শামসুল হক (বীর বিক্রম)
শামসুল হক (জন্ম: ১৯২৫) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে।[১] তার খেতাবের সনদ নম্বর ৪৩।[২]
শামসুল হক | |
---|---|
জন্ম | ১৯২৫ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পরিচিতির কারণ | বীর বিক্রম |
- একই নামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দেখুন শামসুল হক।
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাশামসুল হকের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার জিনোদপুর ইউনিয়নের বলিবাড়ি গ্রামে। তার বাবার নাম সৈয়দ আলী মুন্সি এবং মায়ের নাম নূরেন্নেছা বেগম। তার স্ত্রীর নাম আফিয়া বেগম। তাদের চার ছেলে দুই মেয়ে। [৩]
কর্মজীবন
সম্পাদনাপাকিস্তান সেনাবাহিনীর অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে চাকরি করতেন শামসুল হক। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যুদ্ধে যোগ দেন। প্রতিরোধ যুদ্ধ শেষে ভারতে যাওয়ার পর প্রথম যুদ্ধ করেন ‘জেড’ ফোর্সের অধীনে। পরে ৪ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন। ধামাই চা-বাগানের যুদ্ধে শামসুল হক অসাধারণ বীরত্ব প্রদর্শন করেন। এ যুদ্ধে তার দলনেতা ছিলেন এস এম ইমদাদুল হক (বীর উত্তম) শহীদ হন।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
সম্পাদনা১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সিলেট জেলার অন্তর্গত কানাইঘাট এলাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শক্ত এক অবস্থান ছিল। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে মুক্তিবাহিনী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থানে আক্রমণ করে। তখন সেখানে ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের একটি ছোট দলের নেতৃত্বে ছিলেন শামসুল হক। কানাইঘাট ছিল মুক্তিবাহিনীর ৪ নম্বর সেক্টরের আওতাধীন এলাকা। সেক্টর অধিনায়ক ছিলেন সি আর দত্ত (বীর উত্তম)। শামসুল হক ও তার সহযোদ্ধারা রাতের অন্ধকারে নিঃশব্দে অবস্থান নিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা অবস্থানের কাছে। মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকটি দলে বিভক্ত। একটি দলের নেতৃত্বে শামসুল হক। সব দল যার যার অবস্থান নিয়েছে। এখন অধিনায়ক সংকেত দিলেই আক্রমণের পালা। মুক্তিযোদ্ধারা সেই সংকেতের জন্য অপেক্ষা করছেন। এমন সময় পাকিস্তানিরাই তাদের আক্রমণ করল। ব্যাপক হারে গোলা এসে পড়তে থাকল শামসুল হকদের অবস্থানে। বিরামহীন ও ভয়াবহ গোলাবর্ষণ চলতে থাকে। শামসুল হক মনোবল হারালেন না। চরম প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সহযোদ্ধাদের উজ্জীবিত করে এগিয়ে যেতে থাকলেন সামনে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হয়ে বিপুল বিক্রমে যুদ্ধ করতে থাকলেন। তাদের সাহসিকতায় পাকিস্তানি সেনারা হতবাক হয়ে পড়ে। ‘কানাইঘাট যুদ্ধে পাকিস্তানিদের মৃতের সংখ্যা ছিল ৫০ জন। আহত ২০ জন। আমাদের পক্ষে শহীদ হয়েছে ১১ জন। আহত হয়েছিল ১৫ জন। [৪]
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ২০-০২-২০১২"। ২০১৯-০৬-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-১৭।
- ↑ ডেস্ক, প্রথম আলো। "শামসুল হক, বীর বিক্রম"। চিরন্তন ১৯৭১ | প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১৯।
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৫২। আইএসবিএন 9789843351449।
- ↑ একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা (দ্বিতীয় খন্ড)। ঢাকা: প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা পৃ ১৪৪। আইএসবিএন 9789849025375।