শায়েখ নাসির বিন হামাদ আল ফাহাদ

নাসির আল ফাহাদ (আরবি: ناصر الفهد, তিনি সৌদিআরবের বিখ্যাত আলেম ও দাঈ। তিনি ইসলামি জিহাদ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার সমর্থন করেন.[১] ২০০৩ সালে তাকে সৌদি আরব সরকার গ্রেপ্তার করেছিল।

নাসির আল ফাহাদ
অন্য নামআবু মুসাব
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম
নাসির বিন হামাদ আল ফাহাদ

১৯৬৮
ধর্মমুসলিম
জাতীয়তাআরবিয়ান
জাতিসত্তাআরব
যুগমর্ডান
অঞ্চলমুসলিম
যেখানের শিক্ষার্থীইমাম মুহাম্মদ ইবনে সৌদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়
অন্য নামআবু মুসাব
কাজঅধ্যাপক
ঊর্ধ্বতন পদ

জীবনী সম্পাদনা

শাইখ নাসির (১৯৬৮) ১৩৮৮ হিজরীর শাওয়াল মাসে রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানেই বেড়ে উঠেন। মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে তিনি আল মালিক সাউদ ইউনিভার্সিটিতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শুরু করেন। তিনি অত্যন্ত মেধাবি ছাত্র ছিলেন। ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের তৃতীয় বর্ষ চলাকালে তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া ছেড়ে দিয়ে “দা ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ ইমাম মুহাম্মাদ ইবন সাউদ” এ শরিয়া বিভাগে পড়াশোনা শুরু করেন। তিনি মাত্র তিন মাসে কুরআন হিফজ করেন। যে মুসহাফ থেকে তিনি হিফজ করছিলেন তার প্রথম পৃষ্ঠায় তিনি লিখেছিলেনঃ “সমস্ত অর্জন ও সাফল্য যা আমি অর্জন (কুরআন হিফজ) করেছি তা কেবল আল্লাহ সুবহানু ওয়া তা’আলার পক্ষ থেকেই। রবিবার বাদ আসর ২৯/১১/১৪২২ হিজরি (২০০২ সালে)এই মুসহাফ থেকে হিফজ সম্পন্ন করলাম যার শুরু ছিলো এই বছরেরই রমাদ্বান মাসের প্রথম দিকে। সকল প্রশংসা আল্লাহ সুবহানু ওয়া তা’আলার যার সাহায্যে সকল ভালো কাজ সম্পন্ন হয়”। . শরীয়াহ কলেজে তিনি যে সব মাশায়েখের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন শেখ যায়িদ ইবনে ফাইয়্যাদ, শেখ আব্দুল আজিজ আল রাজিহি এবং শেখ আহমদ মা’বাদ আল আযহারি। হিজরি ১৪১২ সালে তাকে কলেজ থেকে “ইজাযাহ” দেয়া হয়। তিনি ছিলেন ছাত্রদের মধ্যে মেধা তালিকার শীর্ষে। তাকে কলেজ থেকে শরীয়াহ উসুল আদ দ্বীনের উপর পড়ালেখা চালিয়ে যেতে অনুরোধ করা হয়। তিনি উচ্চতর পড়াশুনার জন্য Principles of the Religion; Department of Creed and Contemporary Sects-কে বেঁছে নেন। উচ্চতর শিক্ষার পর থাইল্যান্ডে উস্তাদ হিসেবে তাকে নিয়োগ করা হয়। তিনি সেখানে এক জাহমির সাথে বাহাস করেন, জয়ী হন এবং শ্রোতাদের কাছে প্রশংসার পাত্র হয়ে উঠেন। তাঁকে মক্কার উম্মুল ক্বুরা ইউনিভার্সিটির আক্বিদা ডিপার্টমেন্টের ডীন নিযুক্ত করা হয়। . এ সময় ইলমের সন্ধানে তিনি ব্যস্ত সময় কাটান। বইপত্র জোগার, পড়াশুনা এবং গবেষণায় তাঁর সময় কাটে। তিনি সব সময় পড়াশোনার নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন এবং তাঁকে ঘরে বই ছাড়া দেখি নি। তিনি গাড়িতে ওঠার সময় বই নিয়ে উঠতেন এবং ট্রাফিক জ্যামের সময় বই পড়তেন। যদি বলা হয় তিনি দিনে ১৫ ঘণ্টা পড়াশুনায় কাটাতেন তাহলেও তার উপর ইনসাফ করা হবে না। আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি ইলমে আরো অগ্রসর হলেন এবং শরীয়ার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠলেন, যার মধ্যে রয়েছে আক্বিদা ও এর সাথে সংযুক্ত বিষয়াবলী, হাদিস, রিজালশাস্ত্র, ফিকহের উসুল, চার মাযহাবের ফিকহ এবং ফারাইদহ (উত্তরাধিকার)। বিভিন্ন বিষয়ে ফতোয়া এবং নুসুস থেকে হুকুম নির্ণয়ের ক্ষেত্রে তিনি তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা ও গভীর অন্তর্দৃষ্টির পরিচয় দিতেন। . তিনি ইতিহাস এবং বিভিন্ন গোত্রের বংশধারা ও বংশপরিচয় বৃত্তান্তের ব্যাপারে গভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। শেখ ওয়ালিদ আস সিনানি, যিনি এক্ষেত্রে তার জ্ঞানের কারণে ছিলেন অদ্বিতীয় ও বিখ্যাত। তাকে একবার এ বিষয়ে কিছু প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেন, আসাদিকে জিজ্ঞেস করো (আসাদি বলতে তিনি আসা’ইদা গোত্রের নাসির আল ফাহাদকে বুঝিয়েছেন)। ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সাউদ ইউনিভার্সিটির আক্বিদার কিছু প্রফেসর বলেন, “ শায়খ নাসির মাস্টার্সে আমাদের সহপাঠী ছিলেন। তিনি ছিলেন আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বুদ্ধিমান ব্যক্তি। মুখস্থ ও বুঝার ক্ষেত্রে সবার চেয়ে এগিয়ে। তার কঠোরতা ছাড়া তাকে নিয়ে সমালোচনা করার মতো কিছুই নেই”। আর একথা সত্য। যখন কারো সাথে বিতর্ক করেন তখন তিনি রেগে যান, কিন্তু যখনই তার মেজাজ ঠান্ডা হয়, সাথে সাথে তিনি তার প্রতিপক্ষের কাছে মাফ চেয়ে নেন। আমার কাছে এই খবর পোঁছায় যে, আক্বিদা ডিপার্টমেন্টের একজন উস্তাদ একদিন তার ছাত্রদের বলছিলেন, “এই ডিপার্টমেন্টে একজন মানুষ ছিলো যে অনেক ভুল ধারণা পোষণ করতো। কারো সাহস ছিল না তার মুখোমুখি হয়ে তার ভুল ধারণার মোকাবেলা করার, একমাত্র নাসির আল ফাহাদ ছাড়া”।[২] [৩]

বই সম্পাদনা

  1. আল-দাওলা আল-উথমানিয়া ওয়া ওয়া মাওকিফ দা'ওয়াত আল-শায়খ মুহাম্মাদ বিন 'আবদ আল-ওয়াহহাব মিনহা।(১৯৯৩)
  2. হাকিকাত আল-হাদারা আল-ইসলামিয়া।(১৯৯৩)
  3. শি'আর আহমাদ শওকী ফিল-মিজান।(১৯৯৪)

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Scheuer, Michael (২০১১-০১-২০)। Osama Bin Laden (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 247। আইএসবিএন 9780199753277 
  2. "Fatwa by Saudi Sheikh Nasser al-Fahd" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ জুলাই ২০১৬ তারিখে, ICT
  3. [১]