ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল
ড. মুহম্মদ শহীদুলাহ্ হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুর সময়ে প্রতিষ্ঠিত তিনটি আবাসিক হলগুলির একটি। এটি কার্জন হলের পিছনে অবস্থিত এবং এখানে থাকার জন্য দুটি সম্প্রসারিত ভবনসহ একটি প্রধান ভবন রয়েছে। এখানে কেবল বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ড. মুহম্মদ শহীদুলাহ্ হল | |
---|---|
প্রাক্তন নাম | লাইটন হল ঢাকা হল শহীদুলাহ্ হল |
ব্যুৎপত্তি | ড. মুহম্মদ শহীদুলাহ্, ভাষাবিদ |
সাধারণ তথ্যাবলী | |
অবস্থা | ব্যবহৃত হচ্ছে |
ধরন | চতুর্ভুজ |
অবস্থান | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
শহর | ঢাকা |
দেশ | বাংলাদেশ |
স্থানাঙ্ক | ২৩°৪৩′৩৩″ উত্তর ৯০°২৪′০৬″ পূর্ব / ২৩.৭২৫৮০৭° উত্তর ৯০.৪০১৫৯১° পূর্ব |
উন্মুক্ত হয়েছে | ১৯২১ |
স্বত্বাধিকারী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
কারিগরী বিবরণ | |
তলার সংখ্যা | ৫ |
ইতিহাস
সম্পাদনাবর্তমান ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল ছিল ঢাকা কলেজের জন্য নির্মিত প্রথম ছাত্রাবাস। ১৯০৮ সালের মার্চ মাসে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। কার্জন হলের নকশার সঙ্গে এই হলের নকশা সামঞ্জস্যপূর্ণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল হিসেবে যুক্ত হয়।[১] ১৯২১ সালে হলটি লাইটন হল নামে প্রতিষ্ঠিত ও পরবর্তীকালে একে ঢাকা হল নামে নামকরণ করা হয় এবং ১৯৬৯ সালে বিখ্যাত ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যুর পর তার নামে নতুন নামকরণ করা হয়। পরে ১৭ জুন, ২০১৭ সালে এই হলের নাম ড. মুহম্মদ শহীদুলাহ্ হল করা হয়।[২][৩]
এই হলের সামনের বিশাল পুকুর আছে, ১৯৫২ সালে এই পুকুর ঘাটে বসেই ১৪৪ ধারা ভেঙে ভাষা আন্দোলনের মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ১৯৭১ সালের মার্চ ২৫ রাতে এই হলের পাশেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। যার ফলে ক্ষিপ্ত পাক সেনারা সর্বপ্রথম হত্যাকাণ্ডটি চালায় এই হলে ঢুকে। সেই রাতে বর্বর পাক সেনাদের হাতে খুন হন এ হলের আবাসিক শিক্ষক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আতাউর রহমান খান খাদিম সহ আরো অনেকে।
শহীদুল্লাহ হল এলাকার পূর্বের নাম ছিল বাগ-এ-মুসা খাঁ। এটি বারো ভূইয়াঁর অন্যতম ভূইয়াঁ ঈসা খাঁর পুত্র মুসা খাঁয়ের নামে নামাঙ্করণ করা হয়। মুসা খাঁ সুবেদার ইসলাম খাঁয়ের নিকট যুদ্ধে হেরে যাবার পর যুদ্ধাবন্দী হিসেবে আটক ছিল। তবে সুবেদার ইসলাম খাঁ তার প্রতি বেশ সহৃদয় ছিল। হাকিম হাবিবুর রহমানের মতে এটি একটি বাগান ছিল যা মুসলিম বাগান হিসেবেও বিখ্যাত ছিল। সেই সময়ের নিদর্শন হিসাবে রয়েছে মুসা খাঁয়ের মসজিদ, এবং সমাধি।
বিন্যাস এবং সুবিধা
সম্পাদনাহল কমপ্লেক্সটি ৫ একর (২.০ হেক্টর) জায়গা জুড়ে রয়েছে যাতে তিনটি বড় ছাত্র আবাসন রয়েছে যেখানে প্রায় ১৫০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। তিনতলা মূল ভবনটি ১৯২১ সালে তৈরি করা হয়, যেটি কার্জন হলের নকশার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। পরবর্তী সময়ে দুটি পাঁচতলাভবন সংযোজন করা হয়। অন্যান্য ভবনের মধ্যে রয়েছে প্রভোস্ট অফিস, গ্রন্থাগার, শিক্ষার্থীদের পড়ার ঘর, ক্যান্টিন, মেস, মসজিদ এবং শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কেরানিদের থাকার ব্যবস্থা।
এই হলে একটি মেস ভবন আছে যার উপর তলায় হলের সুদৃশ্য মসজিদ। এই হলের প্রশাসনিক ভবন লিটন হল নামে পরিচিত।
কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে একটি বিশাল খেলার মাঠ এবং একটি পুকুর রয়েছে। এখানে বেশ কয়েকটি দোকানগুলি রয়েছে যা প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করে।
এই হলটি বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
চিত্রশালা
সম্পাদনা-
ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল
-
শহীদুল্লাহ হলের পুকুর
-
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলের প্রধান ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূতি উৎসবে আলোকসজ্জা
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ঢাকা কলেজের ছাত্রাবাসই আজকের শহীদুল্লাহ্ হল, প্রথম আলো, ২৬ আগস্ট ২০১৬
- ↑ "শহীদুল্লাহ হলের নাম পরিবর্তন"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৯-০৫।
- ↑ "Shahidullah Hall"। ১৫ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০১৩।