হলদে পাখি

পাখি প্রজাতি

হলদে পাখি (বৈজ্ঞানিক নাম: Oriolus xanthornus) (ইংরেজি: Black-hooded Oriole) বা কালোমাথা বেনেবউ Oriolidae (ওরিওলিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Oriolus (ওরিওলাস) গণের অন্তর্গত এক প্রজাতির হলুদ বৃক্ষচর পাখি।[২][৩] এরা কুটুম পাখি নামেও পরিচিত।[৪] হলদে পাখির বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ হলুদ সোনাবউ (লাতিন: oryolus = সোনাবউ; গ্রিক: xanthos = হলুদ, ornis = পাখি)।[৩] পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও দক্ষিণদক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। সারা পৃথিবীতে প্রায় ৪৩ লক্ষ ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এরা বিস্তৃত।[৫] বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা বাড়ছে না কমছে সেব্যাপারে বিশেষ কিছু জানা যায় নি; তবে এরা একদম আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে।[১] বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটিকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয় নি।[৩]

কালোমাথা বেনেবউ/হলদে পাখি
Oriolus xanthornus
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: পক্ষী
বর্গ: Passeriformes
পরিবার: Oriolidae
গণ: Oriolus
প্রজাতি: O. xanthornus
দ্বিপদী নাম
Oriolus xanthornus
(Linnaeus, 1758)
হলদে পাখির ডাক

বিস্তৃতি ও উপপ্রজাতি সম্পাদনা

হলদে পাখি বাংলাদেশের সব বিভাগের গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়।[৩] এছাড়া ভারত, ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, কম্বোডিয়া, লাওসভিয়েতনামেও এদের দেখা যায়।[১] এ প্রজাতিটির মোট পাঁচটি উপপ্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে। এরা হল:

বিবরণ সম্পাদনা

ডানা ও পুচ্ছে কালো রঙসহ দেহের বাকি অংশ সোনালি হলুদ রঙের চোখে স্পষ্ট কালো রেখা দেখা যায়। স্ত্রী পাখি পুরুষের তুলনায় অপেক্ষাকৃত ফ্যাকাসে ও অধিক সবুজ রঙের। এটি কর্কশ স্বরে ‘চীয়া’ বোলে ডাকে এবং ‘পীলোলো’ শব্দে শিস দেয়। কীটপতঙ্গ, ফল ও ফুলের নির্যাস আহার করে। এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে বাসা বাঁধে। ২-৩টি ডিম পাড়ে। বাসার সব কাজে স্ত্রী-পুরুষ উভয়ে অংশ নেয়। দেশের উত্তর অঞ্চলে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত।

মাথা, গলা ও ঊর্ধ্ব-বক্ষ, ডানা ও পুচ্ছে কালো রংসহ দেহের অবশিষ্ট অংশ উজ্জ্বল সোনালি হলুদ রঙের। ঠোঁট গোলাপি ও চোখ গাঢ লাল। স্ত্রী ও পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম, তবে স্ত্রীর মাথার কালো রং অপেক্ষাকৃত ফ্যাকাসে। এই পাখি কর্কশ স্বরে ‘কোয়াক’ বোল তুলে ডাকে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Oriolus xanthornus"। The IUCN Red List of Threatened Species। ২০১৩-১১-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১০ 
  2. রেজা খান (২০০৮)। বাংলাদেশের পাখি। ঢাকা: বাংলা একাডেমী। পৃষ্ঠা ২১৯। আইএসবিএন 9840746901 
  3. জিয়া উদ্দিন আহমেদ (সম্পা.) (২০০৯)। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: পাখি, খণ্ড: ২৬। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩৩২। আইএসবিএন 9843000002860 |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: invalid prefix (সাহায্য) 
  4. শরীফ খান (২০০৮)। বাংলাদেশের পাখি। ঢাকা: দিব্য প্রকাশ। পৃষ্ঠা ৭১। আইএসবিএন 9844833310 
  5. "Black-hooded Oriole Oriolus xanthornus"। BirdLife International। ২০১৬-০৩-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১৪ 
  6. "Black-hooded Oriole (Oriolus xanthornus)"। The Internet Bird Collection। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১০