স্বামী মাধবানন্দ

ভারতীয় লেখক

স্বামী মাধবানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের নবম প্রেসিডেন্ট।তিনি ১৮৮৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর শনিবার 15 ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার বাগানচড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার সন্ন্যাসী হওয়ার পূর্বে নাম ছিল নির্মল চন্দ্র বসু। তার পিতা হরিপ্রসাদ বসু। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বকীয়তার সাথে স্নাতকোত্তর হন। ছাত্রজীবনে তিনি বিবেকানন্দের রচনা পড়েছিলেন এবং রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দের আদর্শ ও বাণী দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। ১৯০৯ সালের মার্চ মাসে জয়রামবাটিতে পবিত্র মার কাছে তার দীক্ষা নেন। ১৯১০ সালের জানুয়ারিতে তিনি চেন্নাইয়ের মঠে যোগ দেন। ১৯১৬ সালের জানুয়ারিতে তিনি ব্রহ্মানন্দের কাছে সন্ন্যাসে দীক্ষা নেন। পরে তার ছোট ভাই বিমলও সন্ন্যাস গ্রহণ করে স্বামী দয়ানন্দ নামে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৩৩ সালে তিনি কলকাতায় রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্টান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

স্বামী মাধবানন্দ
চিত্র:Swami Madhavananda.jpg
স্বামী মাধবানন্দ
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম
নির্মল চন্দ্র বসু

(১৮৮৮-১২-১৫)১৫ ডিসেম্বর ১৮৮৮
মৃত্যু৬ অক্টোবর ১৯৬৫(1965-10-06) (বয়স ৭৬)
ধর্মহিন্দুধর্ম
ক্রমরামকৃষ্ণ মিশন

স্বামী মাধবানন্দ কয়েক বছর উদ্বোধন অফিসে মুখপত্র প্রকাশনায় সহায়তা করেছিলেন। পরে তাঁকে অদ্বৈত আশ্রমের প্রধান হিসাবে মায়াবতীর কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল। তিনি সেখানকার বেশ কিছু উন্নতি করেছিলেন এবং হিন্দি কবি সূর্যকান্ত ত্রিপাঠী 'নিরালা' এর সহায়তায় সম্মানয় নামে মিশনের একটি হিন্দি ভাষার মুখপত্র শুরু করেছিলেন। গুজরাটে রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দের আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি রাজকোট কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও তিনি ভূমিকা রেখেছিলেন। তাকে সান ফ্রান্সিসকো মঠে প্রচার করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেরণ করা হয়েছিল।

মাধবানন্দ ১৯২২ সালে রামকৃষ্ণ মঠের ট্রাস্টি এবং রামকৃষ্ণ মিশনের পরিচালনা কমিটির সদস্য হন।।মিশনের যুগ্ম সচিবের দায়িত্ব পালন করার জন্য ১৯২৯ সালে তাঁকে ভারতে ফিরে আসতে হয়েছিল। ১৯৩৮ সালের মে মাসে তিনি জেনারেল সেক্রেটারির দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৬২ সালের মার্চ মাসে ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি সেই কাজ করে চলেছিলেন। সাধারণ সম্পাদক হিসাবে তার কার্যকাল ছিল রেকর্ড ২৪ বছর। বিশুদ্ধানন্দের মৃত্যুর পরে ১৯৬২ সালের ৪ আগস্ট তিনি মিশনের প্রেসিডেন্ট হন।মিশনের প্রেসিডেন্ট হিসাবে মাধবানন্দ ১৯৬৩ সালে বিবেকানন্দের জন্মশতবর্ষ উদযাপনে সভাপতিত্ব করেন।

মাধবানন্দ ছিলেন কঠোর ।তিনি কাজের সময়সূচী থাকা সত্ত্বেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা জপ ও ধ্যানের অভ্যাস করতেন। তিনি ধর্মগ্রন্থে পারদর্শী ছিলেন এবং বৃহদারণ্যক উপনিষদ, ব্রহ্মসূত্র, ভাষা পরশেদা প্রভৃতি বহু শাস্ত্রের অনুবাদ করেছিলেন।

১৯৬৫ সালের ৬ অক্টোবর বুধবার ৭৬ বছর ১০ মাস বয়সে পরলোকগমন করেন।

নোয়াখালী দাঙ্গাসম্পাদনা

১৯৪৬ সালে ঘটিত নোয়াখালী দাঙ্গায় হিন্দুদের গণহত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, জোরপূর্বক ধর্মান্তর, লুটপাট এবং ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়[১]।এরকম অবস্থায় তিনি ও শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় মিলে "পূর্ববঙ্গ ও হিন্দুসমাজ" নামে একটি বই প্রকাশ করেন[২][৩]।এর ফলে হিন্দুরা স্বধর্মে ফিরে আসেন।

সম্পর্কিত লিংকসম্পাদনা

গ্রন্থ-পঞ্জীসম্পাদনা

বহিঃসংযোগসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা