শামীম রেজা রুবেল হত্যাকাণ্ড
শামীম রেজা রুবেল হত্যাকাণ্ড হচ্ছে বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ড যা পুলিশ হেফাজতে হয়েছিল এবং বাংলাদেশে একটি যুগান্তকারী আইনি মামলা তৈরি করেছে।[১][২][৩]
ইতিহাস
সম্পাদনাঘটনা
সম্পাদনাশামীম রেজা রুবেল বাংলাদেশের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় , ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির বিবিএ শিক্ষার্থী ছিলেন। ২৩ শে জুলাই ১৯৯৮ এ তাকে সিদ্ধেশ্বরীর বাড়ি থেকে বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ছদ্মবেশী সদস্যরা ধরে নিয়ে যায় যারা তত্ক্ষণাত তাকে মারধর শুরু করে এবং তার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল। তাকে মিন্টু রোডের গোয়েন্দা শাখার কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে হেফাজতে নির্যাতন করা হয়েছিল এবং তাকে অবৈধ অস্ত্র রয়েছে তা স্বীকার করতে বাধ্য করা হয়েছিল। অস্ত্র উদ্ধার করতে তারা তাকে তার বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যায় তবে কিছুই পায়নি। রুবেল স্বীকার করেছেন যে তিনি নির্যাতন বন্ধ করার স্বর্থে অস্ত্রের কথা স্বীকার করেছেন। তাকে মারধর করা অব্যাহত ছিল এবং তার আর্তনাদ পাড়ায় শোনা গেল। তাকে আবার গোয়েন্দা শাখায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই তিনি হেফাজতে মারা যান। তার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে মারাত্মক মারধরের ফলে রক্তক্ষরণ এবং শক থেকে তার মৃত্যু হয়েছে।[৪][৫]
মামলা
সম্পাদনা১৯৯৯ সালে মানবাধিকার সংগঠনগুলি যেগুলি বাংলাদেশ পুলিশেরকে নির্বিচারে লোকদের গ্রেপ্তার এবং তাদের হেফাজতে নির্যাতন করার ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে। ২০০৩ সালের ৩ এপ্রিল বাংলাদেশ হাই কোর্ট একটি রায় জারি করে যেটি সন্দেহের ভিত্তিতে বিশেষ ক্ষমতা আইনের অধীনে লোকজনকে আটকে রাখার জন্য সরকারের ক্ষমতা বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল নেতৃত্বাধীন সরকার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেছিল।[৬] ২৪ মে ২০১৬-তে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায়টিকে কিছু সংশোধন করে সমর্থন করে এবং সন্দেহের আটকায় সরকারের ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে।[৭]
রুবেলের বাবা আবদুর রব মিয়া বাদী হয়ে রুবেলের প্রতিবেশী মুকুলি বেগমসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। অপর আসামি হলেন গোয়েন্দা শাখার সহকারী কমিশনার আকরাম হুসেন, যিনি রুবেলকে গ্রেপ্তারকারী দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ২০০৩ সালের জুনে আদালত ১৩ জন আসামিকে কারাগারে এবং মুকুলি বেগমকে এক বছরের কারাদন্ডে দণ্ডিত করে। বাংলাদেশ হাই কোর্ট ৫ মে ২০১১ তারিখে পুলিশ অফিসার হায়াতুল ইসলাম ঠাকুরকে বাদ দিয়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ১২ জনের মধ্যে ১১ জনকে খালাস দিয়েছে। আকরাম হুসেনকে ডিফেন্ড করেছিলেন সেরাজুল হক। সেরাজুল হক মারা যাওয়ার পরে হুসেনকে সেরাজুল হকের পুত্রের পক্ষ থেকে আইনি লড়াই চালানো হয়েছৈ। যিনি বর্তমান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ছিলেন। ৩১ আগস্ট ২০১৫ -তে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট আকরামকে আত্মসমর্পণ করতে বলে এবং বাংলাদেশ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারকে আপিল করার অনুমতি দেয়। এই রায় রায়ের বিরুদ্ধে সরকার একটি আবেদন পূরণ করার পরে প্রকাশ পায়।[৫][৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "SC upholds HC order for amending CrPc 54, 167"। Prothom Alo। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "Top court's verdict over laws on arrest without warrant, grilling in custody on May 24"। bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "Bangladesh Supreme Court Orders Police to Change Arrest Practices"। BenarNews (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "Remembering Rubel"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ ক খ "Ex-cop Akram has to surrender"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ৩১ আগস্ট ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ ক খ "Sad death gives hopes for all"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২৫ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "SC upholds ruling over arrest on suspicion"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২৪ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।