সেক্স অন দ্য মুন

বেন মেজরিকের বই

সেক্স অন দ্য মুন: দি অ্যামেজিং স্টোরি বিহাইন্ড দ্য মোস্ট অডাশাস হিস্ট ইন হিস্ট্রি (ইংরেজি: Sex on the Moon: The Amazing Story Behind the Most Audacious Heist in History) হলো ২০১১ সালে প্রকাশিত মার্কিন লেখক বেন মেজরিকের একটি বই। বেন মেজরিক দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস বেস্টসেলার বই ব্রিঙ্গিং ডাউন দ্য হাউজদি অ্যাক্সিডেন্টাল বিলিয়নিয়ার্স গ্রন্থেরও রচয়িতা। সেক্স অন দ্য মুন বইয়ে নাসার জনসন স্পেস সেন্টারের ভল্ট থেকে সহযোগিতামূলক শিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষার্থী স্পেস সেন্টারের একজন পরিচিত শিক্ষানবিশের সহায়তায় একটি মঙ্গলগ্রহের উল্কাপিণ্ডের সাথে চাঁদ থেকে আনা পাথর চুরির ঘটনা বিধৃত হয়েছে।[১]

সেক্স অন দ্য মুন: দি অ্যামেজিং স্টোরি বিহাইন্ড দ্য মোস্ট অডাশাস হিস্ট ইন হিস্ট্রি
প্রথম সংস্করণের প্রচ্ছদ
লেখকবেন মেজরিক
মূল শিরোনামSex on the Moon: The Amazing Story Behind the Most Audacious Heist in History
দেশমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ভাষাইংরেজি
বিষয়চুরি হওয়া চান্দ্রপ্রস্তর
ধরনবাস্তব তথ্যভিত্তিক
প্রকাশকডাবলডে
প্রকাশনার তারিখ
১২ জুলাই ২০১১ (2011-07-12)
মিডিয়া ধরনমুদ্রিত
পৃষ্ঠাসংখ্যা৩০৪
আইএসবিএন৯৭৮-০-৩৮৫-৫৩৩৯২-৮
ওসিএলসি৬৬৬২৩০৪১১
পূর্ববর্তী বইদি অ্যাক্সিডেন্টাল বিলিয়নিয়ার্স 
পরবর্তী বইস্ট্রেট ফ্লাশ 

বইটির ভাষা অত্যধিক আবেগপ্রবণ ও উপমামিশ্রিত (পার্পল প্রোজ) হওয়ায়, বিশেষ করে তস্করদলের প্রধানের কণ্ঠে মাত্রাতিরিক্ত অনুকম্পার জন্য সমালোচকদের থেকে সর্বসাকল্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া লাভ করে।

সারাংশ সম্পাদনা

বইয়ের প্রধান চরিত্রগুলো হলো ইউনিভার্সিটি অব উটাহ পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী থাড রবার্টস ও হিউস্টনে নাসায় কাজ করা তার এক বন্ধু (দুইজনই অনেক বড় কিছু করতে চায়, বিশেষ করে নভোচারী হতে চায়), রবার্টের প্রেমিকা রেবেকা,[২] এবং রেবেকার বান্ধবী সান্দ্রা[২] ও গর্ডন ম্যাকহোর্টার। এই দলটি জনসন স্পেস সেন্টারের ৩১ নম্বর ভবন থেকে চাঁদের কিছু নমুনা চুরি করে এবং মূল্যবান পাথরগুলো বিছানায় বিছিয়ে যৌনকর্ম সম্পন্ন করে। এফবিআই অরল্যান্ডো থেকে তাদের গ্রেফতার করে এবং সাজা প্রদান করে।[২][৩] বইয়ে থাডের জেলমুক্তির ঘটনাও বর্ণনা করা হয়েছে।

সমালোচনা সম্পাদনা

দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইলে প্রকাশিত সমালোচনায় বইটিকে “বাস্তবতাবাদী ধারায়, রঙিন-সজ্জায় সজ্জিত ও বঙ্কিম চিত্রনাট্যে প্রাচুর্যপূর্ণ” বলে মন্তব্য করে; কিন্তু থাড রবার্টস কেন যৌনকর্মে লিপ্ত হওয়ার জন্যই চান্দ্রপ্রস্তর চুরি করতে উদ্যোগী হলো, বইটি তার কোনো ব্যাখ্যা দিতে বা এ নিয়ে যথাযথ গবেষণা করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে সমালোচনা করে।[৪] দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস তাদের প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে মেজরিকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যাখ্যামূলক ও নাটুকে লেখার সমালোচনা করে। এমনকি রবার্টস ও সম্পূর্ণ বইটির প্রসঙ্গ, মূলভাব ও রচনাশৈলী ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গের জীবনী নিয়ে লেখা বেন মেজরিকের পূর্ববর্তী বই দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল বিলিয়নিয়ার্স-এর অনুরূপ বলে মন্তব্য করে।

সেক্স অন দ্য মুন বইয়ের বর্ণনাভঙ্গিকে “কুকি-কাটার” হিসেবে এবং রবার্টসের চিন্তাভাবনাকে “‘কুল’ (cool) সাজা ও ‘হট বেবিস’-দের (hot babes) আকৃষ্ট করার অভিপ্রায়” হিসেবে বর্ণনা করা হয়। সমালোচনায় আরও বলা হয় যে, বইটি শুধু ঘটনায় নাটকীয়তায় প্রাধান্য দিয়েছে; অথচ এই ঘটনার ফলে নাসায় রবার্টসের প্রশিক্ষক এভারেট কে গিবসনের ত্রিশ বছরের গবেষণাপত্র ধ্বংস হয়ে যায়, তা সম্পূর্ণ উপেক্ষিত হয়েছে।[৫] দি এ.ভি. ক্লাব সেক্স অন দ্য মুনদি অ্যাক্সিডেন্টাল বিলিয়নিয়ার বই দুইটি এবং তাতে রবার্টস ও জাকারবার্গের চরিত্র বিশ্লেষণ করে। এ.ভি. ক্লাবের মতে, “উপন্যাস ধাঁচে বাস্তব তথ্যনির্ভর কাহিনি অনেক সময়ই অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে; কিন্তু শক্তিশালী কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে রবার্টসের আখ্যান বইটির জন্য সুবিধা দিয়েছে।”[৬] ইউএসএ টুডে বইটিকে চার তারকায় দুই তারকা দেয় এবং মন্তব্য করে, “মেজরিকের লেখায় বিশ্বাসযোগ্যতার একটা কমতি থেকে যায়; তার লেখায় উত্তেজনা অতিরিক্ত, ব্যাখ্যা অতিরিক্ত, সবকিছুই অতিরিক্ত।” সমালোচনায় মেজরিকের অতিব্যাখ্যামূলক বর্ণনাভঙ্গি এবং ঘটনার কয়েক দশক পর প্রত্যক্ষ কথোপকথনের ব্যবহার অমোঘ প্রভাব বিস্তার করে; কিন্তু বইটির বিশ্বাসযোগ্যতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।[৭] সিএনএন-এ প্রকাশিত সমালোচনায় আবার মেজরিকের “তরুণ মেধাবীদের নিয়ে প্রশ্নযোগ্য ভঙ্গিমায়” লেখার অভ্যাস খুঁজে পায়।[৮] দ্য ডেইলি বিস্টে প্রকাশিত একটি সমালোচনায় রবার্টসের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লিখার বিষয়টিকে “ন্যারেটিভ পিটফল” হিসেবে ব্যাখ্যা করে, যাতে বইয়ের কাহিনি “কিছুটা বিভ্রমাত্মক” বলে মনে হয়। ফলে বইয়ে বাস্তবতা ও কৃত্রিমতার প্রভেদ করা দুষ্কর হয়ে যায়। এছাড়া মেজরিকের লেখায় অত্যধিক “সৃজনশীল স্বাধীনতা”-র চর্চা লক্ষ করা যায় বলেও মন্তব্য করা হয়। রবার্টসের প্রতি মেজরিকের অতিমাত্রায় সহানুভূতিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি এবং তার প্রতি যুক্তিপ্রয়োগের প্রচেষ্টারও সমালোচনা করা হয়।[৯] বোস্টন সাময়িকী মেজরিকের বইয়ে “উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ভাড়াটে” শব্দ প্রয়োগ দেখা যায় বলে মন্তব্য করে। দ্রুতপঠনের জন্য বইটিকে অতিমাত্রায় ব্যাখ্যামূলক বলে মন্তব্য করে এবং রবার্টসের কৃতকর্মের জন্য কোনো নৈতিক বাধার প্রকাশ করা হয়নি বলেও সমালোচনা করে।[১০] কিরকুস রিভিউজ মন্তব্য করে যে রবার্টসের চৌর্যবৃত্তিই বইয়ের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ। কিন্তু বইয়ের ভাষা “অতিমাত্রায় উত্তেজনাপূর্ণ” (ওভারহিটেড)। এছাড়া তারা মন্তব্য করে যে, মেজরিক রবার্টসকে শেষপর্যন্ত নায়ক (হিরো) হিসেবে ফুটিয়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন।[১১]

চলচ্চিত্রায়ন সম্পাদনা

২০১১ সালে সনি পিকচার্স এন্টারটেইনমেন্ট চলচ্চিত্রায়নের জন্য বইটিকে নির্বাচন করেছিল। সনি পিকচার্স মার্ক জুকারবার্গের জীবনীভিত্তিক মেজরিকের বই অবলম্বনে দ্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিল।[৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Mezrich, Ben (২০১১)। Sex on the Moon । Doubleday। আইএসবিএন 978-0-385-53392-8 
  2. "THE CASE OF THE STOLEN MOON ROCKS: Last of 3 NASA interns sentenced for grievous theft"। Federal Bureau of Investigation। নভেম্বর ১৮, ২০০৩। ২০০৯-০৫-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-১৩ 
  3. "Confessions of a moon rock thief"। CBSnews.com। জুলাই ১০, ২০১১। অক্টোবর ১, ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রু ২১, ২০১২ 
  4. Roberts, S (২০১১-০৭-২২)। "In 'Sex on the Moon', lunacy meets geology"The Globe and Mail। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৭-২২ 
  5. Maslin, J (২০১১-০৭-১৩)। "Supposition as Research: A Sort-of-True Story About NASA and a Thief"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৭-২২ 
  6. Kaiser, R (২০১১-০৬-২০)। "Ben Mezrich: Sex On The Moon"The A.V. Club। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৭-২২ 
  7. Minzesheimer, B (২০১১-০৭-১৮)। "'Sex on the Moon'? Wait for the movie"USA Today। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৭-২২ 
  8. DuChateau, C (২০১১-০৭-১৭)। "Out of this world heist leads to 'Sex on the Moon'"। CNN 
  9. Crocker, L (২০১১-০৭-১৯)। "Sex on a Pile of Moon Rocks"The Daily Beast। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৭-২২ 
  10. Reed Baker, M (২০১১-০৭-১৩)। "Book Review: Ben Mezrich's 'Sex on the Moon'"Boston। ২০১৫-০৯-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৭-২২ 
  11. "SEX ON THE MOON: The Amazing Story Behind the Most Audacious Heist in History"Kirkus Reviews। ২০১১-০৭-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৭-২২ 

আরও পড়ুন সম্পাদনা