কার্জন হল

ঐতিহাসিক ভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের শ্রেণীকক্ষ ও পরীক্ষার হল।

কার্জন হল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক ভবন, যা পুরাকীর্তি হিসেবে স্বীকৃত।[][] এটি নির্মাণ করা হয় ঢাকা কলেজের ব্যবহারের জন্য। বর্তমানে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও জীব বিজ্ঞান অণুষদের কিছু শ্রেণিকক্ষ ও পরীক্ষার হল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

কার্জন হল
মূল ভবনের সামনের দিক
মানচিত্র
সাধারণ তথ্যাবলী
অবস্থানঢাকা
দেশবাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২৩°৪৩′৩৮″ উত্তর ৯০°২৪′০৭″ পূর্ব / ২৩.৭২৭৩৫° উত্তর ৯০.৪০১৮৬° পূর্ব / 23.72735; 90.40186
নির্মাণকাজের উদ্বোধন১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯০৪
স্বত্বাধিকারীঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ইতিহাস

সম্পাদনা
 
১৯৪৯ সালে কার্জন হল

১৯০৪ সালে ঢাকা কলেজ রমনার নিমতলীতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেজন্য স্থানান্তরের জন্য প্রস্তাবিত স্থানের নিকটে কলেজের পাঠাগার হিসেবে এই ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। পাঠাগার হিসেবে এই ভবনের নাম ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড কার্জনের সম্মানে ভাওয়াল এস্টেটের রাজকুমারগণ দেড় লাখ টাকা প্রদান করেন এবং এর নাম কার্জন হল রাখা হয়। একই বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারিতে লর্ড কার্জন ঢাকায় এসে এর ভিত্তি-প্রস্তর স্থাপন করেন। এরপরের বছর বঙ্গভঙ্গ চূড়ান্ত হওয়ায় পূর্ববঙ্গ ও আসাম নামক নতুন একটি প্রদেশ গড়ে উঠে যার রাজধানী হয় ঢাকা। ফলে কার্জন হলের গুরুত্ব তৎকালীন সময়ে বেড়ে যায়।[] ১৯০৮ সালে কার্জন হল নির্মাণ সম্পন্ন হয়।[] ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ার পর কার্জন হলে ঢাকা কলেজের ক্লাস শুরু হয়।[] ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হওয়ার পর কার্জন হলকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[] ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের সাথে কার্জন হল জড়িয়ে আছে। ১৯৪৮ সালে এখানেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু এতদসংক্রান্ত ঘোষণার প্রতি প্রথম প্রতিবাদ জানিয়েছিল।[] ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ কার্জন হলে অনুষ্ঠিত বিশেষ সমাবর্তনে জিন্নাহ পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দু হবে বলে ঘোষণা করলে কার্জন হলে উপস্থিত ছাত্ররা তখনই ‘নো-নো’ বলে প্রতিবাদ করে।[]

স্থাপত্য

সম্পাদনা
 
অবকাঠামোর স্থাপত্য

১৯০৪ সালে ভারতের ভাইসরয় লর্ড জর্জ নাথানিয়েল কার্জন এই হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং তারই নামানুসারে এ ভবনের নাম হয় কার্জন হল। এ ভবনটিতে সংযোজিত হয়েছে ইউরোপ ও মুগল স্থাপত্য রীতির দৃষ্টিনন্দন সংমিশ্রণ; আংশিকভাবে মুসলিম স্থাপত্যরীতিও অনুসরণ করা হয় এতে। ভবনের বহির্পৃষ্ঠে কালচে লাল রঙের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। আধুনিক স্থাপত্যবিদ্যা এবং মোগল কাঠামোর সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে এর খিলান ও গম্বুজগুলো।

ভৌগোলিক অবস্থান

সম্পাদনা

ভৌগোলিক স্থানাঙ্কে কার্জন হলের অবস্থান ২৩°৪৩′৩৮″ উত্তর ৯০°২৪′০৭″ পূর্ব / ২৩.৭২৭২৯৬০° উত্তর ৯০.৪০১৮৭২৪° পূর্ব / 23.7272960; 90.4018724


চিত্রশালা

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "ঐতিহ্যের প্রতীক কার্জন হল"দৈনিক সংগ্রাম। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৪ 
  2. "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : ঐতিহ্যবাহী কার্জন হল"আমার দেশ। ১৮ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১৩ 
  3. "ঢাকা জেলা"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৭-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-০৮ 
  4. "কার্জন হল: ১১২ বছরের ঐতিহ্য"প্রথম আলো। ২৮ অক্টোবর ২০১৬। 
  5. কার্জন হল, বাংলাপিডিয়া
  6. জিন্নাহর ঢাকা সফর কার্জন হলে ভাষণ ছাত্রদের প্রতিবাদ, প্রথম আলো, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা