লাল পাহাড়ের কথা

রেমো ডি'সুজা পরিচালিত ২০০৭ সালের চলচ্চিত্র

লাল পাহাড়ের কথা (ইংরেজি: A Story Of The Red Hills) ২০০৭ সালের ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র। এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ভারতীয় নৃত্য নির্দেশক রেমো ডি'সুজার ছায়াছবি পরিচালনার অভিষেক ঘটে। চলচ্চিত্রটি জেএমজে এন্টারটেইনমেন্ট ও ডিএনজি মুভিজের ব্যানারে বিমল অবেরয় এবং লিজেল ডি'সুজা'র প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছিল। রেমো ডি'সুজার গল্প অবলম্বনে ধ্রুব ব্যানার্জি ও শুভেন্দু দাসমুন্সি এটির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন। চলচ্চিত্রটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গওড়িশা রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী 'ছাও' নামক উপজাতীয় নৃত্য নিয়ে নির্মিত। মিঠুন চক্রবর্তী, শংকর চক্রবর্তী, মৌমিতা গুপ্ত, আলি কাইয়ুম, শংকর দেবনাথ ও বিদিপ্তা চক্রবর্তী চলচ্চিত্রের মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।[১][২] ২০০৭ সালের ১০ ডিসেম্বর দুবাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে চলচ্চিত্রটি প্রথম প্রদর্শিত হয়।

লাল পাহাড়ের কথা
চলচ্চিত্রের পোস্টার
পরিচালকরেমো ডি'সুজা
প্রযোজক
  • বিমল অবেরয়
  • লিজেল ডি'সুজা
রচয়িতারেমো ডি'সুজা
চিত্রনাট্যকার
  • রেমো ডি'সুজা
  • ধ্রুব ব্যানার্জি
  • শুভেন্দু দাসমুন্সি
শ্রেষ্ঠাংশে
সুরকারমধু মুখ্যার্জি
চিত্রগ্রাহকশৌমিক হালদার
সম্পাদকরাজীব দত্ত
প্রযোজনা
কোম্পানি
  • জেওএমজে এন্টারটেইনমেন্ট
  • জিএমজি মুভিজ
মুক্তি
  • ১০ ডিসেম্বর ২০০৭ (2007-12-10) (দুবাই চলচ্চিত্র উৎসব)
স্থিতিকাল১৪৫ মিনিট
দেশভারত
ভাষাবাংলা
নির্মাণব্যয় ১.৫ কোটি (#নির্মাণ)

কাহিনিসংক্ষেপ সম্পাদনা

মনোহর (মিঠুন চক্রবর্তী) একজন গুণী এবং সমাদৃত ছাও নৃত্যশিল্পী। মনোহরের নাচ অভিনয়গুণে মুগ্ধ হয় মালতি (মৌমিতা গুপ্ত)। মনোহরের প্রেমে পড়ে মালতি। মনোহর নাচ করতে সফরে চলে যায়। এসময় শিবের (শংকর চক্রবর্তী) সাথে জোর করে মালতিকে বিয়ে দেয়া হয়। শিব আর মলতির ঘর আলো করে জন্ম নেয় তাদের ছেলে ফেলাই (আলি কাইয়ুম)। ফেলাই জন্ম হতে শারীরিক প্রতিবন্ধী। ফেলাইয়ের প্রতিবন্ধকতা শিব সহ্য করে না। একজন প্রতিবন্ধীর বাবা হওয়ায় হীনমন্যতায় ভোগে শিব। নিজের ,মানুষিক দৈনতা ঘোচাতে ফেলাইকে খুন করতে চায় শিব। মনোহর ফেলাইকে শিবের হাত থেকে বাঁচায়। ফেলাই বড় হতে থাকে মনোহরের সাথে। ফেলাইকে সাথে নিয়ে মনোহর তার জীবনের নতুনত্ব খুঁজেন।

শ্রেষ্ঠাংশে সম্পাদনা

লাল পাহাড়ের কথা চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পীদের তালিকা (ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট হতে অভিযোজিত)[১]-

  • মিঠুন চক্রবর্তী - মনোহর, একজন ছাও নৃত্যশিল্পী, যিনি বিভিন্ন স্থানে ছাও নৃত্য পরিবেশন করেন।
  • মৌমিতা গুপ্ত - মালতি, মনোহরের প্রাক্তন প্রেমিকা, শিবের স্ত্রী এবং ফেলাইয়ের মা।
  • শংকর চক্রবর্তী - শিব, মালতির স্বামী। ফেলাইয়ের বাবা। ফেলাইয়ের কারণে হীনমণ্যতায় ভোগেন।
  • আলি কাইয়ুম - ফেলাই, মালতি ও শিবের ছেলে। শারিরীক প্রতিবন্ধী, পরবর্তীতে মনোহরের সহযোগী।

এছাড়াও, শংকর দেবনাথ, বিদিপ্তা চক্রবর্তী, দিয়া, পায়েলি, শঙ্খনীল, রিমঝিম ও কমল চক্রবর্তী উল্লেখযোগ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

নির্মাণ সম্পাদনা

রেমো ডি'সুজা নিজের বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা হতে লাল পাহাড়ের কথা চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী শিশুকে নাচ শেখানোর সময় রেমো এই চলচ্চিত্র নির্মাণের ধারণা পান। তিনি বাঙালি নন, পশ্চিমবঙ্গের পটভূমিতে চলচ্চিত্রনির্মাণের জন্য তিনি ধ্রুব ব্যানার্জি ও শুভেন্দু দাসমুন্সি'র সাথে যৌথভাবে চিত্রনাট্য তৈরী করেছিলেন। চলচ্চিত্রটি নির্মাণে ২০০৭ সালে ১.৫ কোটি ভারতীয় রূপি ব্যয় হয়েছিল।[২]

প্রদর্শন সম্পাদনা

লাল পাহাড়ের কথা ২০০৭ সালের ১০ ডিসেম্বর দুবাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথম প্রদর্শিত হয়েছিল। ভারতীয় চলচ্চিত্র হলেও পরিবেশকের অনিহায় চলচ্চিত্রটি ভারতে বাণিজ্যিকভাবে মুক্তি দেওয়া যায়নি। পরিচালক রেমো ডি'সুজর ভাষ্য অনুযায়ী, "আমি ছাউ নৃত্যের উপর ভিত্তি করে আমার প্রথম বাংলা চলচ্চিত্র তৈরি করেছি - একটি প্রচলিত ভারতীয় উপজাতীয় শিল্পরূপ, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ইত্যাদির মতো দেশে এটির জন্য অনেক প্রশংসা অর্জন করেছি, তবে ভারতে, কেউই এই ছবিটি মুক্তি দেয়নি কারণ কেউই ভারতীয় ধ্রুপদী সংস্কৃতি দেখতে চায় না"।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "LAL PAHARE'R KATHA (2007)"ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৪-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-১২ 
  2. "Tough to promote Indian dance: Remo D'Souza" (ইংরেজি ভাষায়)। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া। ২৪ জুন ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৮-১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা