স্পেস স্টোরিস  ছিল একটি পাল্প ম্যাগাজিন, অক্টোবর ১৯৫২ সাল থেকে জুন ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত যার পাঁচটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল। প্রকাশক ছিলেন স্ট্যান্ডার্ড ম্যাগাজিন, এবং সম্পাদনা করতেন স্যামুয়েল মিনেস। মিনেসের সম্পাদনার কৌশল ছিল সরাসরি কল্পবিজ্ঞানের এডভেঞ্চার গল্প গুলো প্রকাশ করা। স্বনামধন্য লেখকদের মধ্যে ছিলেন জ্যাক ভ্যান্স, গর্ডন আর. ডিক্সন এবং লে ব্রাক্লেট, যার উপন্যাস দ্য বিগ জাম্প ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।

এমস এর আঁকা ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩ সংখ্যার প্রচ্ছদ, কল্প বিজ্ঞান এর তিনটি ছক কে দেখাচ্ছে। "মহাকাশচারী, লাস্যময়ী স্বর্ণকেশী এবং পতঙ্গ চোখের ভয়ংকর দানব"[১]

প্রকাশনার ইতিহাস ও বিষয়বস্তু সম্পাদনা

১৯৫০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে কল্প বিজ্ঞান সাহিত্যের প্রকাশনা জগতে নাটকীয় পরিবর্তন হয়। ১৯৪৯ এর শুরুতে, একটি প্রধান পত্রিকা বাদে প্রায় সকল পত্রিকাই পাল্প ফরম্যাটে রুপান্তরিত হয়েছিল; ১৯৫৫ সালের শেষ দিকে, এদের বেশির ভাগের প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায় অথবা ডাইজেস্ট ফরম্যাটে পরিবর্তিত হয়।[২] পাল্প মার্কেটের এই হঠাৎ পতনের সময়ও কিছু পাল্প কল্পবিজ্ঞান পত্রিকা এই সময় প্রকাশিত হতে থাকে।[৩] স্পেস ষ্টোরিস ছিল তাদের মধ্যে একটি। এটা স্ট্যান্ডার্ড ম্যাগাজিন দ্বারা অক্টোবর ১৯৫২ সালে প্রকাশনা শুরু করেছিল, যারা আরো তিনটি কল্পবিজ্ঞান পত্রিকা প্রকাশ করছিল :স্টার্টলিং ষ্টোরিস, থ্রিলিং ওন্ডার ষ্টোরিস এবং ফ্যান্টাসটিক ষ্টোরি ম্যাগাজিন । সম্পাদক, স্যামুয়েল মিনেস ১৯৪২ সাল থেকে স্ট্যান্ডার্ড ম্যাগাজিন এ কাজ করতেন, যদিও কল্পবিজ্ঞান পাল্প পত্রিকার জন্য নয়। তবে ১৯৫১ সালে স্যাম মারুইন স্ট্যান্ডার্ড ছেড়ে গেলে তিনি কল্প বিজ্ঞান গুলো সম্পাদনার দায়িত্ব নেন।[৪]

প্রথম সংখ্যাতে মিনেস ঘোষণা দেন যে স্পেস স্টোরিস এর সম্পাদনার কৌশল হবে মূলত বিনোদনে আলোকপাত করা। এটি সেই সব পাঠকদের উদ্দেশ্যে যারা শীতল মনস্তাত্তিক, জটিল দৃষ্টান্তমূলক, সামাজিক তাৎপর্যমূলক গল্পের পরিবর্তে এ্যাকশন ও উত্তেজনা, আশ্চর্য ও রোমাঞ্চ কাহিনী, অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর ঘটনা ভালবাসেন।  পত্রিকাটির চিঠিপত্র কলামের প্রতিক্রিয়া ছিল সন্তোষজনক। অনেক ভক্তরাই মিনেসের এই ধারনাটি সমর্থন করেছিল। মিনেস ভাল লেখকদের দেখা যোগাড় করতে সমর্থ হয়ে ছিলেন। তারমধ্যে ছিলেন গরডন আর ডিক্সন, লে ব্রাকেট, জ্যাক ভেনশ এবং উইলিয়াম মরিসন। [১][৫] তবুও অল্প কিছু গল্প ছিল স্মরণীয়। পত্রিকায় প্রকাশিত সেরা গল্বের মধ্যে অন্যতম ছিল ব্রাকেট এর লেখা দ্য বিগ জাম্প, যা ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। [৬] কল্পবিজ্ঞান গবেষক ওয়েন্ডি বসফিল্ড এর মতে পত্রিকায় প্রকাশিত স্বল্প পরিচিত গল্প গুলো ছিল নীরস। কিন্তু তিনি রবার্ট জ্যাক এর লেখা "এক্সপেডিশন টু আর্থ" গল্পের প্রশংসা করেন। যে গল্পের পটভূমী ছিল একটি "কল্পবিজ্ঞান রেস্টুরেন্ট", এলিয়েন কর্মীরা  নিছক পোশাক পরা অবস্থায় থাকত।  সামান্য পার্থক্য ছাড়া এটি ছিল একটি গৎ বাধা একটি সহিংস এলিয়েন এর গল্প। বসফীল্ড অবশ্য চার্লস ফস্টার এর "দ্য স্যাটির স্টারাগেম" কে এককভাবে একটি সেকেলে যৌন বিষয়ক কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর উদাহরণ বলে গন্য করেন। এই গল্পে শুধুমাত্র মহিলাদের দ্বারা অধ্যুষিত একটি গ্রহে পৃথিবীর একদল খনি শ্রমিককে আমন্ত্রন করে, যারা তাদের জন্য স্বামী হতে পারবে। বসফীল্ড পরবর্তীকালে জোয়ানা রুশ এবং জেমস টিপ্ট্রি, জুনিয়র এর কাছে " স্টক কল্প বিজ্ঞান এর দৈন্য অবস্থার প্রকাশ" বলে মন্তব্য করেছিলেন। চিঠি পত্র কলাম ছাড়া ও মিনেস নিবন্ধ ও বিজ্ঞান রচনাবলী যোগ করেন। এপ্রিল ১৯৫৩ সংখ্যায় পুস্তক সমালোচনা কলাম যুক্ত করা হয়। এটা পরবর্তীতে বা শেষ সংখ্যায় দেখা যায় নি। তার পরিবর্তে কিছু কল্পবিজ্ঞান কার্টুন ছাপা হত।[১]

ভেতরের ইলাস্ট্রেসন গুলো ছিল ভাল মানের। শিল্পীরা ছিলে পল অরবান, ভারজিল ফিনলে, এমস এবং আলেক্স স্কোম্বারগ। প্রচ্ছদ তৈরি করতেন এমস, আরল কে বারগে  এবং ওয়াল্টার পপ, তারা ছিলেন গৎ বাধা ধরনের, এমসের করা ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩ সংখ্যার প্রচ্ছদ ও ছিল এই একই ছকের যাকে কল্পবিজ্ঞান গবেষক অয়েন্ডি বসফিল্ড বর্ণনা করেন কল্প বিজ্ঞান ছবির তিনটি ছক হিসেবেঃ "মহাকাশচারী, লাস্যময়ী স্বর্ণকেশী এবং পতঙ্গ চোখের ভয়ংকর দানব"। শুধুমাত্র শেষ সংখ্যার প্রচ্ছদ ছিল পত্রিকার ভেতরের একটি গল্প অবলম্বনে যা এমস ডিজাইন করেছিলেন। বারগে ১৯৫২ সালে মৃত্যু বরন করেন। ডিসেম্বর ১৯৫২ সংখ্যাটি ছিল স্ট্যান্ডার্ড এর জন্য করা তার শেষ প্রচ্ছদ। [১]

গ্রন্থপঞ্জির বিবরন সম্পাদনা

জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টেম্বর অক্টবর নভেম্বর ডিসেম্বর
১৯৫২ ১/১ ১/২
১৯৫৩ ১/৩ ২/১ ২/২
ইস্যু সংখ্যা স্পেস ষ্টোরিস, ভলিউম/ ইস্যু সংখ্যা। স্যামুয়েল মিনেস এর সম্পাদনায়.

স্পেস স্টোরিস তিনটি সংখ্যা নিয়ে একটি ভলিউম বেরিয়ে ছিল, এবং দ্বিতীয় ভলিউমটি ছিল দুই সংখ্যার। এটি নিয়মিত দ্বি মাসিক হিসেবে প্রকাশিত হত। পাঁচটি সংখ্যাই প্রকাশ করেছিল স্ট্যান্ডার্ড ম্যাগাজিন, কোকোমো, ইন্ডিয়ানা।সম্পাদনা করেছিলেন স্যামুয়েল মিনেস। প্রতিটি সংখ্যাই ছিল পাল্প ফরম্যাটে, মূল্য ছিল ২৫ সেন্ট, এবং প্রতিটি ছিল ১২৮ পৃষ্ঠার। [৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Bousfield (1985), pp. 591–599.
  2. Ashley (1976), p. 106.
  3. Ashley (2000), pp. 220–223.
  4. Bousfield (1985), p. 591.
  5. Ashley (2005), pp. 43−44.
  6. Stableford, Brian; Ashley, Mike (21 August 2012).
  7. Bousfield (1985), p. 599.