শারদা শ্রীনিবাসন শিল্প, প্রত্নতত্ত্ব ও সংস্কৃতির বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বিশেষজ্ঞ একজন ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক। তিনি ভারতের বেঙ্গালুরুতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড স্টাডিসের একজন অধ্যাপক এবং যুক্তরাজ্যের এক্সেটর ইউনিভার্সিটির একজন সাম্মানিক ফেলো[১]। শ্রীনিবাসন একজন ভরতনাট্যম নৃত্যশিল্পী এবং নৃত্যকলা প্রচারক[২]। প্রাচীন পুরাতত্বের বৈজ্ঞানিক গবেষণায় অবদানের জন্যে, ২০১৯ সালে তিনি ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী অর্জন করেছিলেন[৩]

ড. শারদা শ্রীনিবাসন
শিক্ষা(পিএইচডি, ১৯৯৬)
(স্নাতক, কলাবিদ্যা, প্রত্নতত্ত্ব, এবং প্রত্নধাতুবিদ্যা, ১৯৯০)
(বি টেক ইঞ্জিনীয়ারিং পদার্থবিদ্যা, ১৯৮৭)
মাতৃশিক্ষায়তনলন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় , প্রাচ্য এবং আফ্রিকান বিদ্যার স্কুল, লন্ডন, ভারতীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, মুম্বই
পেশাঅধ্যাপক, ন্যাশনাল ইন্স্টিটিউট অফ আডভ্যান্সড স্টাডিস(এন আই এ এস), বেঙ্গালুরু
পরিচিতির কারণশিল্প , প্রত্নতত্ত্ব, ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্য বিষয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রয়োগ
পিতা-মাতা
পুরস্কারপদ্মশ্রী

কর্মজীবন সম্পাদনা

শারদা ১৯৯৭ সালে মুম্বাইএর ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রযুক্তিগত পদার্থবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করার পরে, তিনি ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে পিএইচডি করার সময় দক্ষিণ ভারতীয় ব্রোঞ্জের ভাস্কর্য নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যান, যা তিনি ১৯৯৫ সালে শেষ করেছিলেন[৪]

১৯৮৬ সালে শারদা আরও চারজন সতীর্থর সাথে ইংরেজি ছায়াছবি 'নিউক্লিয়ার উইন্টার'-এর জন্যে সহ-পরিচালনা, নৃত্য পরিকল্পনা এবং অভিনয় করেছিলেন; এই ছায়াছবিটি ১৯৮৮ সালের কান চলচ্চিত্র উতসবে বিশেষ বিভাগে বিজয়ী হয়েছিল।ছায়াছবিটি প্রযোজনা করেছিলেন হোমি শেঠনা এবং পরিচালনায় ছিলেন জুল ভেল্লানি। শারদা ছাড়া, অভিনয়ে ছিলেন বিজয় কৃষ্ণ এবং মিশু ভেলানি। ছায়াছবিটি ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠানের পাওয়াই ক্যাম্পাসে চিত্রায়িত করা হয়েছিল। এই চলচ্চিত্রটি শারদার জন্য একটি সফল নৃত্য জীবনের সূচনা হিসাবে চিহ্নিত করা যায়।

শারদা ‘ইন্ডিয়া’স লিজেন্ডারি ওয়াটজ স্টিল: প্রাচীন বিশ্বের একটি উন্নত উপাদান’ বইটির লেখক। তিনি যুক্তরাজ্যের রয়েল এশিয়াটিক সোসাইটির ফেলো এবং ওয়ার্ল্ড একাডেমি অফ আর্ট অ্যান্ড সায়েন্সের একজন সদস্য[৫]

নাচ সম্পাদনা

আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের ঘোষিত বর্ষ ২০০৯ তে বিজ্ঞানী-নৃত্যশিল্পী শারদা শ্রীনিবাসন দ্বারা সজ্জিত আলোকচিত্র -মন্তাজ প্রদর্শনী 'ড্যান্স ই-টয়লেট: নটরাজ এবং লে কসমস' এলায়েন্স ফ্রান্সাইজ বেঙ্গালুরু প্রদর্শন কক্ষে প্রদর্শিত হয়েছে[৬]

শারদা দক্ষিণ ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য ভারতনাট্যমের নৃত্যশিল্পী। তিনি চোল প্রদর্শনীর জন্য রয়্যাল এশিয়াটিক সোসাইটি, রয়্যাল একাডেমি অফ আর্টস-এ বক্তৃতা দিয়েছেন এবং নৃত্যপরিবেশনা করেছেন। এছাড়া তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞানের আন্তর্জাতিক অকাদেমি, তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের আন্তর্জাতিক কেন্দ্র, আইএনটিসিএইচ-বেলজিয়াম,লন্ডনের নেহেরু সেন্টার, চীন কনজারভেটরি অফ মিউজিক ,হায়দ্রাবাদে জাতীয় বিজ্ঞানের ইতিহাস সেমিনারে ,জাপানের টয়োমা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য অনেক জায়গায় নৃত্য পরিবেশনা করেছেন। ২০০৮ সালের জুনে তিনি দক্ষিণ ভারতীয় ব্রোঞ্জ এবং নটরাজ সম্পর্কিত শিল্প-বিজ্ঞান-নৃত্যের দৃষ্টিভঙ্গিতে 'শিবের কসমিক নৃত্য' শিরোনামে অ্যালায়েন্স ফ্রেঞ্চাইজ বেঙ্গালুরুতে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী করেছিলেন[৭]

ড্যান্সে ই-টোয়েল: নটরাজ এট লে কসমস (তারার নৃত্য: নটরাজ এবং কসমস) ছিল শারদা শ্রীনিবাসনের পরিচালনায় একটি মিথস্ক্রিয় সঙ্গীত ও নৃত্যের অনুষ্ঠান যা ভারত ও ইউরোপের মধ্যে প্রথম এই ধরনের অনুষ্ঠান যা সরাসরি আন্তর্জালের মাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়েছিল। আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান বর্ষ- ২০০৯ উদযাপনের অংশ হিসাবে ২০০৯ সালের ১লা অক্টবর অক্টোবর ভারতের বেঙ্গালুরুতে এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সৃজনশীল নৃত্য পরিকল্পনা, শিল্প, বিজ্ঞান এবং উন্নত প্রযুক্তির আশ্চর্য সংশ্লেষ এটিকে আরও আকর্ষক করে তুলেছিল[৮]

সন্মাননা ও পুরস্কার সম্পাদনা

  • পদ্মশ্রী পুরস্কার, ২০১৯
  • ড. কল্পনা চাওলা নারী বৈজ্ঞানিক রাষ্ট্রীয় পুরস্কার, ২০১১.[৯]
  • ইউনেস্কোর বিজ্ঞানের ইতিহাস প্রকল্পের ভারতীয় প্রতিনিধি
  • জুনিয়র রিসার্চ ফেলো, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় (১৯৯৯-২০০০)
  • ফোর্বস ফেলোশিপ, ১৯৯৯
  • পোস্ট-ডক্টরেট স্মিথসোনিয়ান ফেলোশিপ ( এপ্রিল ১৯৯৯– সেপ্টেম্বর ১৯৯৯)
  • মেটিরিয়াল গবেষণা স্মিতির স্নাতক ছাত্র পুরস্কার, ১৯৯৬
  • হোমি ভাবা বৃত্তি (১৯৯৬-৯৮)
  • পেত্রি পুরস্কার (১৯৮৯)
  • জে এন টাটা বৃত্তি (১৯৮৮)

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Professor Sharada Srinivasan"। University of Exeter। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০১৬ 
  2. http://leonardo.info/rolodex/srinivasan.sharada.html From Sharada Srinivasan's profile page on the official website of Leonardo Electronic Directory.
  3. "Padma awards for 2019 announced: Full list of awardees"The News Minute। ২৫ জানুয়ারি ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ 
  4. "Sharada Srinivasan"Leonardo Electronic Dictionary। ১৭ এপ্রিল ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০১৬ 
  5. "IIT Bombay Alumni Prof. Rohini M. Godbole And Prof. Sharada Srinivasan Conferred Padma Shri | IIT Bombay"www.iitb.ac.in। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-১৬ 
  6. K-Dance Website
  7. "Sharada Srinivasan performs Bharatanatyam At international conference on Southeast Asian Archaeology 1 September 2008 Leiden, Holland"। ২৮ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০২০ 
  8. "Cosmic Ball- The Week, Nov8 2009"। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০২০ 
  9. "Dr. Kalpana Chawla Young Women Scientist Awardees"। Karnataka State Council for Science and Technology। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা