সিরাজুল হক (বাচ্চু মিয়া)
সিরাজুল হক (বাচ্চু মিয়া নামেও পরিচিত) (১ আগস্ট ১৯২৫ - ২৮ অক্টোবর ২০০২) ছিলেন বাংলাদেশের আইনজীবী, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও রাজনীতিবিদ।[১] তিনি ছিলেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও বাংলাদেশের সংসদ সদস্য।[২][৩] স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য তিনি ২০২২ সালে (মরণোত্তর) স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।[৪]
অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক (বাচ্চু মিয়া) | |
---|---|
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ৭ ডিসেম্বর ১৯৭০ – ৫ মার্চ ১৯৭১ | |
কুমিল্লা-৪ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ৭ মার্চ ১৯৭৩ – ১৯৭৯ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১ আগস্ট ১৯২৫ পানিয়ারূপ গ্রাম, কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ২৮ অক্টোবর ২০০২ ঢাকা |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
দাম্পত্য সঙ্গী | জাহানারা হক |
সন্তান | আনিসুল হক সহ ২ছেলে ও ১ মেয়ে |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ |
পেশা | বুদ্ধিজীবী |
পুরস্কার | স্বাধীনতা পুরস্কার (২০২২) |
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাসিরাজুল হক (বাচ্চু মিয়া) ১ আগস্ট ১৯২৫ সালে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার পানিয়ারূপ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[৩] তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে শেখ মুজিবুর রহমানের সহপাঠী ছিলেন।[৩][৫]
রাজনৈতিক ও কর্মজীবন
সম্পাদনাসিরাজুল হক ১৯৫২ সালের বাংলা ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান, ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। ১৯৬৮ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলা, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম প্রধান কৌঁশলী ছিলেন তিনি।
তিনি ১৯৭০ সালে কসবা-বুড়িচং নির্বাচনী এলাকা থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন কুমিল্লা-৪ (বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ কসবা-আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[২] তিনি ১১ এপ্রিল ১৯৭২ সালে কামাল হোসেনকে সভাপতি করে গঠিত সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন। [৩][৬][৭]
১৯৭৯ সালে দেশে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতিদ্বন্দ্বী এমএজি ওসমানীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে তিনি সক্রিয় ছিলেন। নির্বাচনে ওসমানী হেরে গেলে তিনি দীর্ঘদিন নীরব ছিলেন এবং নিজের আইন ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন। একটি টার্ম তিনি সুপ্রিম কোর্ট বারের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।[৬]
পরিবার
সম্পাদনাসিরাজুল হক আব্দুস সামাদের কন্যা জাহানারা হককে বিয়ে করেন। তিনি ছিলেন দুই পুত্র ও এক কন্যার জনক। সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার সন্তান।
প্রখ্যাত সাংবাদিক আতাউস সামাদ তাঁর ভগ্নিপতি।
তাঁর পিতা নুরুল হুদা ও মাতা জাহেদা খানম। তাঁর মাতামহ ইউনুস আলি খাঁ (১৮৬৫-১৯২১) ছিলেন মুরানগরের প্রথম এন্ট্রান্স পাশ (১৮৮৫ সাল) এবং ডাক বিভাগের হেড পোস্টমাস্টার (অবসর ১৯১০ সালে)। তাঁর মামা সাহিত্যিক ও প্রকাশক ফরিদ উদ্দিন খাঁ। রাজনীতিবিদ ফরিদা রউফ আশা তাঁর মামাতো বোন এবং হুইপ আব্দুর রউফ তাঁর মামাতো ভগ্নিপতি।[৮]
সম্মাননা
সম্পাদনা- স্বাধীনতা পুরস্কার (২০২২)
মৃত্যু
সম্পাদনাসিরাজুল হক ২৮ অক্টোবর ২০০২ সালে মৃত্যুবরণ করেন। বনানীর মসজিদে জানাজা শেষে তাকে বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Honorable Minister"। আইন ও বিচার বিভাগ (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০১-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-০৮।
- ↑ ক খ "প্রথম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ গ ঘ "অ্যাডভোকেট সিরাজুল হকের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত"। বাংলা টিভি। ২৮ অক্টোবর ২০১৮।
- ↑ "স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন ১১ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান"। চ্যানেল 24। ১৫ মার্চ ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০২২।
- ↑ "বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রখ্যাত আইনজীবী সিরাজুল হকের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত"। দৈনিক জনকন্ঠ। ২৯ অক্টোবর ২০১৫।
- ↑ ক খ "সিরাজুল হক স্মরণে"। সমকাল। ২৯ অক্টোবর ২০১৫। ৩০ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০১৯।
- ↑ "অ্যাডভোকেট সিরাজুল হকের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার"। বাংলা নিউজ ২৪। ২৭ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ খাঁ, ফরিদ উদ্দিন (২০১৭)। হোসেন, জয়নাল, সম্পাদক। জ্বলন্ত প্রেম। দ্যু প্রকাশন।