সিফিলিস

একটি যৌন বাহিত রোগ

সিফিলিস ( বাংলায় ফিরিঙ্গি রোগ বা গর্মি রোগ ) স্পিরোসেত ব্যাকটেরিয়া ট্রেপোনেমা পেলিডাম উপজাত পেলিডাম দ্বারা সৃষ্ট একটি যৌনবাহিত রোগ। সংক্রমণের প্রাথমিক পথ যৌন সংস্পর্শ;তাছাড়াও রক্ত পরিসঞ্চালন, চুম্বন,চামড়ার আঘাতপ্রাপ্তি এবং গর্ভাবস্থায় বা জন্মের সময় মায়ের কাছ থেকে ভ্রূণে সংক্রমিত হতে পারে। যাকে কনজেনিটাল সিফিলিস বলা হয়।

সিফিলিস
Treponema pallidum.jpg
বিশেষত্বInfectious disease

সিফিলিসের লক্ষণ এবং উপসর্গের উপর নির্ভর করে একে চারটি পর্যায়ে ভাগ করা যায় (প্রাথমিক, দ্বিতীয়, সুপ্ত, এবং তৃতীয় পর্যায়)। প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণত একটি একক যৌনব্যাধিজনিত ক্ষত (একটি দৃঢ়, যন্ত্রণাহীন, চুলকানিবিহীন চামড়ার ক্ষত), দ্বিতীয় পর্যায়ের সিফিলিসে একটি বিকীর্ণ ফুসকুড়ি যা ঘন ঘন হাতের তালুতে এবং পায়ের পাতার নিচের অংশে, সুপ্ত সিফিলিসে সামান্য বা কোনো লক্ষণবিহীন অবস্থা, তৃতীয় পর্যায়ের সিফিলিসে গুমাস, স্নায়বিক বা হৃৎপিণ্ডঘটিত উপসর্গ দেখতে পাওয়া যায়। যাইহোক, এর ঘন ঘন এটিপিকাল উপস্থাপনা কারণে তা মহান অনুকারক হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছে।

রোগের স্বাভাবিক গতি প্রকৃতিসম্পাদনা

অনিরাপদ যৌন মিলন ---> প্রাথমিক ক্ষত(chancre) গঠন ---> ২-৬ সপ্তাহের মধ্যে রোগী সেড়ে ওঠে ---> প্রাথমিক ক্ষত হওয়ার ৬-৮ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় পর্যায়ের সিফিলিস হয় ---> রোগী আবার সেড়ে ওঠে ---> প্রাথমিক সুপ্তাবস্থা ---> পরবর্তী সুপ্তাবস্থা(৩৩% ক্ষেত্রে) ---> তৃতীয় পর্যায়ের সিফিলিস।

চিকিৎসাসম্পাদনা

সিফিলিস কার্যকরভাবে এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে, বিশেষভাবে বেঞ্জাথিন পেনিসিলিন জি (বা পেনিসিলিন জি পটাসিয়াম নিউরো সিফিলিসের জন্য), বা সেফট্রায়াক্সন, এবং যাদের গুরুতর পেনিসিলিন এলার্জি আছে তাদের ক্ষেত্রে ডক্সিসাইক্লিন (গর্ভকালীন এই জাতীয় ওষুধ ব্যবহার নিষেধ) বা অ্যাজিথ্রোমাইসিন দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে। তবে বিশেষ করে মনে রাখতে হবে সিফিলিসের চিকিৎসা অবশ্যই স্বামী - স্ত্রী অথবা যৌনসঙ্গী উভয়কেই গ্রহণ করতে হবে। রোগ ভালো না হওয়া পর্যন্ত সহবাস করা যাবেনা অথবা করলেও ভালো মানের কনডম ব্যবহার করতে হবে।

গর্ভকালীন সিফিলিসের চিকিৎসাসম্পাদনা

১. পেনিসিলিন

২. পেনিসিলিন এ অ্যালার্জি থাকলে এরিথ্রোমাইসিন জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হবে।

১৯৪০-এর দশকে পেনিসিলিন ব্যাপক প্রাপ্যতার পর থেকে এ রোগ নাটকীয়ভাবে কমে যেতে থাকে কিন্তু অনেক দেশে সহস্রাব্দের শুরু থেকে আবার এ রোগ বাড়তে শুরু করে, প্রায়শই এইচআইভি ভাইরাসের সঙ্গে একযোগে। এর জন্য আংশিকভাবে দায়ী করা যায় বাছবিচারহীনভাবে যৌন সম্পর্ক বৃদ্ধি, পতিতাবৃত্তি, কনডমের ব্যবহার কমে যাওয়া, এবং সমকামীতা বিশেষ করে 'পুরুষের সাথে পুরুষের অনিরাপদ যৌন সম্পর্ক।[১][২][৩]

ইতিহাসসম্পাদনা

কলম্বাস যখন ১৫ শতকের শেষের দিকে সমুদ্রে অভিযান করেন, তখন তার নাবিকেরা ১৪৯৩ সালে পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের হাইতি দ্বীপের প্যাসিওলা হলে ফিরিঙ্গি (ফিরিঙ্গি বা উপদংশ বা গর্মি বা সিফিলিস ) রোগে সংক্রামিত হয়ে ফিরিঙ্গি রোগের জীবাণু নিয়ে আসে। ফরাসী সম্রাট অষ্টম চার্লস ১৪৯৫ সালে ইতালি আক্রমণ করেন তখন ইতালিতে এই রোগ মহামারী আকার ধারণ করে। ঐ একই সময়ে লেপেলস এও ফিরিঙ্গি রোগ মহামারী আকারে দেখা দেয়। ফরাসি সৈন্য এবং তাদের সহযাত্রীরা জার্মান, সুইডেন, ফ্লেমিশগণ এই রোগের জীবাণু সমস্ত ইউরোপে ছড়িয়ে দেন। তবে এটি সর্ব প্রথম নৌবন্দরেই বিস্তার লাভ করে।

আত্মপ্রকাশসম্পাদনা

এই রোগ দুই ভাবে আত্মপ্রকাশ করে থাকে- বিস্তীর্ণ প্রদাহ এবং স্থানীয় প্রদাহ। বিস্তীর্ণ প্রদাহতে সাধারণত নিম্নলিখিত অঙ্গসমূগ আক্রান্ত হয়ে থাকে। স্থানীয় প্রদাহতে সুস্পষ্ট ভাবে রেখায়িত ক্ষত সৃষ্টি হয়। যা হলদে এবং রাবারের মত শক্ত হয়। এক রকম খাঁজ কাটা ক্ষত সৃষ্টি হয় যার মাঝে এক ধরনের চামড়ার মত দেখায়। যকৃৎ, শুক্রাশয়, টিবিয়া, আলনা, দাঁতের চোয়ালের হাড়ে সাধারণত আক্রান্ত হয়ে থাকে। রোগের উৎস হচ্ছে, ক্ষত বা কাটা চর্ম এবং শ্লেষ্মা ঝিল্লী, লালা, বীর্য, যোনির ক্ষরণ, এবং রক্ত।

রোগের ব্যাপ্তিকালসম্পাদনা

সাধারণত ১৪-২৮ দিন কিন্তু ইহা ৯-৯০ দিন পর্যন্ত সময় লাগে ।

== রোগের কারণ ও বিস্তার ==

Treponema Pellidum এ রোগের জীবাণু, ইহা যৌনসংগমের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যৌনসঙ্গমের দরুন যৌন অঙ্গের চামড়ায় সামান্য ক্ষত হলে ঐ স্থানে জীবাণু কর্তৃক আক্রান্ত হতে পারে। কারো কারো বংশে থাকলে তার সন্তানের হতে পারে।শরীরের যে কোন স্থানের ক্ষত জায়গা দিয়েও এই জীবাণু ঢুকে রোগ সৃষ্টি করে। চুম্বনের মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। যে সকল পতিতা বা মহিলার মধ্যে এ জীবাণু আছে তাদের সাথে মুক্তভাবে সহবাস করলে এ রোগ হয়। সেবিকা, দাই, দন্ত চিকিৎসকের হাতের আঙ্গুলের দ্বারাও এ রোগ হয়ে থাকে। রক্ত আদান প্রদানের মাধ্যমে এ রোগ হয়ে থাকে। আক্রান্ত মায়ের গর্ভের শিশুর ও এ রোগ হয়ে থাকে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

লক্ষণসম্পাদনা

এ রোগ সাধারণত তিন অবস্থায় দেখা যায়। প্রাথমিক অবস্থা জীবাণুযুক্ত যোনিতে সহবাসের ফলে লিঙ্গের মাথায় বা উহার গায়ে ছোট ছোট ফুসকুড়ি ওঠে এবং ঘায়ের সৃষ্টি হয়। স্ত্রী লোকের বেলায় এ ঘা যোনিমুখ, লেবিয়া মাইনরা,জরায়ুমুখ এ আবির্ভূত হয়। প্রাথমিক অবস্থায় যে ক্ষতটি হয় তা শক্ত থাকে। চুম্বনের মাধ্যমে মুখে ও ঠোঁটে ঘা হয় । ক্ষত ২/৩ দিন নরম থাকে ও পুঁজ নির্গত হয়। ঘা টির তলদেশ শক্ত হয় এবং সাথে কুঁচকিতে বেদনাহীন স্ফীত গোটা (lymph node) তৈরী হয়। কখনো একাধিক ঘা দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় এ ঘা দেখা যায় না। ১০/১৫ দিন পর রোগীর বর্গীর চামড়া পাতলা হয়ে পেকে ওঠে। যেখানে যেখানে দেখা যায়ঃ- সাধারণত জননাঙ্গে দেখা যায়- লিঙ্গ মুন্ড(Gland Panis), যোনিমুখ(Vulva), জরায়ুমুখ(Cervix) ইত্যাদি। জননাঙ্গের বাইরে- ঠোঁট ও তালু, মুখ, স্তন এবং আঙ্গুল।

২য় অবস্থা, প্রাথমিক ক্ষত প্রকাশের ২/৩ বা ৪ মাসের পর ২য় অবস্থা শুরু হয়। দুর্বল রোগীর ক্ষেত্রে অল্প দিনে এবং বলবান রোগীর ক্ষেত্রে দেরীতে প্রকাশ পায়। এ অবস্থায় রোগীদের নানা রকম রোগ হয়। চর্ম শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী, চক্ষু, স্নায়ুমন্ডলী এবং দেহের অন্যান্য অংশে এ রোগের জীবাণু সঞ্চিত হয়। এ সময় রোগীর সামান্য জ্বর, গলায় ব্যথা, নিস্তেজ ভাব, হাত ও পায়ে বেদনা, রক্তসল্পতা, শিরঃপীড়া ও ওজন হ্রাস পায়। চর্মে যে সমস্ত পিড়কা হয় তাতে কোন চুলকানী হয় না। অনেক ক্ষেত্রে তা তামাটে বর্ণের হয়। মাস খানেক পর এ পিড়কা আপনা আপনি মিলে যায়। তখন এই পিড়কা হাত ও পায়ের তালুতে দেখা যায়। মুখের কিনারায়, মলদ্বারের কিনারায় এবং দেহের অন্যান্য ভিজাস্থানে আঁচলি জাতীয় দানা উৎপন্ন হয়। উহার নাম Condylomata lata। এভাবে ১½ বছর হতে ২ বছর কাল চলে। পরে আর তেমন কষ্ট হয় না। মহিলাদের ক্ষেত্রে লজ্জা বশত এ রোগ পুষে রাখলে যোনির মুখ বড় ও বিকৃত পিণ্ডাকৃতি হয়। অভ্যন্তর ভাগ হতে দুর্গন্ধময় ক্লেদ রস নির্গত হয়।

৩য় অবস্থা অত্যন্ত কষ্টকর ও সাংঘাতিক। এ অবস্থা ২য় অবস্থার সঙ্গে চলতে থাকে। কখনো ২য় অবস্থার পর শূরু হয়। এ অবস্থার চর্মে, চর্মের নিম্ন ভাগে, মাংসে, অস্থি, মস্তিষ্ক, মুখ, পাকস্থলী, অন্ত্র, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস ইত্যাদি আক্রান্ত হয় এবং সিফিলিস এর গামা দেখা যায়। চামড়ায় আক্রান্ত হলে তা ক্ষত হয়ে ক্লেদ বের হয়। ক্ষত বৃদ্ধি পেতে থাকলে রোগীর মুখের তালুতে আক্রান্ত হয় । নাসারন্ধ্র ও শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। মস্তিষ্কে আক্রান্ত হলে শিরঃপীড়া, স্মৃতিলোপ, আর্ধাঙ্গিক রোগ দেখা যায়। যকৃৎ বড় হয়ে পেটে শোথ হয়। হাড়ে, অস্থি, সন্ধিতে সিফিলিস এর গামা দেখা যায়। অণ্ডকোষে গামা উৎপন্ন করে এবং উহাকে বেদনাহীন ভাবে স্ফীত করে তোলে।

আধুনিক মতে, প্রাথমিক অবস্থা জীবাণু প্রবেশের ৭-৯০ দিনের মধ্যে Chancre উৎপন্ন হয়। Chancre এর বৈশিষ্ট্য হল, অনেক বেশি লাল, ব্যথাহীন, একটি ক্ষত হবে। অনির্ধারিত তল কিনারা বিশিষ্ট জলীয় পদার্থ নির্গত হয়। সাধারণত একাকি ভাল হয় তবে সেখানে গৌণ সংক্রমণহলে ব্যথা উৎপন্ন হয়।

২য় অবস্থা সাধারণত প্রাথমিক Chancre এর ৬-৮ সপ্তাহ পর শুরু হয়। সেক্ষেত্রে সাধারণ রোগ সমূহ যেমন-মাথাব্যথা সঙ্গে সামান্য জ্বর থাকে এবং অসস্তি বোধ হয়। সাধারণত ৪টি মৌলিক চিহ্ন দেখা যায়- Syphilistic Rash, সমস্ত শরীর হাত ও পায়ের তালু। এটা সাধারণত ফুসকুড়ির মত হয়। অনেক সময় ফুসকুড়িতে জল হয়। Condylomata Lata, আর্দ্র জায়গায় ফুসকুড়ি ওঠে। সাধারণত মলদ্বারের পাশে। Generalized Lymphadenopathy, সাধারণত লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাবে। Mucous Patches, মুখ, গলা ও যৌনাঙ্গের শ্লেষ্মা ঝিল্লীতে জেব্রার ন্যায় দাগ হয়।

৩য় অবস্থায় উপনিত হতে মূলত ১০ বছর বা তারো অধিক সময় লাগে। সেক্ষেত্রে নিম্নের লক্ষণ প্রকাশ পায়, চামড়া ও চামড়ার নিচের টিস্যু্‌, শ্লেষ্মা ঝিল্লী, হাড়, এক ধরনের বিকৃতিকর অবস্থা পরিলক্ষিত হয়ে তাকে Gumma বলে। প্রধান অঙ্গসমূহ আক্রান্ত হয় মূলত CNS (নিউরো সিফিলিস), CVS (কার্ডিওভাসকুলার সিফিলিস)।

সুপ্ত সিফিলিসসম্পাদনা

মূলত লক্ষণহীন অবস্থা, এটা টানা ১-৪০ বছর বা তারও বেশি সময় সুপ্তাবস্থায় থাকতে পারে।

বংশগত সিফিলিসসম্পাদনা

এ ক্ষেত্রে শিশু জন্মের সময় আক্রান্ত মায়ের কাছ থেকে অর্জন করে থাকে Transplacental Transmission বলে। এর লক্ষণ ও চিহ্ন হল বংশগত বিকৃতি, ঠোঁটে ক্ষত ঘা, দেহের যে কোনো অংশে রক্ত ক্ষরণ জনিত ক্ষত, চর্মের বিকৃতি, মানসিক বিকৃতি এবং বংশগত ভাবে পেরিকন্ড্রিয়াম, অস্থি ও তরুণাস্থিতে প্রদাহ।

বংশগত ফিরঙ্গের জটিলতা হচ্ছে আক্রান্ত মায়ের শিশুর অল্প ওজন হয় এবং জন্মের সাথে সাথে মৃত্যুবরণ করতে পারে এবং আক্রান্ত মায়ের অকাল প্রসব অথবা গর্ভপাত হতে পারে।

অনুসন্ধানী পরীক্ষাসম্পাদনা

পরীক্ষায় পজিটিভ হলে রোগ সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া যায় যে তার সিফিলিস বা ফিরিঙ্গি রোগ হয়েছে। রোগ আক্রমণের দুই সপ্তাহ পর রক্ত পরীক্ষা করলে এ রোগের জীবাণু পাওয়া যায়। তার পূর্বে রক্ত পরীক্ষা করলে কোন জীবাণু পাওয়া যাবে না।

যেসব পরীক্ষার মাধ্যমে সাধারণত সিফিলিস নির্ণয় করা যায়ঃ

১. ক্ষতস্থান থেকে রস নিয়ে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা হয় (Dark-field microscopic examination of the serum collected from lesions).
২. A direct fluorescent antibody   test.
৩. PCR(Polymerase chain reaction) পরীক্ষা।
*৪. VDRL পরীক্ষা (Veneral Diseases Research Laboratory-বহুল ব্যবহৃত পরীক্ষা)
*৫. Rapid plasma reagin পরীক্ষা।
৬. TPHA (T.pallidum haemagglutination assay) পরীক্ষা।
৭. TPPA(T. pallidum particle agglutination assay) পরীক্ষা।
৮. FTA - ABS(Fluorescent treponemal antibody-absorbed test) পরীক্ষা
৯. সুষুম্না রজ্জুর রস পরীক্ষা (CSF Study -যদি quaternary সিফিলিস হয়)
*ট্রেপোনেমা পেলিডাম ছাড়া অন্য কারণে সিফিলিস হলে সাধারণত এই পরীক্ষা করা হয়।

চিকিৎসা সূত্রসম্পাদনা

বমন, বিরেচন, রক্ত মোক্ষণ, রক্তশোধন, ব্রণরোপন কর্ম করতে হবে। পরে রোগীর অবস্থা বুঝে বৃংহণ ও রসায়ন কর্ম করাতে হবে। রস কর্পূর সেবন হিতকর।[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন]

প্রতিরোধক মূলক চিকিৎসাসম্পাদনা

প্রতিরোধক মূলক চিকিৎসার হ্মেত্রে, যৌনবাহিত রোগের প্রতি আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যৌন সঙ্গী বাছাই করতে হবে যাদের যৌন রোগ নেই। যাদের যৌন রোগ আছে তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত চিকিৎসা করতে হবে। যার স্বামী বা স্ত্রী নিজেরা ছাড়াও অন্য লোকের সাথে যৌন সঙ্গম করে তাদের রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ সম্বন্ধে নিশ্চিত হতে হবে। যারা গর্ভবতী , যে সব মহিলা বার বার স্বামী থেকে পৃথক হয়, পতিতা, রক্তদাতা, শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক, সেনাবাহিনী, পুলিশ, যাযাবর, রেস্টুরেন্ট, হোটেল কর্মকর্তা, কর্মচারী এ সকল শ্রেণীর লোকজনদের নিয়মিত VDRL Test করতে হবে। যৌনসংগমের পূর্বে কনডম, যোনীর মধ্যবর্তী জেলি এবং ক্রীম ব্যবহার করতে হবে ও সঙ্গমের পর যৌনাঙ্গ পরিষ্কার করতে হবে। লোকজনদের অবশ্যই সিফিলিসের মহামারী ও মারাত্মকতা সম্পর্কে শিক্ষা লাভ করতে হবে। পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে উপদেশ দিতে হবে। পতিতাবৃত্তি বন্ধ করা অথবা এর উপর কঠোর আইন প্রণয়ন করা অথবা শিক্ষার মাধ্যমে, চাকরির দ্বারা উচ্ছেদ করতে হবে। যৌন উত্তেজনা মূলক সাহিত্য, অশ্লীল ছবি, বই ইত্যাদি বিক্রি নিষেধ করতে হবে। বিবাহ বন্ধন ও বিবাহের পূর্বে পরীক্ষা করতে হবে। স্বামী স্ত্রী অথবা যৌন সঙ্গীদের VD Clinic এ যাওয়া এবং শিক্ষা লাভ করা উচিত। রোগের চিকিৎসা ও দেখাশোনা সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া।

বংশগত সিফিলিসের প্রতিরোধ হ্মেত্রে, গর্ভের প্রথম তিন মাসের সকল গর্ভবতী মহিলার পরীক্ষা ও W.R Test (Wassermann Reaction)করতে হবে সিফিলিস নির্ণয়ের জন্য। যদি কোন মহিলার সিফিলিস ধরা পড়ে তাহলে তার তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা করতে হবে। জন্মের পর নবজাতক কে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরীক্ষা করতে হবে এবং রোগ ধরা পড়লে চিকিৎসা করতে হবে। এ রোগের মারাত্মকতা সম্পর্কে শিক্ষা দিতে হবে।

আরও পড়ুনসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. Coffin, LS (জানুয়ারি ২০১০)। "Syphilis in Drug Users in Low and Middle Income Countries"The International journal on drug policy21 (1): 20–7। ডিওআই:10.1016/j.drugpo.2009.02.008পিএমআইডি 19361976পিএমসি 2790553   অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  2. Gao, L; Zhang, L; Jin, Q (সেপ্টেম্বর ২০০৯)। "Meta-analysis: prevalence of HIV infection and syphilis among MSM in China"। Sexually transmitted infections85 (5): 354–8। ডিওআই:10.1136/sti.2008.034702পিএমআইডি 19351623 
  3. Karp, G; Schlaeffer, F; Jotkowitz, A; Riesenberg, K (জানুয়ারি ২০০৯)। "Syphilis and HIV co-infection"। European journal of internal medicine20 (1): 9–13। ডিওআই:10.1016/j.ejim.2008.04.002পিএমআইডি 19237085 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা

টেমপ্লেট:Diseases of the skin and appendages by morphology

টেমপ্লেট:Gram-negative non-proteobacterial bacterial diseases টেমপ্লেট:Diseases of maternal transmission