হরিপুর রাজবাড়ি
হরিপুর রাজবাড়ি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এই রাজবাড়ি হরিপুরের জমিদারদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত।[১] ৩ একর ২৭ শতক জমির উপর এই জমিদার বাড়িটি এবং জমিদারি পরিচালনার জন্য কাচারী, ধর্মীয় উৎসবের জন্য বিভিন্ন উপাসনলয়, বিনোদনের জন্য নাচমহল, নাগমহল, অন্দরমহল ও অন্ধকূপ ইত্যাদি স্থাপন করেছিলেন।[২]
হরিপুর রাজবাড়ি | |
---|---|
হরিপুর রাজবাড়ি | |
ধরন | প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন |
অবস্থান | হরিপুর উপজেলা |
অঞ্চল | ঠাকুরগাঁও জেলা |
পরিচালকবর্গ | বাংলাদেশ সরকার |
মালিক | বাংলাদেশ সরকার |
জমিদারির ইতিহাসসম্পাদনা
আনুমানিক ১৪০০ খ্রিস্টাব্দে ঘনশ্যাম কুন্ডু নামক একজন ব্যবসায়ী এন্ডি কাপড়ের ব্যবসা করতে হরিপুরে আসেন। সেই সময় মেহেরুন্নেসা নামে এক বিধবা মুসলিম মহিলা এ অঞ্চলের জমিদার ছিলেন। খাজনা অনাদায়ের পড়ার কারণে মেহেরুন্নেসার জমিদারির কিছু অংশ নিলাম হয়ে গেলে ঘনশ্যাম কুন্ডু কিনে নেন।[১]
নির্মাণের ইতিহাসসম্পাদনা
ঘনশ্যামের পরবর্তী বংশধরদের একজন রাঘবেন্দ্র রায় ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ব্রিটিশ আমলে হরিপুর রাজবাড়ির কাজ শুরু করেন। কিন্তু তাঁর সময়ে রাজবাড়ির সমস্ত কাজ শেষ হয়নি। রাঘবেন্দ্র রায়ের পুত্র জগেন্দ্র নারায়ণ রায় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষদিকে রাজবাড়ির নির্মাণ কাজ শেষ করেন। এসময় তিনি ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক রাজা উপাধিতে ভূষিত হন।[৩]
রাজবাড়ির বিবরণসম্পাদনা
জগেন্দ্র নারায়ণ রায়ের সমাপ্তকৃত রাজবাড়ির দ্বিতল ভবনে লতাপাতার বিভিন্ন নকশা এবং পূর্ব দেয়ালের উপরে রাজর্ষি জগেন্দ্র নারায়ণের চৌদ্দটি আবক্ষ মূর্তি আছে। তাছাড়া ভবনটির পূর্বপাশে একটি শিব মন্দির এবং মন্দিরের সামনে নাট মন্দির রয়েছে। রাজবাড়িতে ছিল একটি বিশাল পাঠাগার ছিলো যেটি কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। রাজবাড়িটির যে সিংহদরজা ছিল তাও নিশ্চিহ্ন হয়েছে। ১৯০০ সালের দিকে ঘনশ্যামের বংশধররা বিভক্ত হলে হরিপুর রাজবাড়িও দুটি আলাদা অংশে বিভক্ত হয়ে যায়। রাঘবেন্দ্র-জগেন্দ্র নারায়ণ রায় যে বাড়িটি তৈরি করেন তা বড় তরফের রাজবাড়ি নামে পরিচিত। এই রাজবাড়ির পশ্চিমদিকে নগেন্দ্র বিহারী রায় চৌধুরি ও গিরিজা বল্লভ রায় চৌধুরি ১৯০৩ সালে আরেকটি রাজবাড়ি নির্মাণ করেন যার নাম ছোট তরফের রাজবাড়ি।[১]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ গ "হরিপুর জমিদার বাড়ী"। উপজেলার তথ্য বাতায়ন। হরিপুর: উপজেলা তথ্য বাতায়ন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১২-২২।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ লতিফ, মো. আব্দুল (৬ ডিসেম্বর ২০১৬)। "হরিপুরের জমিদার বাড়ীটি সংস্কার প্রয়োজন"। banglanewsus.com। নিউ ইয়র্ক। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১২-২২।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ রায়, অজয় কুমার (আগস্ট ২০১৮)। "পুরাকীর্তির পরিচয়"। ঠাকুরগাঁও জেলার ইতিহাস (২ সংস্করণ)। ঢাকা: টাঙ্গন প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন। পৃষ্ঠা ৬৩। আইএসবিএন 978-9843446497।
উইকিমিডিয়া কমন্সে হরিপুর রাজবাড়ি সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |