শেনাল সারাহান (জন্ম: ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮) হচ্ছেন একজন তুর্কি আইনজীবী, নারীবাদী এবং মানবাধিকার কর্মী। তিনি ১৯৯৭ সালে রবার্ট এফ কেনেডি মানবাধিকার পুরস্কার জিতেছিলেন। এই পুরস্কারটি তিনি তার সহকর্মী অ্যাটর্নি সেজগিন তানরাকুলুর সাথে যৌথভাবে পেয়েছিলেন। বছর এমন একজন ব্যক্তিকে একটি পুরস্কার দেওয়া হয় যার সাহসী সক্রিয়তা মানবাধিকার আন্দোলনের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে এবং রবার্ট এফ কেনেডির দৃষ্টিভঙ্গি এবং উত্তরাধিকারের চেতনায় বিদ্যমান রয়েছে।[১]

শেনাল সারাহান
তুরস্কের মহান জাতীয় সভার সদস্য
কাজের মেয়াদ
৭ জুন ২০১৫ – ২৪ জুন ২০১৮
সংসদীয় এলাকাআঙ্কারা (২) (June 2015, Nov 2015)
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1948-02-17) ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ (বয়স ৭৬)
জাতীয়তাতুর্কি
পেশাআইনজীবী
পুরস্কাররবার্ট এফ কেনেডি মানবাধিকার পুরস্কার (1997)

জীবনী সম্পাদনা

শেনাল সারাহান ১৯৪৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। কর্মজীবনে তিনি মূলত একজন শিক্ষক হওয়ার ফলে তিনি মূলত তুর্কি শিক্ষক সমিতিতে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৬৭ সালে তিনি শিক্ষক সমিতির নির্বাহী কমিটিতে যোগ দেন এবং এর সংবাদপত্রের জন্য ইউনিয়ন পন্থী নিবন্ধ লেখেন। ১৯৭১ সালে এই লেখার জন্য তাকে বাইশ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু ১৯৭৪ সালে তুরস্কে সরকার পরিবর্তনের পর নতুন সরকারের নির্দেশে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তির পর তিনি আইন বিষয়ে অধ্যায়ন করা শুরু করেন। ১৯৭৬ সালে স্নাতক অর্জন করেন। তিনি মানবাধিকার মামলায় বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তিনি বহু সংখ্যক সক্রিয় কর্মী এবং বুদ্ধিজীবীদের বিভিন্ন মামলা থেকে রক্ষা করেছিলেন। ১৯৮০ সালে, তিনি আবার তার সংবাদপত্রের লেখায় "রাষ্ট্রবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি সমর্থন" করার জন্য কারাগারে বন্দী হন। এই দফায় তিনি মাত্র পঁয়ত্রিশ দিন কারাবরণ করেন। [১]

১৯৮৬ সালে তিনি কনটেম্পোরারি লয়ার্স এসোসিয়েশন বা সমসাময়িক আইনজীবী সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর সভাপতি হন। দশ বছর পর, তিনি মহিলাদের অধিকারের জন্য প্রতিবাদ করার জন্য সমসাময়িক মহিলা সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৮ সালে তুরস্কের একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ইলে সায়েগান একটি সাক্ষাৎকারে কুমারীত্ব পরীক্ষার প্রথাকে সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য দেওয়ার ফলে শেনাল সারাহান তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানান।[২]

সারহান প্রধানমন্ত্রী রেজেপ তাইয়িপ এরদোয়ান সরকারের বেশ কয়েকটি প্রস্তাবের সক্রিয় বিরোধী ছিলেন। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে তারা নারীদের অধিকারের উপর আক্রমণ করেছে। তিনি ২০০৪ সালে ব্যভিচার বিরোধী আইনের বিরোধিতা করেছিলেন এবং উদ্বেগ প্রকাশ করে যে এটি প্রাথমিকভাবে মূলত মহিলাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে;[৩] ২০০৭ সালে তিনি তার দলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তখন তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে দলটি শরীয়া আইন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবে।[৪] যদিও এসব পরিকল্পনা পরে বাতিল করা হয়েছিল।[৫] পরের বছর তিনি তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাথার স্কার্ফ নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে প্রায় ৪০,০০০ লোকের একটি সমাবেশের আয়োজন করেন।[৬] তিনি রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) নামক তুর্কি রাজনৈতিক দলের সদস্য।[৭]

২০১৮ সালের তুরস্কের সাধারণ নির্বাচনে তার দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) তাকে প্রার্থী তালিকা থেকে অপসারণ করে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Senal Sarihan"। Robert F. Kennedy Center for Justice and Human Rights। ২৯ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১২  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "RFK" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  2. Stephen Kinzer (৮ জানুয়ারি ১৯৯৮)। "Turks Clash Over Defense of Virginity Tests"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১২ 
  3. "Turkey still weighing anti-adultery law"। NBC News। ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১২ 
  4. Emma Ross-Thomas (৪ জুলাই ২০০৭)। "Turkish women gain voice in fight to stay secular"। Reuters। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১২ 
  5. "Turkey signals U-turn on adultery"। BBC News। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১২ 
  6. "Head scarf: 40 000 Turks protest"South Africa Times। ২ ফেব্রুয়ারি ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১২ 
  7. "Şenal SARIHAN"। ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টো ২০১৪