ করতে পারে। [৪]
হাঁসের খাবারসম্পাদনা
বিলেতি রাজ হাঁস (গিস) ছাড়া সব জাতের হাঁসই উভয়ভোজী। অর্থাৎ ওদের খাবারে আমিষ এবং শ্বেতসার দুটো খাদ্য উপাদানেরই আধিক্য রয়েছে। এককথায় হাঁসের খাবারটা হবে মুরগির কায়দায়। তবে হাঁসের খাবার সবটাই মুরগির মত নয়। তাই মুরগির সুষম খাদ্য হাঁসকে খাওয়ালে হাঁসের স্বাবিক উৎপাদন পাওয়া যাবে না। তবে দেশী হাঁসকে ডিমের জন্য খাবার দিতে হবে- চালের কুড়ো, যে- কোন খোল (রেডি মহুয়া বাদ দিয়ে), আটার ভূষি, মাছ-মাংসের ফেলনা বা ফেলে দেওয়া জিনিস এবং প্রচুর গেঁড়ি, শামুক।
পৃথিবীর বিভিন্ন জাতের হাঁসসম্পাদনা
তিন ধরনের হাঁস আছে পৃথিবীতে-
- মাংসের জন্য বিখ্যাত,
- ডিমের জন্য বিখ্যাত এবং
- ডিম এবং মাংস দুটি জিনিসই একই ধরনের হাঁসের কাছে পাওয়ার জন্য বিখ্যাত। [১]
মাংসের জন্যে বিখ্যাত হাঁসগুলিসম্পাদনা
- পিকিং,আয়লেশবারি, মাসকোভি, রুয়েল ক্যায়ুগা, সুইডেন হাঁস। মাংসের জন্য বিখ্যাত হাঁসগুলির মদ্দার ওজন ৫ কেজি হলে মাদি হবে ৪ কেজি।
- ডিমের জন্য বিখ্যাত হাঁস এটাই আর সেটা হলো- ”ইন্ডিয়া রানার” হাঁস নয় তো যেন আগের দিনের গ্রামের ডাক হরকরা।
পিঠে থলে বোঝাই জিনিসপত্র, আর মাথাটা উঁচুতে। ইন্ডিয়ান রানার এর রং তিন রকম- সাদা, পাঁশুটে অথবা সারা পিঠে পেনসিলের শিষের মতো দাগ কাটা।
- মাংস এবং ডিমের জন্য বিখ্যাত খাঁকি ক্যাম্পবেল হাঁস সৃষ্টিহয়েছে দুটি হাঁস থেকে। ইন্ডিয়ান রানার এবং রুয়েল ক্যায়ুগা।
প্রথমটা ডিমের জন্য এবং পরেরটা মাংসের জন্য বিখ্যাত। খাঁকি ক্যাম্পবেল হাঁসটি সষ্টি করেন তৎকালীন ভারতীয় ব্রিটিশ রাজ্যপাল পত্নী মিসেস ক্যাম্পবেল। হাঁসটির রং খাকি বা ছাই ছাই বাদামি। [১]
হাঁসের বাসস্থানসম্পাদনা
নিচু, উচু, স্যাতসেতে বা জলো এবং শুকনো খটখটে- প্রায় সবরকম জায়গায় হাঁস পালন করা যায়। বরঞ্চ জলো বা সঁযাতসেতে জায়গা ওরা পছন্দ ও করে। বড় বড় ফলের ঝুড়ি, কাঠের বাক্র, তেলের ড্রাম বা পালনকারীর সুবিধামতো কোন একটা জায়গা হাঁসকে দিলেই চলবে। হাঁসের স্বভাব হলো ঘরে মাথা উঁচু করে ঢোকা। ঘরের বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রন। হাঁসের ঘরে অহেতুক আলো না দিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকার রাখতে হবে ।
বয়স্ক হাঁস পিছু ২ থেকে ৩ ব: ফু: জায়গা দিতে হবে। বাচ্চা মাদির জন্য দেবেন ১ ব: ফু:। আবার যদি পাকাপোক্ত ঘর করে ওদের রাখতে হয় তবে মেঝেয় মুরগির বিছানা করার কায়দায় খড়/বিচুলি শুকনো পাতা পেতে দিতে হবে। বিছানার গভীরতা ৫/৬ ইঞ্চি হলেই যথেষ্ট। এই ব্যবস্থায় হাঁসের ডিম ভাঙ্গবে না। আবার গড়িয়ে নাগাল ছাড়িয়ে অন্য কোথাও যাবে না। রাতের আশ্রয় যদি শুধু হাঁসদের দিতে হয় তবে সুরক্ষার ব্যাবস্থার করতে হবে। বিশেষ করে শেয়ালের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য অতিরিক্ত নজর দেওয়া উচিত। [১]
হাঁসের প্রজনন প্রক্রিয়াসম্পাদনা
প্রজনন কাজে পানি প্রয়োজন হয় জলকেলির জন্য। জলকেলি ছাড়া মাদি – মদ্দা প্রজননে উৎসাহ পায় না। দশটি মাদির পেছনে একটি মদ্দা যথেষ্ট। উন্নত জাতের হাঁস সাড়ে চার মাসে এবং দেশী হাঁস ছয় মাস বয়সে ডিম দেয়। প্রতিটি ডিমের ওজন ৫০ থেকে ৬০ গ্রাম।
ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা তৈরি করতে হলে সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি মুরগির সাহায্য নেওয়া। একটি মুরগি দশটি নিষিক্ত ডিমে তা দিতে পারে। হাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা বের হতে ২৮ দিন সময় নেয়। ডিম তা দেওয়া কালে মাঝে মাঝে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। সপ্তাহে দু -তিন বার। [১]
ডিম সংরক্ষণসম্পাদনা
ডিম পচতে না দিয়ে খাওয়ার যোগ্য হিসেবে নানা উপায়ে রাখা যায়। ফ্রিজে সপ্তাহ খানেক গরমের দিনে রাখা যাবে। যে অবস্থায় ডিম সংরক্ষন করা হোক না কেন, মূল উদ্দেশ্য হলো ডিমের মাথা মোটা অংশটায় বাতাস বেশি করে জমবে। ডিম সংরক্ষণ করার উপায় আরো হলো- ডিমে চুনের পানি মাখিয়ে রাখা বা প্যারাফিনে ডুবিয়ে নেওয়া।ওয়াটার গ্লাস বিকারক দিয়ে ও ডিম সংরক্ষণ করা যায়। [১]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "হাঁস পালন ও তার পরিচর্যা"। এগ্রোবাংলা। ২০২০-০৬-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-১২।
- ↑ মনোনেশ দাস (২০১৬-০২-১১)। "ময়মনসিংহে হাঁস"। blog.bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-১২।
- ↑ "Duck (bird)"। Encyclopaedia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুলাই ২০১৩।
- ↑ মনোনেশ দাস (২০১৬-০২-১১)। "ময়মনসিংহে হাঁস"। blog.bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-১২।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
উইকিঅভিধানে হাঁস শব্দটি খুঁজুন। |
উইকিমিডিয়া কমন্সে হাঁস সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
উইকিবইয়ের রান্নার বইগুলোতে নিম্নের বস্তুটির ওপর রেসিপি রয়েছে: |
- Media related to the Anatidae on the Internet Bird Collection.
- list of books
- Ducks on postage stamps
- গুটেনবের্গ প্রকল্পে Ducks at a Distance, by Rob Hines - A modern illustrated guide to identification of US waterfowl.
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |