শক্তিরঞ্জন বসু (ইংরেজি: Shaktiranjan Basu) (৩ মার্চ, ১৯০৮ — ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৮৪) ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের  কর্মী ও সমাজসেবী। লবণ সত্যাগ্রহ,  আইন অমান্য আন্দোলন, ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যুক্ত থেকে সেবামূলক ও গঠনমূলক কাজে লিপ্ত থেকেছেন আমৃত্যু। [১]

শক্তিরঞ্জন বসু
জন্ম(১৯০৮-০৩-০৩)৩ মার্চ ১৯০৮
মৃত্যু১৮ ডিসেম্বর ১৯৮৪(1984-12-18) (বয়স ৭৬)
জাতীয়তাভারতীয়
নাগরিকত্বভারতীয়
পরিচিতির কারণভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের কর্মী ও সমাজসেবী
দাম্পত্য সঙ্গীউমা বসু
পিতা-মাতানিশিকান্ত বসু (পিতা)

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

শক্তিরঞ্জন বসুর জন্ম বৃটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের বরিশাল জেলার হবিবপুরে। পিতা নিশিকান্ত বসু। তার স্কুলের ছাত্রজীবন কাটে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী ব্রজমোহন বিদ্যালয়ে। এরপর কলকাতার একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ছাত্রাবস্থাতেই তিনি নিজের গ্রামে সমাজসেবামূলক নানা কাজে নেতৃত্ব দিতেন। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি নিখিল বঙ্গ ছাত্র সমিতির (এ বি এস এ)-র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য ছিলেন। 

বিভিন্ন আন্দোলনে ও সমাজসেবামূলক ক্রিয়াকলাপ সম্পাদনা

১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে শক্তিরঞ্জন বরিশালে লবণ সত্যাগ্রহে সক্রিয় ভূমিকা নেন। ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে  ছাত্রাবস্থায় সমিতি আয়োজিত রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানে তার কর্মদক্ষতা উল্লেখযোগ্য। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে  আইন অমান্য আন্দোলনে অংশগ্রহণ করায় কয়েক মাস কারারুদ্ধ থাকেন। ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেস সোশ্যালিস্ট পার্টি গঠিত হলে তিনি হন এর প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য। এ সময় তিনি সেবামূলক ও গঠনমূলক কাজে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে বেড়ান। পরে ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উৎসাহে বিশ্বভারতীর পল্লীসংগঠন বিভাগের দায়িত্ব নেন। আবার ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের  ' ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দিয়ে কারারুদ্ধ হন। স্বাধীনোত্তর যুগেও তিনি তার ক্রিয়াকলাপ অব্যাহত রেখেছেন। বিধানচন্দ্র রায়ের মুখ্যমন্ত্রীত্বকালে খাদ্য আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে শেষবারের মত কয়েক দিন কারাবাস ভোগ করেন। কংগ্রেস সোশ্যালিস্ট পার্টির পত্রিকা "কৃষক" -এর ম্যানেজার হিসাবে পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। বেঙ্গল-অসম রেল কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন তিনি সহকারী সম্পাদক ছিলেন। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে গঠিত "গান্ধী স্মারকনিধি" র সহ-সম্পাদক দায়িত্বে তিনি ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দ হতে চার বছর দিল্লিতে কাটান। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গে এই সংস্থার শাখা গঠিত হলে তার সম্পাদক হন এবং ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ হতে আমৃত্যু তিনি এর সভাপতি ছিলেন। 'হরিজন সেবক সংঘ' পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি ছিলেন তিনি। 

জীবনাবসান সম্পাদনা

১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ই ডিসেম্বর তিনি পরলোক গমন করেন। বিশিষ্ট সমাজসেবী ডা. উমা বসু তার স্ত্রী।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট  ২০১৬, পৃষ্ঠা ৬৯০ আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬