শাহ আলমগীর

বাংলাদেশী সাংবাদিক, মহাপরিচালক, বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউট

শাহ আলমগীর ছিলেন বাংলাদেশের একজন সাংবাদিক। তিনি বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) মহাপরিচালক ছিলেন।[১] পিআইবিতে যোগ দেয়ার আগে তিনি দীর্ঘদিন সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন। [২] সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০২৩ সালে সাংবাদিকতায় একুশে পদক প্রদান করে। [৩]

শাহ আলমগীর
জন্ম
মৃত্যু২৮ ফেব্রুয়ারি , ২০১৯
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
মাতৃশিক্ষায়তনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাচাকুরি
পরিচিতির কারণসাংবাদিক
অফিসবাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি)
দাম্পত্য সঙ্গীফৌজিয়া বেগম
সন্তানআশিকুল আলম দীপ ও অর্চি অনন্যা
পুরস্কাররোটারি ইন্টারন্যাশনাল লাইফ অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়্যার্ড, ২০১৬,কবি

চন্দ্রাবতী স্বর্ণপদক (2005)

একুশে পদক (২০২৩)

জন্ম ও পারিবারিক পরিচয় সম্পাদনা

শাহ আলমগীরের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায়। বাবার চাকরির সুবাদে তার জীবনের একটি বড় অংশ কাটে বৃহত্তর ময়মনসিংহে

শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

ময়মনসিংহের গৌরীপুর কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন করেন শাহ আলমগীর। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি। এছাড়া তিনি মস্কো ইনস্টিটিউট অব জার্নালিজম থেকে সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা ও থমসন ফাউন্ডেশন পরিচালিত সাংবাদিকতায় উচ্চতর কোর্স সম্পন্ন করেছেন। এছাড়াও করাচিতে সাউথ এশিয়ান ফ্রি মিডিয়া আয়োজিত ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বিষয়ক কর্মশালা, ফিল্ম আর্কাইভস আয়োজিত ফিল্ম অ্যাপ্রিশিয়েসন কোর্স ও ভারতের গোয়ায় ইউএনডিপি আয়োজিত ‘সাউথ এশিয়ান মিডিয়া অ্যান্ড ইটস রোল ইন এটেইনিং দ্য মিলিনিয়াম ডেভলপমন্ট গোল’ শীর্ষক সম্পাদকদের কর্মশালায় যোগ দিয়েছেন। [৪]

কর্মজীবন সম্পাদনা

শাহ আলমগীরের সাংবাদিকতা পেশার শুরু ছাত্রজীবন থেকেই। উপমহাদেশের প্রথম শিশু-কিশোর সাপ্তাহিক কিশোর বাংলা পত্রিকায় যোগদানের মাধ্যমে তিনি সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেন। [৫] এখানে তিনি সহ-সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত কাজ করেন। এরপর তিনি কাজ করেন দৈনিক জনতা, বাংলার বাণী, আজাদ ও সংবাদে। প্রথম আলো প্রকাশের সময় থেকেই তিনি পত্রিকাটির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং ১৯৯৮ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত যুগ্ম বার্তা-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি টেলিভিশন মিডিয়ায় কাজ শুরু করেন। চ্যানেল আই এর প্রধান বার্তা সম্পাদক, একুশে টেলিভিশনে হেড অব নিউজ, যমুনা টেলিভিশনে পরিচালক (বার্তা) এবং মাছরাঙা টেলিভিশনে বার্তা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি শাহ আলমগীর ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি শিশু কল্যাণ পরিষদ এবং শিশু ও কিশোরদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান ‘চাদের হাট’র সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন। তিনি ২০১৩ সালের ৭ জুলাই পিআইবির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পিআইবিতে যোগদানের পূর্বে তিনি সর্বশেষ এশিয়ান টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[৬]

পারিবারিক জীবন সম্পাদনা

পারিবারিক জীবনে শাহ আলমগীর এক পুত্র ও কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন। তার স্ত্রীর নাম ফৌজিয়া বেগম। ছেলে আশিকুল আলম দীপ ও মেয়ে অর্চি অনন্যা। তার পুত্রবধুর নাম তানজিয়া সিরাজ তূর্জি। একমাত্র নাতির নাম আহান আলম।

অসুস্থতা ও মৃত্যু সম্পাদনা

২০১৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ দিন পর 2019সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। [৭]

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

  • কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ সাহিত্য পুরস্কার, ২০০৬
  • চন্দ্রাবতী স্বর্ণপদক ২০০৫
  • রোটারি ঢাকা সাউথ ভোকেশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০০৪
  • কুমিল্লা যুব সমিতি এওয়ার্ড ২০০৪
  • রোটারি ইন্টারন্যাশনাল লাইফ অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়্যার্ড-২০১৬

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "তৃতীয় মেয়াদে পিআইবির ডিজি শাহ আলমগীর"Purboposchim। ২০১৮-০৭-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৭-১০ 
  2. BanglaNews24.com। "আরও ১ বছর পিআইবি'র মহাপরিচালক শাহ আলমগীর"banglanews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৭-১০ 
  3. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনসহ ২১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পাচ্ছে একুশে পদক"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-১৩ 
  4. "পিআইবি মহাপরিচালক আলমগীরের মেয়াদ বাড়ল - আলোকিত বাংলাদেশ"আলোকিত বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৭-১০ 
  5. "শাহ আলমগীর পিআইবির মহাপরিচালক"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৭-১০ 
  6. "Details - বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি)-গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার"www.pib.gov.bd (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৭-১০ 
  7. "সাংবাদিক শাহ আলমগীর আর নেই"। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯