শাহ ইসমাইল শহীদ

ইসলামী পন্ডিত

শাহ ঈসমাইল শহীদ ছিলেন একজন ভারতীয় আহলে-হাদিস-হানাফি-মাতুরিদি ইসলামি পণ্ডিত , সুফি - সালাফিবাদের মধ্যপন্থী সংস্কারক । উনিশ শতকে পাঞ্জাবের শিখ রাজ্যের বিরুদ্ধে সৈয়দ আহমদ বেরলভির ডাক দেয়া জিহাদের তিনি একজন যোদ্ধা ছিলেন। আহলে হাদিস, তাবলিগ জামাত এবং দেওবন্দীদের কাছে তিনি সন্মানিত।[]

শাহ ঈসমাইল শহীদ
শাহ ঈসমাঈল শহীদের কবর, বালাকোট
জন্ম২৬ এপ্রিল ১৭৭৯[]
মৃত্যু৬ মে ১৮৩১[]
পরিচিতির কারণ১৮৩১ সালের বালাকোট যুদ্ধ

প্রাথমিক জীবন

সম্পাদনা

শাহ মুহাম্মদ ইসমাইল ছিলেন শাহ আবদুল গনির একমাত্র পুত্র ও শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভির নাতি। শাহ আবদুল আজিজ মুহাদ্দিস, শাহ রফিউদ্দিন মুহাদ্দিস ও শাহ আবদুল কাদির মুহাদ্দিস তার চাচা ছিলেন। শাহ ইসমাইল ১১৯৩ হিজরির ১২ রবিউল আউয়াল (২৬ এপ্রিল ১৭৭৯ খ্রিষ্টাব্দ) জন্মগ্রহণ করেন। প্রচলিত কিছু সূফি কর্মকাণ্ডের জবাবে তিনি “তাকউইয়াতুল ঈমান” নামক গ্রন্থ রচনা করেন। তবে তিনি নিজেও সূফি ছিলেন এবং সৈয়দ আহমদ শহীদের অনুসারী ছিলেন। পাঞ্জাবের শিখ রাজ্যের বিরুদ্ধে তিনি সৈয়দ আহমদ শহীদের জিহাদে অংশ নেন।

 
শাহ ইসমাঈল শহীদ (রহ.)-এর কবর, বালাকোট।

মৃত্যু

সম্পাদনা

সৈয়দ আহমদ শহীদ ও শহীদ ইসমাইল শহীদ তাদের সঙ্গী মুজাহিদ, বালাকোটের ৬টি সোয়াতি গোত্র ও কাঘানের সৈয়দদের সহায়তায় বেশ কিছু বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন ও শিখদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। ১৮৩১ সালের ৬ মে সৈয়দ আহমদ শহীদ ও শাহ ইসমাইল শহীদ কয়েকশত অনুসারী বালাকোটের যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন। তাদেরকে বালাকোটে দাফন করা হয়। তার মাজার সাদাসিধেভাবে এখনো সেখানে অবস্থিত। তবে সৈয়দ আহমদ শহীদের মৃতদেহ খুজে পাওয়া যায়নি। তার কবর কোথায় তা নিয়ে দ্বিধা রয়েছে।[]

 
শাহ ইসমাঈল শহীদ (রহ.)-এর কবর, বালাকোট।
  1. A treatise on the principles of Fiqh (ইসলামিক ব্যবহারশাস্ত্র)।
  2. A treatise on logic, স্যার সৈয়দ আহমদ খান এটি উদ্ধৃত করেছেন।
  3. "Clarifying the evident truth about the rulings concerning the dead and the shrines" নামের বই। তবে তিনি বইটি সম্পূর্ণ করতে পারেননি। এটি উর্দু অনুবাদসহ দুই বা তিনবার প্রকাশিত হয়।
  4. "The Status and Dignity of an Imam" এর ফার্সি পান্ডুলিপি এখন দুর্লভ, তবে উর্দু অনুবাদ সহজলভ্য।
  5. "Illuminating the two eyes in regard to the raising of hands" এটি হাদিসের সংগ্রহ। এখানে নামাজের সময় হাত তোলার ব্যাপারে হাদিস রয়েছে। এই বইটি এর উর্দু সংস্করণসহ বেশ কয়েকয়ার প্রকাশিত হয়েছে। পাকিস্তানের জামায়াতে আহলে হাদিস এটির আরবি সংস্করণ ব্যাখ্যাকারী নোটসহ প্রকাশ করেছে।
  6. "The Straight Path" এই বইটির চারটি অধ্যায় আছে। প্রথম অধ্যায়টি শাহ ইসমাইল শহীদ লিখেছেন। এর বিষয়বস্তুগুলো সৈয়দ শহীদ লিখেছেন। তবে লেখার ধরন ও প্রকাশভঙ্গি শাহ শহীদের মত। এর উর্দু সংস্করণও প্রকাশিত হয়েছে। এর ফার্সি সংস্করণ শুধু একবারই ছাপা হয় এবং এখন তা দুর্লভ।
  7. "Taqwiyat-ul-Iman" (বিশ্বাসের সুদৃঢ়)
  8. Yak-Rozi (One dayer), এটি একটি সংক্ষিপ্ত গ্রন্থ। তার লেখা "তাকউইয়াতুল ঈমান" গ্রন্থের ব্যাপারে মৌলভি ফযল হক খয়রাবাদীর আপত্তির জবাবে তিনি এই বই লেখেন। শাহ শহীদ যখন মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন তখন তিনি মৌলভি ফযল হকের চিঠি পান। নামাজের পর তিনি লিখতে বসেন এবং এক নিমেষে উত্তর লিখে ফেলেন। তাই বইটির এরূপ নাম দেয়া হয়েছে।
  9. Makateeb (The written notes), এটি অন্যতম বৃহৎ সংগ্রহ। এগুলোর মধ্যে কিছু তার নামে পরিচিত। এগুলোর অধিকাংশ তিনি সৈয়দ শহীদের অনুপ্রেরণায় লিখেছেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Profile of Dehlvi on books.google.com website Retrieved 16 August 2018
  2. পরিষদ, সম্পাদনা (জুন ১৯৮২)। সংক্ষিপ্ত ইসলামি বিশ্বকোষ ১ম খণ্ড। শেরেবাংলা নগর, ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। পৃষ্ঠা ১৮৬। আইএসবিএন 954-06-022-7 
  3. Ambela - Imperial Gazetteer of India, v. 5, p. 289

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা