সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত কলেজ
(সরকারী শহীদ বুলবুল কলেজ থেকে পুনর্নির্দেশিত)

সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ পাবনা জেলার অন্যতম সেরা কলেজগুলোর একটি। [১]

সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ
প্রাক্তন নাম
ইসলামিয়া কলেজ
নীতিবাক্যজ্ঞানার্জনে উন্নতি
ধরনসরকারি কলেজ
স্থাপিত১ জুলাই ১৯৬৮
অধ্যক্ষপ্রফেসর মোঃ বাহেজ উদ্দিন
শিক্ষার্থী৬০০০+
অবস্থান
আতাইকুলা সড়ক, পাবনা

২৪°০০′২৫″ উত্তর ৮৯°১৪′২৬″ পূর্ব / ২৪.০০৬৮১২৫° উত্তর ৮৯.২৪০৪৩৭৫° পূর্ব / 24.0068125; 89.2404375
শিক্ষাঙ্গনশহর
ভাষাবাংলা
ইআইআইএন১২৫৬৬৪
সংক্ষিপ্ত নামবুলবুল কলেজ
ওয়েবসাইটwww.sbgcp.edu.bd
মানচিত্র

ইতিহাস সম্পাদনা

১৯৬৮ সালের ১ জুলাই ১৬৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে বর্তমান সরকারী শহীদ বুলবুল কলেজ পাবনায় যাত্রা শুরু করে। ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠালগ্নে কলেজটির নাম ছিল ইসলামিয়া কলেজ । কালাতিক্রমে নামে ঐতিহ্যে, গুনে মানে এখন উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পাবনার তথা উত্তরবঙ্গ এবং রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড ও রাজশাহী বিভাগের সেরা কলেজগুলোর একটি।

নামকরণ সম্পাদনা

১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠালগ্নে কলেজটির নাম ছিল ইসলামিয়া কলেজ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালে কলেজটির নামকরণ করা হয় শহীদ বুলবুলের নাম এ। শহীদ বুলবুলের পুরো নাম ছিল জি.এম. শামসুল আলম বুলবুল। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় কলেজটির ছাত্র ছিলেন।

শহীদ বুলবুল সম্পাদনা

১৯৫৪ সালের মার্চ পাবনা জেলার সুজানগর থানার ভাটিকয়া গ্রামে জন্ম হয় শহীদ বুলবুল এর। তার পুরো নাম হলোঃ জি.এম. শামসুল আলম বুলবুল। বিদ্যানুরাগী মরহুম আব্দুস শুকুর মিয়ার ৭ম সন্তান হিসেবে ভাই-বোনদের মধ্যে বুলবুল ছিলেন অতি আদরের।

প্রাথমিক জীবন নিজ গ্রামে শুরু হলেও পাবনা শহরের শালগাড়ীয়ায় বড় ভগ্নীপতির বাসায় থেকে শহরের মহিম চন্দ্র জুবলি স্কুল থেকে তিনি ১৯৬৯ সালে অনুষ্ঠিত মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি তৎকালীন ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমানে বুলবুল কলেজ) ভর্তি হন।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে জি.এম. শামসুল আলম বুলবুল তার বন্ধু ও সহপাঠীদের সংগঠিত করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ থেকেই পাবনা শহরে প্রবেশের চেষ্টা করে কিন্তু বুলবুলের নেতৃতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে তাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

২৭ শে মার্চ বিকাল থেকেই বর্তমান শহরের বি.আর.টি.সি. (Bangladesh Road and Transport Corporation-B.R.T.C.) ডিপোর কাছে মুক্তি সেনাদের সাথে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর যুদ্ধ হয়। বুলবুল ও তার বন্ধু তাতে আহত হন। পরে বুলবুল মারা যান।

শহীদ পরিবারের অবদান সম্পাদনা

১৯৭২ সালে শহীদ বুলবুলের নামে কলেজটির নামকরণের পরে ১৯৭৭ সালে কলেজের উন্নয়নকল্পে শহীদ বুলবুলের মা নিজ গ্রামে অবস্থিত ১০ (দশ) বিঘা জমি কলেজের নামে দান করেন।

একীভবন ও জাতীয়করণ সম্পাদনা

১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত পাবনা (দিবা/নৈশ) কলেজটিকে ১৯৭৬ সালে শহীদ বুলবুল কলেজের সাথে একীভূত করা হয়। ১৯৮৩ সালে কলেজটি জাতীয়করণ করার পর সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ নামেই এর অগ্রযাত্রা পূর্ণোদ্দমে চলতে থাকে। সরকারি পর্যায়ে পাবনা শহরের আতাইকুলা রোড এ নতুন ভবন তৈরির পরে আব্দুল হামিদ রোডে অবস্থিত কলেজের পুরাতন ভবনটি ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

শিক্ষা কার্যক্রম সম্পাদনা

প্রতিষ্ঠালগ্ন হতেই প্রতিষ্ঠানটির মূল কার্যক্রম ছিল একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিকে নিয়ে। বর্তমানে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসা শিক্ষা তিনটি বিভাগই রয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে কলেজটিতে। আরও রয়েছে অনেক দক্ষ শিক্ষকবৃন্দ।

ভর্তি কার্যক্রম সম্পাদনা

বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে কলেজটিতে বর্তমানে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভর্তি করা হয়ে থাকে। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ভর্তির জন্য প্রথমে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। পরবর্তীতে আবেদন অনলাইনেই যাচাই-বাছাই এর পর যাদের আবেদন গৃহীত হয় শুধুমাত্র তারাই ভর্তি হতে পারে। ভর্তির এ কার্যক্রমটিও অনলানেই হয়ে থাকে।

২০১৪ সালে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, পাবনাতে পুনরায় একাদশ-দ্বাদশ চালু হয় ফলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা বুলবুল কলেজে ভর্তি হতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। এর ফলে পরবর্তীতে কলেজটির ফলাফল বিপর্যয় দেখা দেয়।

পোশাক সম্পাদনা

বর্তমানে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত ড্রেস/পোশাক পড়া বাধ্যতামূলক।

  • ছেলেদের পোশাক:
  1. নীল শার্ট
  2. কালো প্যান্ট
  3. কালো জুতা

ফলাফল সম্পাদনা

২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা (এইচ.এস.সি.) তে বিজ্ঞান বিভাগ এর ৬৫০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ১৩৩ জন A+ পায়

উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী সম্পাদনা

  • জি.এম. শামসুল আলম বুলবুল। (বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রাণ উৎসর্গকারী)

গ্যালারি সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Institute Basic Info"Education Management Information System। Directorate of Secondary And Higher Education। ৩১ মার্চ ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০১৯