শরফুদ্দীন ইয়াহিয়া মানেরী

১৩শ শতাব্দীর বিহারের সুফি


শরফুদ্দীন ইয়াহিয়া মানেরী (১২৬২–১৩৮০) ১৩শ শতাব্দীর বিহারের একজন ইসলামি পণ্ডিত, সূফী সাধক, সংস্কারক। তিনি শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামার শিষ্য ছিলেন।[২] তার মূল নাম আহমদ, শরফুদ্দীন তার উপাধি। তার খেতাব ছিল মাখদূমুল মুলক বিহারী।[৩]

Makhdoom Sheikh Sharfuddin Ahmed bin Yahya Maneri
A picture of Badi Dargah
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্মJuly 1263 A.D. (29 Sha'aban 661 A.H.)[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
মৃত্যুJanuary 1381 A.D.(6 Shawwal 782 Hijri)
সমাধিস্থলBadi Dargah, Bihar Sharif, Bihar
Dargah ২৫°১০′৪৯″ উত্তর ৮৫°৩১′১০″ পূর্ব / ২৫.১৮০২৮° উত্তর ৮৫.৫১৯৪৪° পূর্ব / 25.18028; 85.51944[১]
ধর্মIslam
আদি নিবাসManer, Bihar
পিতামাতা
যে জন্য পরিচিতSufi Saint
ঊর্ধ্বতন পদ
শিক্ষকAbu Tawwama

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

শরফুদ্দীন ইয়াহিয়া মানেরী ১২৬২ সাল মোতাবেক ৬৬১ হিজরির শাবান মাসে বিহার প্রদেশের ‘মুনায়র’ অথবা ‘ম্যানোর’ নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ইয়াহইয়া। মাতৃবংশের দিক দিয়ে তিনি সৈয়দ বংশধর। শৈশবে মক্তবে তিনি প্রাথমিক ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করেন। পরবর্তীতে শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামার সান্নিধ্যে তিনি ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করেন। আবু তাওয়ামা সোনারগাঁও অভিমুখে যাত্রাকালে পথিমধ্যে বিহারে মানেরী তার সাক্ষাৎ লাভ করেন, তখন মানেরীর বয়স হয়েছিল ১৬ বছর। আবু তাওয়ামার সাথে সাক্ষাৎতের পর তার ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয়ে তিনি পিতামাতার অনুমতিক্রমে তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন এবং তারসাথে সোনারগাঁও চলে যান। সোনারগাঁওয়ে তিনি ধর্মীয়বিদ্যায় বুৎপত্তি অর্জন করেন এবং আবু তাওয়ামার কন্যার সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন।[৪]

আধ্যাত্মিক জীবন সম্পাদনা

১২৯২ সালে তিনি জন্মভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেন। ৬৯১ হিজরিতে তিনি দিল্লি চলে যান। পরবর্তীতে তিনি খাজা নাজীবুদ্দীন ফিরদৌসীর হাতে বায়আত গ্রহণ করেন ও খেলাফত লাভ করেন। বিহারের সুবেদার মাজেদুল মুলক তার জন্য একটি খানকাহ নির্মাণ করেন এবং রাজগীর পরগনাকে খানকাতে অভ্যাগতদের ব্যয় নির্বাহের জন্য দান করেন। কিন্তু সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক (১৩৫১-১৩৮৮) সিংহাসনে আরোহন করলে তিনি এ খানকাহর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন।[৪]

রচনাবলি সম্পাদনা

তার যেসব রচনা উদ্ধার করা গেছে তার মধ্যে রাহাতুল কুলূব, আজওয়াবাহ, ফাওয়াইদে র“কনী, ইরশাদুত-তালিবীন, ইরশাদুস সালিকীন, রিসালায়ে মাক্কিয়্যা, মি‘দানুল মা‘আনী, লাতাইফুল মা‘আনী, ইশারাতে মুখখুল মা‘আনী, খানেপুর নে‘মত, তুহফায়ে গায়বী, রিসালায়ে দর তলবে তালেবান, মালফূযাত, যাদে সফর, ‘আকাইদে শরফী, ফাওয়াইদে মুরিদীন, বাহরল মা‘আনী, সাফার“ল মুজাফফার, কানযুল মা‘আনী, গঞ্জে লা ইউফনী, মু‘নিসুল মুরীদীন, শরাহ আদাবুল মুরীদীন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।[৪]

মৃত্যু সম্পাদনা

তিনি ৭৮২ হিজরির ৫ই শাওয়াল ১২১ বছর বয়সে আনুমানিক ১৩৮০ সালে মৃত্যুবরণ করেন।[৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Tomb Of Shaikh Sharfuddin Ahmed Yahya Maneri Baridargah - Wikimapia" 
  2. আবদুল করিম (২০১২)। "শরফুদ্দীন ইয়াহিয়া মানেরী"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  3. নদভী, আবুল হাসান আলী হাসানী (২০১৫)। সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস (পিডিএফ)মুহাম্মদ ওমর আলী, আবু সাঈদ কর্তৃক অনূদিত। ঢাকা, বাংলাদেশ: মুহাম্মদ ব্রাদার্স। পৃষ্ঠা ১৬৯। আইএসবিএন 978-984-90178-1-3 
  4. জাকারিয়া, মুহাম্মদ (২০২১)। বাংলাদেশে ইসলামের প্রচার-প্রসার ও সামাজিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় পীর-মাশায়িখের অবদান: একটি পর্যালোচনা (পিডিএফ) (গবেষণাপত্র)। বাংলাদেশ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ৬৮–৮০। ১৮ জুন ২০২৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০২২