সেনিহা নাফিজ হিজল

তুর্কি রাজনীতিবিদ

সেনিহা নাফিজ হিজাল (১৮৯৭ – ২২ জুন ১৯৮৫) ছিলেন একজন তুর্কি স্কুল শিক্ষক এবং রাজনীতিবিদ, যিনি তুর্কি পার্লামেন্টের প্রথম ১৮ জন মহিলা সদস্যের একজন।[] []

সেনিহা নাফিজ হিজল
সেনিহা হিজল(১৯৩৫)
ট্র্যাবজনের ডেপুটি
কাজের মেয়াদ
৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৫ – ৩ এপ্রিল ১৯৩৯
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মসেনিহা নাফিজ
১৮৯৭
আদাপাজার, উসমানীয় সাম্রাজ্য
মৃত্যু২২ জুন ১৯৮৫(1985-06-22) (বয়স ৮৭–৮৮)
জাতীয়তাতুর্কি
রাজনৈতিক দলরিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সি এইচ পি)
প্রাক্তন শিক্ষার্থীদারুলফানুন
পেশারাজনীতিবিদ

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

সেনিহা নাফিজ, ১৮৯৭ সালে নাফিজ এবং তার স্ত্রী হুসাইনার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন আদাপাজারে, তৎকালীন অটোমান সাম্রাজ্যে। ফেইথ জুনিয়র হাই স্কুলে (উসমানীয় তুর্কি: Rüştiye‎) প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি মেয়েদের কারিগরি স্কুলে ভর্তি হন। এরপর ১৪ অক্টোবর ১৯১৬ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯১৭ পর্যন্ত তিনি উচ্চ শিক্ষক কলেজ (উসমানীয় তুর্কি: দারুলমুয়াল্লিমাত-ই আলিয়ে)-তে পড়াশোনা করেন। ১৯১৮ সালে, তিনি প্রথম মহিলা স্নাতকদের একজন হিসেবে দারুলফুনুন (বর্তমান ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়)-এর বিজ্ঞান অনুষদ থেকে স্নাতক হন।[]

১৯৩৪ সালের উপাধি আইন প্রণয়নের পর তিনি "হিজাল" উপাধি গ্রহণ করেছিলেন। তিনি কখনো বিয়ে করেননি। ১৯৮৫ সালের ২২ জুন হিজাল মারা যান।[]

স্কুল শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন

সম্পাদনা

তিনি জীববিজ্ঞানের একজন শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। ১৯১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি শিক্ষক কলেজের অধিদপ্তরে কর্মরত ছিলেন। ২৬ মার্চ ১৯১৯, তিনি এ জীববিজ্ঞানের শিক্ষক নিযুক্ত হন এরেনকয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে (উসমানীয় তুর্কি: Erenköy İnâs Sultanisi‎)। ১৯২২ সালের ২২ মার্চ শিক্ষাগত সাধারণ পরিদর্শক প্রশাসনে তাকে পরিদর্শক বোর্ডে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাই তিনি তুরস্কের প্রথম মহিলা শিক্ষা পরিদর্শক হয়েছিলেন। ১৯২৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি কান্দিল্লি গার্লস জুনিয়র হাই স্কুলে শিশুদের শিক্ষক এবং উপাধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে ১৯২৩ সালের ৮ নভেম্বর তিনি ইস্তাম্বুল গার্লস টিচার্স স্কুলের উপাধ্যক্ষ পদে এবং ১৯২৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর তিনি বুরসার গার্লস টিচার্স স্কুলের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পান। ১৯২৫ সালের ২৭ অক্টোবর তিনি ইস্তাম্বুল গার্লস টিচার্স স্কুলে উপাধ্যক্ষ হিসেবে ফিরে আসেন। তিনি ১৯২৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ইস্তাম্বুল এলাকার একজন মহাপরিদর্শক হয়েছিলেন। তিনি ইস্তাম্বুল সেলুক হাতুন ভোকেশনাল গার্লস স্কুলে ১৫ অক্টোবর ১৯২৮ থেকে তুর্কি সাহিত্যের শিক্ষক হিসেবে, ১ সেপ্টেম্বর ১৯২৯ থেকে ডিড্যাকটিক, পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়নের জন্য, ৬ ডিসেম্বর ১৯৩০ থেকে জীববিজ্ঞানের জন্য কাজ করেছিলেন।[]

১৯৩১ সালে তিনি ইস্তাম্বুলের শিশলিতে "ইয়েনি তুর্কিয়ে" ("নতুন তুরস্ক") নামে একটি বেসরকারি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং রাজনীতিতে প্রবেশের আগ পর্যন্ত এর অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যান।[]

রাজনীতি

সম্পাদনা

সেনিহা হিজালকে রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছিল। ১৯৩৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের পর তিনি ট্র্যাবজনের ডেপুটি হিসেবে ৫ম সংসদে প্রবেশ করেন।[] তিনি তুর্কি সংসদের প্রথম ১৮ জন মহিলা সদস্যের মধ্যে একজন হয়েছিলেন।[]

চার বছর ব্যাপী সংসদীয় সময়কালে, তিনি শিক্ষা কমিটির অংশ ছিলেন এবং পাশাপাশি অন্যান্য অস্থায়ী কমিটিতেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৩৬ সালের ১৩ জুন তিনি শিশুদের সুরক্ষার জন্য সমাজের কংগ্রেসে যোগ দেন এবং প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্রীয় বোর্ডের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।

১৯৩৯ সালের সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত তার রাজনৈতিক জীবন শেষ হয়, যার তারিখ ছিলো ১৯৩৯ সালের ৩ এপ্রিল।[]

পূর্বের পেশায় ফিরে আসা

সম্পাদনা

রাজনীতি ছাড়ার পর তিনি তাঁর পূর্বের পেশায় ফিরে আসেন এবং ২৭ জুলাই ১৯৩৯ তারিখে শিক্ষা পরিদর্শক হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এরপর তিনি ইস্তাম্বুল বেওলু গার্লস হাই স্কুলে জীববিজ্ঞানের শিক্ষক নিযুক্ত হন। ১৯৫৩ সালের ২০ জানুয়ারি বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে ইস্তানবুল আতাতুর্ক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় করা হয়। অবশেষে তিনি ১৯৫৪ সালের ৩ অক্টোবর অবসর গ্রহণ করেন।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Tarihe yön veren kadınlar"হুররিয়েত (তুর্কি ভাষায়)। ৮ মার্চ ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ১৩ অক্টোবর ২০১৮ 
  2. Duroğlu, Sibel (২০০৭)। "Türkiye'de İlk Kadın Milletvekilleri" (পিডিএফ) (তুর্কি ভাষায়)। সামাজিক বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়: ১১০–১১৩। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০১৮